www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

May 2, 2024 1:24 pm
santoshi

সন্তোষী মা (ইংরেজি:Santoshi Mata) হিন্দুধর্ম-এর একজন মহাদেবী। সন্তোষী মাকে সন্তোষের অধিষ্ঠাত্রী দেবী বলে অভিহিত করা হয়। বিশেষত উত্তর ভারত ও নেপাল-এর মহিলারা সন্তোষী মায়ের পূজা করে। বার্ষিক ১৬টা শুক্রবার সন্তোষী মা ব্রত নামক এক ব্রত পালন করলে দেবী সন্তুষ্ট হন বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন।

সন্তোষী দেবী (Santoshi Maa) হলেন অধিষ্ঠাত্রী দেবী। উত্তর ভারত, নেপালের মহিলারা সন্তোষী দেবীর পুজো করে থাকেন। তবে এই ব্রত এখন অনেকেই পালন করেন। বাঙালি ঘরে ঘরেও পূজিতা হন এই দেবী।

পৌরাণিক মতে তিনি গণেশের (Lord Ganesha) কন্যা। গণেশের দুই ছেলে শুভ আর লাভের ইচ্ছে হল বোনের হাতে রাখী পরবেন। কিন্তু গণেশের কোনও কন্যা ছিল না। পুত্রদের মনোবাসনা পূর্ণ করতে এক কন্যার সৃষ্টি করলেন গণেশ। তাঁর হাতে রাখী পরলেন শুভ আর লাভ। দাদাদের মনের ইচ্ছে পূর্ণ করলেন বলে তাঁর নাম হল সন্তোষী। এই দেবী পূজিতা হন দুর্গার অবতার রূপেও । ভক্তের মনোকামনা পূর্ণ করে সন্তুষ্টি দেন। তাই তিনি সন্তোষী (Santoshi Maa) । দেবীর হাতে তরবারি, চালের সোনালী পাত্র, ত্রিশূল। দেবীর জন্ম হয়েছিল শুক্রবারের পূর্ণিমা তিথিতে। তাই সন্তোষী মায়ের পুজোর জন্য শুক্রবার দিনটি শ্রেষ্ঠ। ইনি চতুর্ভুজা ও রক্তবস্ত্র পরিহিতা। নিজের চারটি হাতের দুটিতে ত্রিশূল, ও তলোয়ার ধারণ করেন। বাকি দুটি হাতে বরাভয় ও সংহার মুদ্রা ধারণ করেন। এই দেবীর ত্রিশূল পাত, তিনটি গুণ যথা- সত্ত্ব, রজঃ, তম এর প্রতীক, আর তলোয়ারটি জ্ঞানের প্রতীক।

সন্তোষী দেবীর (Santoshi Maa) পুজোতে কোনরকম টক বস্তু বা আমিষ দ্রব্য প্রদান করা যায় না। এই পুজোয় সরষের তেল ব্যবহার করা যায় না, ঘি এর প্রয়োজন হয়। শুক্রবারে স্নান সেরে পরিষ্কার কাপড়ে মায়ের পুজো করতে হয়। ঘট স্থাপন করতে হয় ঘটের উপর বট, কাঁঠাল, পাকুড় পল্লব দিতে হয়। আম্রপল্লব দিতে নেই। সব রকম ফল চলে। তবে, বেলপাতা আবশ্যক। গোটা ফল হিসাবে কলা দেওয়া যায়। শুক্রবার যিনি ব্রত করবেন, তাকে সারাদিন উপবাস থাকতে হয়। দুধ, ছোলা দিয়ে আলু দিয়ে ভেজে মিষ্টি ফল, জল গ্রহণ করবেন।

১৬ শুক্রবার ব্রত উদযাপন করতে হয়। উদযাপনের দিন ৭ জন বালক কে ভোজন করাতে হয়। ছানা থেকে তৈরি কোনো মিষ্টি মাকে দেওয়া যায়না। উদযাপনের দিন মায়ের কাছে একটি নারকেল ফাটিয়ে নারকেলের জল মায়ের চরণে দিতে হয়। নারকেল মায়ের সামনে ফাটাবেন, এক আঘাতে। এইভাবে সন্তোষী মায়ের ব্রত পালন করলে তাঁর কৃপায় আপনার জীবনে সুখ শান্তি ফিরে আসবে।

জগতে সবকিছুই চলে তাঁর ইঙ্গিতে। দেবী মাত্রেই সেই মহামায়ার অংশবিশেষ। সন্তোষীও তার ব্যতিক্রম নন। তবে ভক্তের কল্পনায় তিনি দেবী অপেক্ষা মাতৃরূপেই বিরাজমানা। মর্তবাসীর কাছে তিনি মা সন্তোষী হিসেবেই অধিক জনপ্রিয়।

শাস্ত্রে একাধিক ক্ষেত্রে দেবীর এই বিশেষ রূপের উল্লেখ মেলে। পুরাণমতে, দেবী সন্তোষী গণেশ কন্যা। তাই তাঁকে সন্তুষ্ট রাখলে খুশি হন গণপতিও। প্রতি সপ্তাতে শুক্রবার (Friday) দেবীর পুজোর দিন। এইদিন বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে ব্রত করলে অবশ্যই ফল মেলে। একটানা ১৬টি শুক্রবার ব্রতের নিয়ম রয়েছে। তারপর উদযাপন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে উদযাপনের দিন আটজন বালককে খাওয়ানোর নিয়ম রয়েছে। সেইসঙ্গে দেবীর প্রসাদের কিছু অংশ খাওয়াতে হয় গোরুকে।

গো সেবা দেবীর বিশেষ পছন্দ। কেউ যদি এই ব্রতের দিন ভক্তিভরে গো সেবা করেন তাহলে তাঁর প্রতি দেবী বিশেষ প্রীত হন। তবে এই পুজোয় সবথেকে কড়াভাবে যে নিয়ম মানতে হয়, তা হল টক জাতীয় খাবারে নিষেধাজ্ঞা। স্রেফ খাওয়া নয়, পুজোর দিন ব্রতীর টক জাতীয় দ্রব্য ছোঁয়াও নিষেধ। (Astrology) শাস্ত্রমতে, টক জাতীয় পদার্থকে রজগুন সমৃদ্ধ আহার বলা হয়। অন্যদিকে আমিষ খাবার হল তমঃ গুণ সিদ্ধ। দেবী পুজোয় এই দুই-ইয়ের বর্জন একান্ত কাম্য। এইদিন সত্ত্বগুণ সমৃদ্ধ আহার করার নিয়ম রয়েছে। মিষ্টি, ফল, গুড়, ছোলা এইসব খেয়েই দিন কাটাতে হয় ব্রতীকে। মিষ্টির ক্ষেত্রেও ছানার মিষ্টি নিষিদ্ধ। কারণ ছানা তৈরির ক্ষেত্রে মূলত লেবুর ব্যবহার করা হয়। সেই টক বস্তু কোনওভাবেই এই পুজোয় থাকতে পারে না।

দেবী চতুর্ভুজা। রত্নসিংহাসনে বিরাজ করছেন তিনি। সদাহাস্য সুন্দরী এক মূর্তি। চার হাতে, তরবারী, ত্রিশূল, বরাভয় ও সংহার মূদ্রা। দেবীর বাহন বাঘ (Tiger)। তবে মূর্তিতে একটি গোরুও দেখা যায়। দেবীর প্রিয় পশু হিসেবেই তাকে ওই গোরু দেবী মূর্তির পাশে থাকে। দেবী ভাগবতে পার্বতী (Maa Durga) জন্মের যে আখ্যান মেলে সেখানে শুক্রবারের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেইদিনটি পূর্ণিমা তিথি ছিল বলেও উল্লেখ রয়েছে। পার্বতী দেবীর সেই স্বরূপই চতুর্ভূজা হিসাবে হিমালয়কে দেবীগীতের মাধ্যমে সন্তোষ (Spirituality) প্রদান করেছিল।

অনেকেই মনে করেন দেবী সন্তোষীর জন্মবৃত্তান্তের ব্যাখ্যা এটিই। তবে গনেশ কণ্যা হিসেবে পার্বতীর আরও কিছু জন্মবৃত্তান্ত মেলে। বৈষ্ণব আদর্শে ভগবতী যোগমায়াকে বিভিন্ন দেবীর রূপে ভিন্ন ভিন্ন নামে উপাসনা করা হয়। তাঁদের অন্যতমা দেবী সন্তোষী। তাই তাঁর পুজোয় কোনওরূপ আমিষের উল্লেখ নেই। তবে কথিত আছে, মনে মনে কিছু প্রার্থনা করে ১৬ শুক্রবার মা সন্তোষীর ব্রত করলে অবশ্যই ফল মেলে। তবে ব্রতের পর অবশ্যই শুনতে হয় ব্রতকথা। এইসব নিয়ম মানলেই তুষ্ট হন দেবী।

(Collected)

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *