২১-শের মঞ্চ থেকে জীবনের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এবার তাঁর লক্ষ্য ২০২৪। আর তাই এবারের শহীদ মঞ্চে তাঁর ডাক দিল্লি চলো। ট্রেনে-বাসে দিল্লি যাওয়ার ডাক। কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সরব দিদি এবার তৃণমূল দিয়েই দিল্লি দখলের ডাক দিলেন। অনেকেই মনে করছেন কেন্দ্রের সামনের নির্বাচনের মুখ হতে চলেছেন দিদি। আর বিরোধী মঞ্চ তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা নিতে চান দিদিই।
সেই লক্ষ্যে তাঁর নতুন কর্মসূচী এদিনই জানিয়েছেন। ৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস। প্রভাত ফেরি হবে। সেদিন অনুষ্ঠানের নির্দেশ। ওইদিন মহরমও রয়েছে। তাই ১০ থেকে ১১টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। ১টার পর মহরমের তাজিয়া বের হয়। বললেন মমতা। ১৪ আগস্ট ফ্রিডম অ্যাট মিড নাইট উদযাপিত হবে। ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস। ২২ আগস্ট পুজো নিয়ে বৈঠক। সেপ্টেম্বর জুড়ে পুজোর অনুষ্ঠান।
বিজেপির কারাগার ভাঙো, মানুষের সরকার আনো। জয় বাংলা দিচ্ছে ডাক, জয় ভারত বেঁচে থাক। ২৪-এ নির্বাচনের জন্য ভোট নয়, প্রত্যাখ্যানের জন্য ভোট দিন। আমাদের গরিব প্রধানমন্ত্রী চাই, মানুষের প্রধানমন্ত্রী চাই। বিত্তবান প্রধানমন্ত্রী নয়। একুশের মঞ্চ থেকে নতুন স্লোগান তৃণমূল সুপ্রিমোর।
মমতার কথায়, ‘যদি দেখেন কেউ তৃণমূলের নামে টাকা তুলছে, বদমাইসি করছে তাহলে নিজেরা তাকে ধরে থানায় নিয়ে যান। আর কোনও কর্মী যদি খেতে না পান, তাহলে আমাকে খবর দিন, আমার দু-তিন মাস সময় লাগবে। কিন্তু একটা সিস্টেম করে দেব’, মমতা।
বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। আমি নিশ্চিত। কিছু ভুঁইফোড় নেতা তৈরি করছে। কারা যাচ্ছে দেখুন। সবদিকে নজরে রাখুন, বললেন মমতা।
সিবিআই-ইডি-আয়কর দপ্তরের কর্মীরা এলে ভয় পাবেন না। সামনে আসন পেতে দেবেন। সামনে একটা সিলিন্ডার রেখে দেবেন। থালায় করে মুড়ি খেতে দেবেন। পরামর্শ মমতার। বিজেপি বিড়াল তপস্বীর সরকার। রেলের ৮০ হাজার চাকরি খেয়ে নিয়েছে। নতুন করে দেশের ইতিহাস লিখছে বিজেপি। কটাক্ষ মমতার। কর্মীরা সাইকেল নিয়ে গ্রামে ঘুরবে। সাংসদরা প্রয়োজনে রিক্সা করে ঘুরবে। চায়ের দোকানে বসবে। একজনকে চা খাওয়াবে। কিন্তু চায়ের দোকানের টাকায় চা খাবেন না। দলের নামে কারেও কাছে চাঁদা তুলবেন না। আমি দুটি অভিযোগ পেয়েছি। মিডিয়ার সামনে যা ইচ্ছে বলবেন না। মনে রাখবেন তৃণমূল সুশৃঙ্খল দল। নির্দেশ মমতার।
১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা, আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ২১শের মঞ্চ থেকে এই অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামার বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বাংলায় আর্থিক অবরোধ করা হচ্ছে প্রশ্ন তুলে সরাসরি দিল্লি ঘেরাও করার হুঁশিয়ারিও দেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, ট্রেন, লরি করে দিল্লি যাব। দিল্লি ঘেরাও করব। এই লড়াইয়ে জনগণকেও নামার বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একুশের মঞ্চ থেকে সরাসরি কেন্দ্রের প্রতি তাঁর প্রশ্ন, বাংলায় কেন আর্থিক অবরোধ? তৃণমূল নেতা-কর্মী থেকে সকলকে তাঁর সঙ্গে বাংলার প্রতি বঞ্চনার বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে নামারও বার্তা দেন মমতা।
এদিন শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থক সহ সমগ্র রাজ্যবাসীকে সরকারি প্রকল্পের টাকা আদায় করতে নামার বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ২১শের মঞ্চ থেকে একেবারে জনসংযোগের সুরে তিনি বলেন, “আপনারা আমাদের সঙ্গে যাবেন তো? দিল্লি যাবেন তো?” একেবারে দিল্লি ঘেরাও করে সরকারি প্রকল্পের টাকা আদায় কররেন বলেও এদিন হুঁশিয়ার দেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে এদিন কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এয়ার ইন্ডিয়া, সিভিল ডিফেন্স সহ একের পর এক সংস্থা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলেও এদিন সরব হন তৃণমূল নেত্রী। আবার অগ্নিবীর ইস্যু তুলেও কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। অগ্নিবীর প্রকল্পের মাধ্যমে ৮০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে বলেও কেন্দ্রকে একহাত নেন মমতা। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেনার বিকল্প নেই। সেনাকে বঞ্চিত করে Agnipath করেছে। এটা কোনভাবে মেনে নেব না আমরা।”