খবরে আমরাঃ অবিলম্বে রান্নার গ্যাসের দাম ৩০০ টাকা কমাতে হবে। পেট্রল–ডিজেলেরও বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করতে হবে। কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে এই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীদের বলতে না দিয়ে সেস প্রসঙ্গে অবিজেপি রাজ্যগুলিকে নিশানা করেছেন তাতে মমতা ব্যাপক ক্ষুব্ধ। বুধবার তিনি বলেছিলেন, “কেন্দ্র দাম বাড়াবে, আর রাজ্যকে সেস কমাতে বলবে কেন?” বৃহস্পতিবার আক্রমণ দ্বিগুণ করে বলেন, “কোভিড নিয়ে বৈঠক ডাকা হলেও আসল অ্যাজেন্ডা ছিল পেট্রল-ডিজেল)। আসলে আবার তেলের দাম ওরা বাড়াবে। সেই জন্যই দোষ নিজেদের ঘাড় থেকে নামাতেই রাজ্যের ঘাড়ে দায় ঠেলছে। এই সরকার সাত বছরে বারবার পেট্রল-ডিজেলের মূল্য বাড়িয়ে ১৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা তুলেছে। রাজ্যের সব টাকা কেটে নেবে। পাওনা দেবে না। আবার দায় ঠেলে দেবে রাজে্যর ঘাড়ে।”
বিমানের জ্বালানিতে কেন্দ্রীয় সরকারের চাপানো শুল্ক কমানোরও দাবি করে টুইট করেন মমতা। এদিন সকালেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী বিমানের জ্বালানির উপর উচ্চহারে ভ্যাট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র ও দিল্লি সরকারকে খোঁচা দেন। তারপরই মমতা পাল্টা কেন্দ্রকে আক্রমণ করে দাবি করে বলেন, “রাজ্যগুলির দিকে আঙুল তোলার আগে কেন্দ্র বিমানের ভাড়া কমাতে বিমানের জ্বালানি বা এটিএফের উপর উৎপাদন শুল্ক, অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক ও অন্তঃশুল্ক কমিয়ে যথাক্রমে ৫ শতাংশ, ১১ শতাংশ ও ১১ শতাংশ করুক।”
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম যখন কমে তখন এরা দাম কমায় না। কারণ ওদের একটা ফান্ড রিজার্ভ করে রেখে দেয়। নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করবে, পার্টির স্বার্থে। ইতিহাস, ভুগোল, নদী–কেন্দ্রীয় সরকারের সব প্রোগ্রাম তো পার্টির কথা ভেবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার মমতা দিল্লি যাবেন। ঠিক তার আগে তাঁর নিশানায় আবার নরেন্দ্র মোদি। এবারের সফরে ওই বৈঠকে মোদির সঙ্গে দেখা হবে মমতার। কিন্তু তাঁদের মুখোমুখি আলাদা কোনও বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, ‘‘শনিবার বৈঠক রয়েছে। এর বাইরে আমার কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেই। পয়লা মে আছে। ঈদ আছে। ৩৩ শতাংশ সংখ্যালঘু পরিবার রাজ্যে। প্রতিবার আমায় রেড রোডে যেতে হয়। ফলে আমাকে বৈঠকের দিনই বিকেলে কলকাতায় ফিরে আসতে হবে। এর মধে্য অক্ষয় তৃতীয়াও রয়েছে। এবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে দেখা করার সময় হচ্ছে না।”
খুবই সংক্ষিপ্ত সফর। মমতাও জানিয়ে দিয়েছেন আর কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেই। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, জ্বালানির দাম নিয়ে রাহুল গান্ধীও টুইট করেছেন। আপনারা কী যৌথভাবে কেন্দ্রকে এই নিয়ে কোনও চিঠি দেবেন? উত্তরে মমতা বলেন, “চিঠি দিলে চিঠির কোনও রেসপন্স করে না কেন্দ্র।” কেন্দ্রের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতার তোপ, “আমরা যখন কোভিডের মোকাবিলা করেছি, তখন তোমরা ক্রেডিট নিয়েছ। আর বিপদে পড়লে রাজ্যের দোষ। অবিলম্বে গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের দাম সিলিন্ডার পিছু ৩০০ টাকা কমাতে হবে।”
রাজ্য পেট্রল-ডিজেলকে জিএসটি-র আওতায় আনার পক্ষপাতি কী না জানতে চেয়ে এদিন প্রশ্ন করা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। উত্তরে তিনি বলেন, “এই বিষয়টি অমিত মিত্র জানেন।” এই সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসা মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বলেন, “জিএসটি-তে পেট্রল-ডিজেলকে অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতা করেছিলাম আমরা। তাই জিএসটি কাউন্সিলে ওটা পাস হয়নি।”