জীবন সায়ান্নে সংসার ভাঙা-গ়ড়ার গল্প বেলাশেষে। সেখানে চাওয়া পাওয়ার ফারাক দূরত্ব গড়ে দিয়েছে বার্ধক্য। ভেঙেছে সংসার। এবার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের (Soumitra Chatterjee) সেই গল্পেরই যেন পট দেখা গেল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta Highcourt)। ফারাক শুধু একটাই। সিনেমার থেকে বাস্তবে ফিরে আইনি পথেই বিচ্ছেদের চেয়েছে চুয়াত্তোর বছরের বৃদ্ধ।
বার্ধক্যে বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা। এবার চুয়াত্তর বছরের বৃদ্ধ কলকাতা হাইকোর্টে স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচ্ছেদ সংক্রান্ত অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন। নিম্ন আদালতে ইতিমধ্যেই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা চলছে। তাঁর অভিযোগ, স্ত্রী-ছেলেরা এক হয়ে তাঁকে নিজের ঘর থেকেই দূরে করে দিয়েছে। হাইকোর্ট বিচ্ছেদ মামলার পরেও নিজের বাড়িতেই বৃদ্ধের থাকা ও ছেলেদের থেকে সংসার খরচ আদায়ের অনুমতি দিয়েছে।
৭৪ বছরের পুরুসত্তম মন্ডল তাঁর ৬৪ বছরের স্ত্রী পুষ্পরানী মন্ডলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন। শুক্রবার বিচারপতি রাজা শেখার মান্থার (Justice RajaSekhar Mantha) নির্দেশ, নিম্ন আদালতে যেভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে তা চলবে। কিন্তু যতক্ষণ না পর্যন্ত এই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত একই ছাদের নিচে স্বামী এবং স্ত্রী বসবাস করবেন।
ঝাড়গ্রামের (Jhargram) বাসিন্দা পুরুষোত্তম মন্ডল হাইকোর্টে আবেদনে জানিয়েছেন, তার স্ত্রী পুষ্পরানি এবং তার বড় ছেলে মিলে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। এই বাড়ির মালিক তিনি নিজেই। কিন্তু তাকে দিয়ে জোর করে সেই বাড়ির মালিকানা লিখিয়ে নেয়া হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করেন তারা আইনজীবী।
এদিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজা শেখার মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন, বিচ্ছেদ চাইলেও একই বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একসঙ্গে থাকবেন এবং বড় ছেলে ও ছোট ছেলে তারা প্রতিমাসে বাবা এবং মায়ের হাতে পৃথকভাবে চার হাজার টাকা করে তুলে দেবেন। সেই টাকা দিয়েই বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধ নিজেদের সংসার চালাবেন। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যাতে কোনো গন্ডগোল বা মারামারি না হয়, সে কারণে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকেও এ বিষয়ে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতি।