আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘শিবরাত্রি’ তিথি বলেই আমরা জানি। কিন্তু ভারতীয় পুরান মতে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘শিবরাত্রি’ নয়,’মহাশিবরাত্র।
এখন প্রশ্ন – এই দুয়ের পার্থক্য কী? হিন্দু পুরানমতে, প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে ‘মহাশিবরাত্রি’ উদযাপিত হয়। যদিও হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মাসিক ‘শিবরাত্রি’ উপবাস ও পুজো করা হয়।
তবে ফাল্গুন মাসের চতুর্দশী তিথিকে মহাশিবরাত্রি হিসেবে পালন করা হয়। মহাশিবরাত্রিতে সারা দেশে সমস্ত জ্যোতির্লিঙ্গ এবং প্যাগোডায় শিব ভক্তদের প্রচুর ভিড়। যেখানে শিবলিঙ্গের জলাভিষেক করা হয় আচার মেনে। তাহলে প্রতিমাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালন করা হয় ‘শিবরাত্রি’ উৎসব আর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশীতে পালন করা হয় ‘মহাশিবরাত্রি’ উৎসব।
মহাশিবরাত্রি নিয়ে ভারতীয় মাইথলজিতে একাধিক গল্প প্ৰচলিত। যেমন একটি পুরানে বলা হয়েছে, ভগবান শিব প্রথম ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে শিবলিঙ্গ (Siv) রূপে আবির্ভূত হন। এই কারণে, এই তারিখটি প্রতি বছর মহাশিবরাত্রি হিসাবে পালন করা হয়- ভগবান শিবের জ্যোতির্লিঙ্গের (Spirituality) প্রকাশ হিসাবে।
শিব পুরান অনুসারে, শিবের নিরাকার রূপের প্রতীক ‘লিঙ্গ’ শিবরাত্রির শুভ তিথিতে আবির্ভূত হয়েছিল এবং ব্রহ্মা ও বিষ্ণু দ্বারা প্রথম পূজিত হয়েছিল। অন্য এক পুরানমতে, ফাল্গুন চতুর্দশী তিথিতে ভগবান শিব তার গৃহত্যাগ ত্যাগ করেন এবং দেবী পার্বতীকে বিয়ে করে গৃহজীবনে প্রবেশ করেন। এ কারণে প্রতি বছর ফাল্গুন চতুর্দশী তিথিতে ভগবান শিব ও মা পার্বতীর বিবাহের আনন্দে ‘মহাশিবরাত্রি’ পালিত হয়।
এই দিনে, শিবভক্তরা মহাশিবরাত্রিতে (Maha SivRatri) অনেক জায়গায় ভগবান শিবের শোভাযাত্রা বের করে। ধর্মীয় (Spiritual) বিশ্বাস অনুসারে, মহাশিবরাত্রির উপবাস, পুজো ও জলাভিষেক (Rudravishek) বিবাহিত জীবনের সকল প্রকার সমস্যা দূর করে এবং দাম্পত্য জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আনে। এছাড়াও মহাশিবরাত্রির দিনেই বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গ প্রকাশিত হয়েছিল। আমরা দেখেছি সমস্ত দেবতার প্রসাদকে ‘প্রসাদ’ বলাহয়, কিন্তু পুরীধামে জগন্নাথের প্রসাদকে ‘মহাপ্রসাদ’ বলাহয়। ‘শিবরাত্রি’ (Sivratri) ও ‘মহাশিবরাত্রি’ অনেকটা সেইরকম।