শীত পড়েছে। বেশ নির্জনে একটা সমুদ্রপারে বসে চা খেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু দিঘা,মন্দারমনি আর পুরী কত যাবেন,আর নির্জনতা বা পাবেন কোথায়?
হাতে মাত্র ২/৩ দিন সময়। পকেটেও কিছুটা টান আছে অথচ একটু অফবিট নতুন সমুদ্র সৈকত খুঁজছেন। বেশ তাঁদের জন্য আদর্শ জায়গার খোঁজ দিলাম।(Tourism)
উদ্দাম জল-হিল্লোল নেই, নেই প্রবল জনকোলাহল কিন্তু আছে আদিগন্ত বিস্তৃর শান্ত সমুদ্র আর নিস্তব্ধ বেলাভূমি। নতুন ঠিকানা বগুড়ান জলপাই।
হাতের মুঠোয় এক নির্জন আবহ। শহর থেকে দূরে এক টুকরো স্নিগ্ধ অবসরের হাতছানি। এবার না হয় চলুন বগুরান-জলপাই। কাঁথি থেকে মাত্র ১২কিলোমিটার দূরে, ঘন ঝাউবনবেষ্টিত শান্ত, নির্জন এই সমুদ্রসৈকত সম্প্রতি সমুদ্রপ্রেমীদের কাছে অপরূপ স্পটে পরিণত হয়েছে। এখানে সমুদ্র সৈকতে প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে আছে একের পর এক ঝাউগাছ।
শহুরে জীবন থেকে দূরে প্রকৃতির মাধুর্য ও ঐশ্বর্যের মধ্যে জেগে থাকা এই সৈকতটি বাংলার সমুদ্রকেন্দ্রিক পর্যটন-মানচিত্র আক্ষরিক অর্থেই এক নতুন সংযোজন। জনহীন, শুধু জল বাতাস আর পাখির ডানার শব্দ এই বেলাভূমিতে। আছে একটি নদীর রেখা। শান্ত, একাকী সেই জলধারা এই সৈকতকে যেন আরও মোহময়ী করে তুলেছে। আর আছে কাঁকড়া। লাল কাঁকড়ার (Crab) প্রাচুর্য। দেখে মনে হওয়া স্বাভাবিক, সমুদ্রতীরে যেন লাল ফুল ছড়িয়ে রয়েছে সব সময়! এমন সৈকতে দীর্ঘ সময় কেটে যায় শুধু নিজের সাথে কথা বলে।প্রিয়জনদের সাথে গল্প করে আর লাল কাঁকড়ার পিছনে ছোটাছুটি করে।
অনেকেই আবার কোনো একটা জায়গাকে কেন্দ্রকরে ঘুরে নিতে চায় ধারেকাছে অন্যায় জায়গায়। তাদের জন্যও আছে আশপাশের জুনপুট, বাঁকিপুর, দরিয়াপুর লাইটহাউস, কপালকুণ্ডলা মন্দির, পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দর। আর খেয়া পেরিয়ে যেতে পারেন হিজলি শরিফ, রসুলপুর নদীর ওপারে।
থাকা খাওয়া – জায়গাটা কাঁথি (Contai) থেকে মাত্র ১২ কিমি। আপনি কাঁথিতেও থাকতে পারেন। পাবেন অজস্র হোটেল লজ। আর যদি বগুড়ান জলপাইএ থাকতে মন চায়,সেই ব্যবস্থাও আছে।
এখনও জায়গাটি ‘ভার্জিন স্পটে’র মর্যাদাই পাচ্ছে (Vargin Spot) । আসলে এখনও এখানে হোটেল-রেস্তোরাঁ-হোমস্টের ভিড় লাগেনি। এখনও পর্যন্ত এখানে থাকার একমাত্র জায়গা একটি গেস্ট হাউস। ঝাউবনে ঘেরা এই হোটেলটি সমুদ্র থেকে একটু দূরে। জায়গাটি নির্জন, তা বলে হোটেল থেকেই সমুদ্রগর্জন শোনা যাবে না। সাগর নিরালায় নামের এই একমাত্র গেস্ট হাউসে আছে নানা কিসিমের প্যাকেজ। রুম বা টেন্ট রিজনেবল চার্জে মেলে। আছে নিজস্ব ক্যান্টিন। সেখানে খাবারের নানা বৈচিত্র। এদের রয়েছে কয়েকটি ফোর-বেডেড রুম আর টেন্ট (বুকিং-এর জন্য নম্বর– 094340 12200.
কিভাবে যাবেন – নিজস্ব গাড়ি থাকলে তো কথাই নেই।কাঁথি পৌঁছে বাঁদিকে ঢুকে যান। ১২ কিমি গেলেই ঝুপ করে চোখের সামনে চলে আসবে সমুদ্রসৈকত। এছাড়া ট্রেনে বা বসে সহজেই কাঁথি পৌঁছানো যায়। তারপর একটা অটো বা গাড়ি ভাড়া করে নিন। অটো নিলে ২০০-২৫০ টাকা আর গাড়ি নিলে ৩০০-৩৫০ টাকার মতো ভাড়া পড়বে।
মন যদি চায়,তাহলে একবার ঘুরে আসুন এই নির্জন কাঁকড়ার দেশে।