ভারতীয় পুরাণ (Hinduism) হলো হিন্দু ধর্মের (Spirituality) আকর গ্রন্থ।সেই পূরণে আছে নানা বৈচিত্র ও বিতর্ক। সতীপীঠ নিয়েও হিন্দু পূরণ বিতর্কে জর্জরিত।তবুও সামগ্রিকভাবে বলাহয় এই সতীপীঠের (Sati Pith) সংখ্যা ৫১টি। তার মধ্যে অধিকাংশ ভারতে হলেও ১৩ টি সতীপীঠ অবস্থিত পাকিস্থান,শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ,মানস ও নেপালে।
পূরণমতে, দেবী সতী দক্ষ রাজার অমতে মহাদেবকে বিবাহ করেছিলেন। রাজা দক্ষ প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশে একটি যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন । সেখানে অপমানিত হয়ে যজ্ঞের আগুনে আত্মঘাতী তিনি হন সতী। ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন মহাদেব। পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার ভয়ে ভগবান বিষ্ণু প্রলয় থামাতে, সুদর্শন চক্র পাঠিয়ে দেন। দেবীর দেহ ৫১টি খণ্ডে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এই সব কটি জায়গাকে সতীপীঠ বলা হয়। সতীর ৫১ পীঠ হিন্দু ধর্মে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গাগুলি প্রত্যেক হিন্দুর কাছে পরম পবিত্রের জায়গা। বিভিন্ন জায়গা জুড়ে রয়েছে এই ৫১ পীঠ। ভারতবর্ষ-সহ বাংলাদেশ,পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা (Srilanka) ও মানস সরোবরে (Manas Sarobar) এই ৫১টি পীঠ অবস্থিত।
পুরণমতে সেই ১৩ টি বিদেশে অবস্থিত সতীপীঠ হলো –
১)হিংলাজ (পাকিস্থান) – বেলুচিস্তানের মরুভূমিতে অবস্থিত।ভয়ঙ্কর প্রতিকূল পরিবেশে এই মন্দির স্থাপিত।এখানে দেবীর ব্রহ্মরন্ধ্র পড়ে।এখানে দেবী কট্টরি রূপে পূজিত হন।
২)করবীর(পাকিস্থান) – করাচিতে অবস্থিত।এখানে দেবীর চক্ষু পতিত হয়।এখানে দেবী মহিষমর্দিনী রূপে পূজিত হন।
৩)সুগন্ধা(বাংলা দেশ) – বরিশালে অবস্থিত।এখানে দেবীর নাসিকা পতিত হয়।এখানে দেবী সুগন্ধা নামে পূজিত হন।
৪)জ্বালামুখী(পাকিস্থান) – বিশেষ কিছু জানা যায় না।
৫)মানস(মানস সরোবর) – তিব্বতের মানস সরোবরে অবস্থিত।সতীর ডান হাত পড়েছিল।এখানে দেবী দাখ্যায়নীনামে পূজিত হন।
৬) গুহ্যেশ্বরী(নেপাল) – পশুপতিনাথ মন্দিরের পাশেই অবস্থিত।এখানে দেবীর জানুদ্বয় পড়েছিল। দেবী এখানে মহাশিরা নামে পূজিত হন।
৭)গন্ডকী(নেপাল) – নেপালের গন্ধকী নদীর পাশে।সতীর গন্ডদেশ (ডান গেল)পড়ে।এখানে দেবী গন্ধকী চন্ডী রূপে পূজিত হয়।
৮)চট্রল(বাংলাদেশ) – চট্টগ্রামে অবস্থিত।এখানে সতীর ডান বহু পড়ে।এখানে দেবী চন্ডিকা রূপে পূজিত হয়।
৯)শ্রীশৈল(বাংলাদেশ) – বাংলাদেশের শ্রীহট্টতে অবস্থিত।এখানে সতীর গ্রীবা দেশ পড়ে।এখানে দেবী মহালক্ষ্মী রূপে পূজিত।
১০)করতোয়াতট(বাংলাদেশ) বাংলাদেশে বগুড়ায় অবস্থিত।এখানে দেবী অপর্ণা রূপে পূজিতহন।তবে দেবীর দেহের কোন অংশ এখানে পড়েছে তা নিয়ে বিতর্ক আছে।
১১)যশোহর(বাংলাদেশ)- বাংলাদেশের যশোর জেলায় অবস্থিত।এখানে দেবীর হাতের তালু পতিত হয়।এখানে দেবী যশোরেশ্বরী নামে পূজিত হন।
১২)লঙ্কা(শ্রীলঙ্কা) – শ্রীলঙ্কার জাফনায় অবস্থিত।দেবীর পায়ের নুপুর পড়ে।এখানে দেবী ইন্দ্রাক্ষী নামে পূজিত হন।
১৩)জয়ন্তী (বাংলাদেশ) – চট্টগ্রামে অবস্থিত।দেবীর ডানহাত পতিত হয়। এখানে দেবী ভবানী রূপে পূজিত হন।