অগ্রাহায়ন মাস শেষে মল মাস পৌষ দৌড়গোড়ায়। আগামী ১৬ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে মল মাস। এই মাসটি সূর্য়দেবের মাস হিসাবেই পরিচিত আর এই মাসের বিশেষ দিন ১৬ ডিসেম্বর ফলতে চলেছে হাতে গোনা কয়েকদিন পরেই। হিন্দু মতে, পৌষ মাস হল সূর্য দেবতার মাস। বছরের শেষ মাসে, সাফলা একাদশী, পৌষ অমাবস্যা, প্রদোষ ব্রত, মাসিক শিবরাত্রি সবই খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বরে ঘটতে চলেছে বহু শুভ যোগ। আর সেই যোগে মানুষ কতটা উপকৃত হবে, তাও জানা উচিত। এই দিনটি এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা জেনে নিন…(Spiritual)
২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর, কেন গুরুত্বপূর্ণ?
শেষ মাসের ১৬ ডিসেম্বরেই পালিত হবে ধনু সংক্রান্তি, কালাষ্টমী, রুক্মিণী অষ্টমী। একদিনে এই তিনটি উৎসবের সহাবস্থান এই দিনটিকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। পুজো-পার্বণের দিক থেকে এই তিনটি উৎসব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিন থেকে খারমাস বা মলমাসও চালু হতে চলেছে। এই মাস শুরু হওয়া মানে এক মাসের জন্য শুভ কাজে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে। (astrology)
ধনু সংক্রান্তি ২০২২
হিন্দু ধর্মে প্রতি মাসে সংক্রান্তি পালিত হয়। শাস্ত্র অনুসারে, যেদিন সূর্য (Surya Dev) তার রাশি পরিবর্তন করে সেই দিন সংক্রান্তির উৎসব পালিত হয়। যে রাশিতে সূর্য প্রবেশ করে তার পরে সংক্রান্তি (Sankranti) বলা এই তারিখে ধনু সংক্রান্তিতে সূর্য অধিষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এই দিনে সূর্য দেবতার পূজা করলে সম্মান, শক্তি, গৌরব ও খ্যাতি পাওয়া যায়। সূর্য ধনু রাশিতে প্রবেশ করলে খরমাস শুরু হয়, একে মলমাসও বলা হয়। এর পরে, নয়া বছরের ১৪ জানুয়ারি সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করবে, যাকে মকর সংক্রান্তি বলা হয়। বছরের অন্যান্য সংক্রান্তির তুলনায় মকর সংক্রান্তির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
মলমাস ২০২২
শাস্ত্রে খরমাসকে শুভ বলে মনে করা হয় না, কারণ শুভ কাজের জন্য বৃহস্পতি গ্রহের শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন এবং সূর্য যখন বৃহস্পতি, ধনু ও মীন রাশিতে উপস্থিত থাকে, তখন তাদের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এই অবস্থায়, শুভকাজ ফলপ্রসূ হয় না, তাই বিবাহ, গৃহ প্রবেশ করা, অন্নপ্রাশন বা কোনও শুভ অনুষ্ঠান ইত্যাদির মত শুভ কাজে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, মলমাসে কোনও শুভ সময় নেই। মলমাসের সময়কাল সাধারণত এক মাস ধরে চলে। এই দিনগুলিতে মন্ত্র জপ, দান, নদীতে স্নান এবং তীর্থযাত্রা অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।
কালাষ্টমী ২০২২
পৌষ মাসের কালাষ্টমীও পালিত হবে ১৬ ডিসেম্বর তারিখেই। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, এই দিনে ভগবান কাল ভৈরবের আরাধনা করার রীতি রয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে কাল ভৈরবের আরাধনা করলে ভয়, শত্রুর বাধা, গ্রহের বাধা এবং সমস্ত ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হিন্দু ধর্মে, কাল ভৈরবকে শিবের পঞ্চম অবতার বলে মনে করা হয়। ভৈরবের পুজো শিব ও শাক্ত উভয় সম্প্রদায়েই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছে। সুখ এবং সমৃদ্ধি পেতে, এই দিনে সাধারণভাবে পুজো করার পর কাল ভৈরব স্তোত্র পাঠ করা উচিত।
রুক্মিণী অষ্টমী ২০২২
চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর, রুক্মিণী অষ্টমীর উপবাসও পালন করা হবে। বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে শ্রীকৃষ্ণের পাত্রাণী দেবী রুক্মিণীর জন্ম হয়েছিল। হিন্দু ধর্মে তাঁকে লক্ষ্মী স্বরূপা হিসাবে বিবেচিত হয়েছেন। দেবী রুক্মিণীর আরাধনা ধন, সম্পদ, বৈভব, বৈবাহিক সুখ, জীবনে সৌভাগ্য দান করেন।