খবরে আমরাঃ মমতা দিদির উপর রাগ করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন জীতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক ও আসানসোল পুরসভার মেয়র. পদ ছিল কিন্তু তাঁর পরেও গোঁসা। গেলেন বিজেপিতে। কিন্তু সেখানেও তিনি গদ্দার। লোকসভা উপনির্বাচনের সময় খোদ কতাঁরই কেন্দ্রে তাঁকেই সরাতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। তিনি আবার দলের দায়িত্বে। এমন নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ অন্যান্য নেতৃত্বের ভূমিকা কী ছিল? এ বার এই প্রশ্ন তুললেন অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক আবার লোকসভা উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীও বটে। পাশাপাশি ওই উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে হার নিয়ে কাটাছেঁড়া চেয়েছেন তিনি।ঘটনার সূত্রপাত মাত্র ১৭ সেকেন্ডের একটি অডিয়ো ক্লিপ ঘিরে। যে ক্লিপে এক মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারি’দা নির্বাচনের সময় কী রকম ভূমিকা পালন করেছেন? উনি কি দলের হয়ে কাজ করেছেন না কি বিরোধিতা করেছেন? আসল কী রকম কাজ করেছেন উনি? সেটা জানতে চাইছি।’’ অনেকের মতে ওই অডিয়ো ক্লিপে যে মহিলাকে উপনির্বাচন জিতেন্দ্রর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শোনা গিয়েছে তা অগ্নিমিত্রার কণ্ঠ। যদিও সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
সাংবাদিকরা পেশার তাগিদেই অগ্নিমিত্রাকে প্রশ্ন করেন আসানসোলে লোকসভা উপনির্বাচনে জিতেন্দ্র তিওয়ারির ভূমিকা কী ছিল? আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক তার জবাব দেন, ‘‘আমি প্রশ্ন করেছি তাঁর ভূমিকা কী ছিল? আমি জানতে চেয়েছি, যেখানে মানুষের যা হাওয়া ছিল, যা সমর্থন ছিল, সেখানে আমাদের বিশ্বাস ছিল, অন্তত ৩০-৪০ হাজার ভোটে হলেও আমরা জিতব। কিন্তু ভয়াবহ ফল হল। এটা ঠিক যে ছাপ্পা হয়েইছে। অনেক জায়গায় বুথেও আমরা লোক বসাতে পারিনি। আজকে যে নেতৃত্ব দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁদের কী ভূমিকা ছিল সেটার তদন্ত হওয়া তো দরকার। কারণ আর তো দু’বছর বাদে ২০২৪। সেখানে যিনিই দাঁড়ান এই নেতৃত্বই তো থাকবেন।’’ অগ্নিমিত্রা আরও বলেছেন, ‘‘আমি অন্তর্ঘাত হয়েছে এমনটা বলব না।’’
উপনির্বাচনে জিতেনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেও এক সময় বিজেপির দখলে থাকা আসানসোল লোকসভায় বিপুর ভোটে হার নিয়ে অগ্নিমিত্রা কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যের শাসকদলের ‘সন্ত্রাস’কে। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘যত ক্ষণ না সন্ত্রাসমুক্ত ভোট হচ্ছে তত ক্ষণ মানুষের বেরনো মুশকিল। কারণ বারাবনি বলুন, পাণ্ডবেশ্বর বলুন, যেখান থেকে ৯০-৯৫ হাজার ভোটে লিড করেছে। এটা সম্ভব নয়। কারণ সেখানেও মানুষ বাড়ি থেকে বেরোয়নি। পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক খোলাখুলি হুমকি দিয়েছিলেন। এত খোলাখুলি হুমকি দেখাতে পারে কী করে? এই ঔদ্ধত্য কী করে হয়? কোথাও নিশ্চয়ই মুখ্যমন্ত্রীর ‘আশীর্বাদ’ রয়েছে।’’
ভাইরাল হয়ে যাওয়া ওই অডিয়ো ক্লিপ নিয়ে জিতেনের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘আমি এমন কোনও অডিয়ো ক্লিপের কথা জানি না।’’ অগ্নিমিত্রা যে তিনি-সহ দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তা নিয়েও কিছু বলতে চাননি জিতেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলে লোকসভা উপনির্বাচনের সপ্তাহ দু’য়েক আগে কলকাতায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন জিতেন কন্যা পল্লবী তিওয়ারি। সে জন্য জিতেনকে সস্ত্রীক দৌড়তে হয়েছিল কলকাতায়। সে কারণেই তিনি ব্যস্ত ছিলেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের মত। তবে আসানসোল উপনির্বাচনের হারের এক মাস পেরনোর আগে অগ্নিমিত্রার এই প্রশ্ন নতুন অস্বস্তির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বিজেপিকে।