হিন্দু ধর্মের ভিত্তি হলেন ‘ত্রিদেব’। ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। কিন্তু এটা কি জানেন, ত্রিদেবের মধ্যে ব্রহ্মাকে কেউ কেউ বিষ্ণুর ভৃত্য মনে করেন। তাঁদের এহেন ধারণার কারণ? কারণ অনুধাবন করতে হলে হিন্দু পুরাণ অনুসারে পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্বে নজর রাখতে হবে আমাদের।
পৃথিবী সহ সকল সৃষ্টি কীভাবে হয়েছে? হিন্দু পুরাণে এর একেকরকম ব্যখ্যা দেওয়া হয়েছে। একটি আপেক্ষিক তত্ত্ব অনুযায়ী, শিব এবং শক্তির মিলনে সৃষ্ট হয়েছে এই গোটা জগতসংসার।
তলিয়ে দেখলে, এখানেও বিজ্ঞান। বিগ ব্যাং থিওরি’ (Big Bang Theory) মনে আছে নিশ্চয়ই? যে থিওরি অনুযায়ী, এই মহাবিশ্বের সবকিছুরই সৃষ্টি হয়েছে অন্ধকার থেকেই। যা আসলে ডার্ক এনার্জি, একটি ছোট্ট বিন্দুতে পুঞ্জিভূত হয়ে ছিল। হিন্দু পুরাণে এই ডার্ক এনার্জিকেই কালী বা মহাশক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এবং বলা হয়েছে, তাঁর থেকেই গোটা জগতের জন্ম।
এই জগৎ-ই শিব (Siv)। এনার্জি অর্থাৎ মহাশক্তির স্পর্শে যা আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। একেই বলা হয় শিব-শক্তির মিলন। তবে হিন্দুপুরাণ বলে কথা! যত দেবতা, তত মত। তেমনই একটি মত বিষ্ণুপুরাণ এবং মহাভারত অনুসারে, সৃষ্টির আদিতে শুধু ছিল এক অনন্ত মহাসমুদ্র। আর কিচ্ছু না। এই সমুদ্রের তলদেশে বাস করতেন শ্রীবিষ্ণু। বাসুকি নাগের ওপর নিদ্রামগ্ন অবস্থায়। হঠাৎ বিষ্ণু জেগে উঠে খেয়াল করলেন তাঁর নাভি থেকে একটি পদ্মগাছ বেড়ে উঠছে। আর সেই পদ্মের ওপর বসে ব্রহ্মা।
বেশ কিছু মতে, এখানেই ব্রহ্মাকে বিষ্ণুর (Vishnu) ভৃত্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিষ্ণু তাঁর ভৃত্যকে জগতসংসার এবং প্রাণী-উদ্ভিদ সৃষ্টি করতে নির্দেশ দেন। বিষ্ণুর কথামত ব্রহ্মা (Brahma) তাই করলেন। আর এভাবেই সৃষ্টি হল পৃথিবীসহ গোটা বিশ্বসংসার।