www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

October 15, 2024 6:42 pm

গোঁড়া ভারতীয় সমাজে নারী ও মেয়ের প্রতি সহিংসতা একটি সাধারণ ঘটনা। ছোটবেলা থেকেই নারীদের নির্যাতন সহ্য করতে শেখানো হয়। আশ্চর্যের বিষয় এই অত্যাচার মেনে নেওয়ার বয়স নেই তাদের। কন্যা হিসাবে, বোন হিসাবে, স্ত্রী হিসাবে, মা হিসাবে, প্রতিবেশী হিসাবে এমনকি অপরিচিত হিসাবেও তারা সহজেই নিপীড়নের সীমায় পৌঁছে যায়।

“একটি সুস্থ সামাজিক জীবন তখনই পাওয়া যায় যখন, প্রতিটি আত্মার আয়নায়, সমগ্র সম্প্রদায় তার প্রতিফলন খুঁজে পায়, এবং যখন, সমগ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে, প্রত্যেকের সদগুণ বেঁচে থাকে।”

কলকাতার আর জি কর সরকারি হাসাপতালে এক নারকীয় ঘটনার জেরে সরগরম রাজ্য। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সব মহলে। মিছিল-বিক্ষোভ-অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে চলছে আন্দোলন। পথে নেমেছেন মহিলা-শিশু সকলে। ডাক্তার-আইনজীবী- কলেজ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়ারা পথে। হস্তক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এমনই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সমাজের কালো দিক পরিস্কার করতে পথে নামছে বর্ধমান শহরের দুই বেসরকারি আইসিএসসি স্কুল। সেন্ট ভিনসেন্টস অ্যাকাডেমি (St.Vincent’s Academy) ও সেন্ট পলস অ্যাকাডেমি (St.Paul’s Academy) নামে বাইপাশ সংলগ্ন স্কুল দুটি আজ, শুক্রবার রালির আয়োজন করেছে। লক্ষ্য একটাই সমাজকে সচেতন কর। আর এমন ঘটনার পুণরাবৃত্তি চাই না।

দুই স্কুলের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার গুপ্তা (Sanjay Gupta) বলেন, ধারাবাহিক ভাবে শহরের মানুষকে সচেতন করার সময় এসেছে। শৈশব থেকে সন্তানদের প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বাবা-মাকে আরও সাবধান হতে হবে। সেই কাজটাই আমরা শুরু করছি। বাড়ির পরে স্কুল হল শিশুদের দ্বিতীয় ঘর। তাই সন্তানদের সঠিক ভাবে মানুষ তৈরি করার ক্ষেত্রে আমাদেরও ভূমিকা আছে। সমাজে আজও কেন এমন জঘন্য অপরাধ হচ্ছে, সেটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে। ছেলেদের বোজাতে হবে নারীশব্দের সঠিক অর্থ।

দুটি স্কুল শুক্রবার পুলিশ লাইন (Bardhaman Police Line) থেকে শুরু করছে তাদের রালি। শেষ হবে কার্জন গেটে (Curzon Gate)। উপস্থিত থাকবেন স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য, শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা। তবে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এই রালিতে না এনে বাবা-মায়ের কাছে আবেদন করে বলা হয়েছে তাঁরা চাইলে উপস্থিত থাকতে পারেন। এর আগে গত ১৮ অগস্ট প্রথম রালি করার উদ্যোগ নেয় তারা। কিন্তু প্রশাসনের অনুরোধে সেটি পিছিযে দেওয়া হয়। (Burdwan)

সেন্ট ভিনসেন্টস অ্যাকাডেমির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর প্রজ্ঞা গুপ্ত (Pragya Gupta) বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আমাদের শহর, রাজ্য তো বটেই, দেশের বিভিন্ন প্রাপ্তে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা হচ্ছে। এগুলি বন্ধ করতে প্রয়োজন সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগীতা। প্রয়োজন সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন। সচেতনতা প্রয়োজন। সেই কাজটাই স্কুলের শিক্ষক-অশিক্ষকেরা করতে চায়। সমাজের প্রতি আমাদের দায় রয়েছে। সেই কর্ম সঠিক করতেই পথে নামা।

গোঁড়া ভারতীয় সমাজে নারী ও মেয়ের প্রতি সহিংসতা একটি সাধারণ ঘটনা। ছোটবেলা থেকেই নারীদের নির্যাতন সহ্য করতে শেখানো হয়। আশ্চর্যের বিষয় এই অত্যাচার মেনে নেওয়ার বয়স নেই তাদের। কন্যা হিসাবে, বোন হিসাবে, স্ত্রী হিসাবে, মা হিসাবে, প্রতিবেশী হিসাবে এমনকি অপরিচিত হিসাবেও তারা সহজেই নিপীড়নের সীমায় পৌঁছে যায়। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার এবং এনজিওগুলি এই অপরাধ নির্মূল করার জন্য অসংখ্য পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে, কিন্তু এটি কেবল সমাজে অব্যাহত রয়েছে তা নয়, সময়ের সাথে সাথে এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সবাই জানি, মানুষই সমাজের দর্পণ। তাই যুগে যুগে নারী নির্যাতনের প্রকৃতি নিয়ে আম জনতা পথে নেমে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্এটা করছে, এটাই স্বাভাবিক। বাংলার এই সমস্ত শোষিত-নির্যাতিত নারী উঠে এসেছে নানান মহল থেকে। সমাজের নানান ব্যক্তির কাছে নারীরা দুঃখ-কষ্টের কথা অত্যন্ত আবেগের সঙ্গে বলেছেন এবং সেই অবস্থার কারণগুলোও তুলে ধরেছেন। সচেতনার প্রশ্ন তখনই আসে, যখন অধিকাংশ বাঙালি নারী তার সমগ্র জীবনে কোনো না কোনো সহিংসতার সম্মুখীন হয়, কখনও কখনও তারা একাধিক ধরণের সহিংসতার সম্মুখীন হয় যা সত্যিকার অর্থে বাংলা ও বাঙালির কাছে লজ্জার।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *