www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

May 2, 2024 1:48 pm
jagannathdev

রথযাত্রা বা রথদ্বিতীয়া একটি আষাঢ় মাসে আয়োজিত অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। ভারতের ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড , পশ্চিমবঙ্গ, পশ্চিমবঙ্গে ও বাংলাদেশে এই উৎসব বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়। এছাড়া ইসকনের ব্যাপক প্রচারের জন্য এখন এটি বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়।

আগামী ২০ জুন, মঙ্গলবার ২০২৩ পালিত হবে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। পুরীতে জগন্নাথের এই রথযাত্রা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্মীয় উত্‍সব। জগন্নাথ মন্দিরের যেমন ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে, তেমন বিজ্ঞানের দিক থেকেও নানা রহস্য রয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের। রথযাত্রার আগে জেনে নিন জগন্নাথ মন্দিরের কয়েকটি অজানা রহস্য।

হিন্দু ধর্মের (HIndu) অন্যান্য উৎসবের মতোই রথযাত্রাও এক জাঁকজমকপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, রথযাত্রা বা রথদ্বিতীয়া প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয়ে থাকে। ভারতবর্ষের বহু জায়গায়, বিশেষ করে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে এই উৎসব বিশেষভাবে পালিত হয়। ওড়িশার পুরীর রথ সারা পৃথিবী বিখ্যাত। তবে শুধু ভারতবর্ষে নয়, ডাবলিন মস্কো এবং নিউ ইয়র্ককেও রথযাত্রার পালিত হয়। ‘রথ’ শব্দের আবিধানিক অর্থ যুদ্ধযান বা চাকাযুক্ত ঘোড়ায় টানা হালকা যাত্রীবাহী গাড়ি হলেও, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে রথ শব্দের অর্থ কিন্তু ভিন্ন।

ভক্তদের মতে, রথ (Rath) একটি কাঠের তৈরি যান, যার উপরে ভগবান জগন্নাথ, সুভদ্রা এবং বলরাম বসে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণ করেন। ভগবানের এই রথ আরোহণই ‘রথযাত্রা’ নামে পরিচিত। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে এবং কবে থেকে রথযাত্রার আবির্ভাব হল। দুপুরে গরম ভাতের সঙ্গে থাকুক মা-ঠাকুমার আমলের ‘দুধ শুক্তো’, ইতিহাস রথ যাত্রার এই কাহিনীর সঙ্গে জড়িত আছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম।

আর জগন্নাথ (Jagannath) হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরই এক রূপ। ওড়িশার প্রাচীন পুঁথি ‘ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ’ অনুযায়ী, এই রথযাত্রার প্রচলন হয়েছিল সত্যযুগে। তখন ওড়িশা (Odisha) মালবদেশ নামে পরিচিত ছিল। সেখানকার রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। তিনি স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণুর জগন্নাথরূপী মূর্তি নির্মাণ করেন এবং রথযাত্রারও স্বপ্নাদেশ পান। লোকমুখে শোনা যায়, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন স্বপ্নাদেশ পান যে পুরীর সমুদ্রতটে ভেসে আসা একটি কাষ্ঠখণ্ড দিয়ে জগন্নাথের (Lord Jagannath) মূর্তি নির্মাণ করতে হবে। আদেশ অনুযায়ী মূর্তি নির্মাণের জন্য যখন রাজা উপযুক্ত শিল্পীর সন্ধান করছিলেন, ঠিক তখনই এক বৃদ্ধ তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হন। তিনি জানান তিনিই এই (Spiritual) মূর্তিটি তৈরী করবেন এবং রাজার কাছে মূর্তি নির্মাণের জন্য কয়েকদিন সময় চেয়ে নেন, পাশাপাশি ওই বৃদ্ধ বলেন এই মূর্তি নির্মাণকালে কেউ যেন তাঁর কাজে বাধা না দেয়। দরজার আড়ালে শুরু হয় কাষ্ঠমূর্তি নির্মাণ।

রাজা-রানীসহ সকলেই এই মূর্তি নির্মাণকাজের ব্যাপারে কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। রানি প্রতিদিন বন্ধ দরজার বাইরে থেকে কান পেতে আওয়াজ শুনতো। কিন্তু হঠাৎই একদিন সেই আওয়াজ একদিন বন্ধ হয়ে যায়। রানী কৌতূহল চেপে রাখতে না পেরে রাজাকে জানাতেই ইন্দ্রদ্যুম্ন দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন, দেখেন মূর্তি অর্ধসমাপ্ত এবং শিল্পী উধাও। এই রহস্যময় কাষ্ঠশিল্পী ছিলেন বিশ্বকর্মা (Viswakarma) । তিনটি অর্ধসমাপ্ত মূর্তি দেখে অর্থাৎ হাত ও পা নির্মিত হয়নি বলে রাজা মুষড়ে পড়লেন। কাজে বাধাদানের জন্য রাজা অনুতাপ করতে থাকলেন। তখন তাঁকে স্বপ্ন দিয়ে জগন্নাথ বললেন যে, এরকম আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল।

তিনি এই রূপেই পূজিত হতে চান। এভাবেই আবির্ভাব ঘটে জগন্নাথ দেবের এবং সেই থেকেই শুরু তাঁর পুজো। পরবর্তীকালে রাজা পুরীর এই জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ ও রথযাত্রার প্রচলন করেন। রথের বিশেষত্ব পুরীর রথযাত্রায় ব্যবহৃত তিনটি রথের ভিন্ন ভিন্ন নাম থাকে। জগন্নাথ দেবের রথের নাম ‘নান্দীঘোষ’, বলরামের রথের নাম ‘তালধ্বজ’ এবং সুভদ্রার রথের নাম ‘দর্পদলন’। এই তিনটি রথের উচ্চতা এবং রঙও আলাদা হয়।

রথে (RathJatra 2023) ১৮টি চাকা থাকে, বলরামের (Balaram) রথে থাকে ১৬টি চাকা। জগন্নাথ এবং বলরামের বোন সুভদ্রার রথে থাকে ১২টি চাকা। বর্তমানে এই রথযাত্রা বিশ্ববিখ্যাত এবং সারা ভারতবর্ষের মানুষের কাছে এক আনন্দের অনুষ্ঠান। ভক্তদের সমাগমে ছেয়ে যায় পুরুষোত্তম ক্ষেত্র বা শ্রীক্ষেত্র। ভারতবর্ষের সকল মানুষ অপেক্ষায় থাকেন এই উৎসবের জন্য।

আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া থেকে শুরু হয়ে নয় দিন ধরে চলে রথযাত্রা উত্‍সব। জগন্নাথ ধাম অর্থাত্‍ পুরীকে মর্ত্যের বৈকুণ্ঠ ধাম বলে মনে করা হয়। কারণ এই স্থানেই জগন্নাথ দেব রূপে বাস করেন শ্রীবিষ্ণু। ওডিশার পুরীতে অবস্থিত এই মন্দির নানা রহস্যে ঘেরা।

জেনে নিন পুরীর (Puri) জগন্নাথ মন্দিরের (Jagannath Temple) এমনই কয়েকটি রহস্য।

* বিজ্ঞানের নিয়ম অনুসারে এই পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তুর ছায়া পড়ে। যে কোনও জীব ও জড়বস্তুর ছায়া পড়ে। কিন্তু জগন্নাথ মন্দিরের কোনও ছায়া পড়ে না। চার লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে অবস্থিত জগন্নাথ মন্দির। এই মন্দিরের উচ্চতা ২১৪ ফুট। কিন্তু কেন এত বড় মন্দিরের ছায়া পড়ে না, তা আজও রহস্য।

* পুরাণ অনুসারে শ্রীবিষ্ণুর এক অবতার হলেন শ্রীকৃষ্ণ। যেহেতু মানব অবতার রূপে জন্ম নিয়েছিলেন, তাই প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুও ছিল নিশ্চিত। শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুর পর পঞ্চপাণ্ডব তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। কিন্তু এই সময় এক অবাক করা ঘটনা ঘটে। কৃষ্ণের সারা শরীর পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেও তাঁর হৃদয় স্পন্দিত হতে থাকে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে আজও শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় আজও স্পন্দিত হয়ে চলেছে।

* জগন্নাথ মন্দিরের যেখানে ঠাকুরের ভোগ তৈরি হয়, তাকে এই পৃথিবীর সবথেকে বড় রান্নাঘর বলে মনে করা হয়। এখানে কখনও প্রসাদ কম পড়ে না। যত পূণ্যার্থীই আসুন না কেন, কখনও প্রসাদ কম পড়ে না জগন্নাথদেবের মন্দিরে। এখানে সাতটা মাটির পাত্র ভরে শস্য রেখে সেই পাত্রগুলি একটির উপর একটি পরপর রেখে একদম নীচে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করা হয়। আশ্চর্যের বিষয় হল সবচেয়ে উপরের পাত্রের শস্য সবচেয়ে আগে রান্না হয়ে যায়।

* পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আরও একটি রহস্য জানলে সবাই অবাক হয়ে যান। এই মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও বিমান কখনও ওড়ে না। এমনকি মন্দিরের উপর কোনও পাখি পর্যন্ত বসে না।

(Collected)

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *