খবরে আমরাঃ গত মঙ্গলবার সকালে রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম থেকে সাতজনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরও একজনের। তাঁরও শরীরের বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনা গোটা রাজ্যকে নাড়িয়ে দিয়েছে। মনে করিয়েছে ছোট আঙারিয়া, সূঁচপুরের কথা। বগটুইয়ের ঘটনায় প্রথম থেকেই উঠে এসেছে আনারুল হোসেন নামে এক তৃণমূল নেতার নাম। বৃহস্পতিবার সেই আনারুলকে গ্রেফতার করা হয় তারাপীঠ থেকে। এই গ্রেফতারির ঘণ্টাখানেক আগেই বগটুইয়ের অকুস্থলে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় বলেছিলেন, “আনারুল আমাদের ব্লক প্রেসিডেন্ট। তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল ওরা। কিন্তু সময় মতো পুলিশ পাঠায়নি। তাই আনারুলকে গ্রেফতার করা হবে। কেন ও সময়মতো পুলিশ পাঠাল না? হয়ত তা হলে এই ঘটনা নাও ঘটতে পারত। এটাও দেখতে হবে।” নিঃসন্দেহে আনারুলের গ্রেফতারি এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলেই মনে করছে পুলিশ।
কিন্তু কে এই আনারুল হোসেন?
রামপুরহাট লাগোয়া সন্ধিপুরের বাসিন্দা আনারুল হোসেন এক সময় কংগ্রেস করতেন। পরে ১৯৯৮ সাল নাগাদ তৃণমূলে যোগ দেন। এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি রামপুরহাট-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি। দলে ‘দক্ষ সংগঠক’ হিসাবে পরিচিতি রয়েছে তাঁর। এমনও শোনা যায়, তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। বগটুইয়ে দলের সংগঠন সামলাতেন আনারুলই। এমনও অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, এলাকায় পুলিশ প্রশাসনকেও নিয়ন্ত্রণ করতেন আনারুল। এ জেলায় বালিখাদানের যে ব্যবসা। সেখানেও নিয়ন্ত্রণকর্তা সেই আনারুল। এমনকী পুরসভাও তিনিই নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দলের হয়ে ভোট পরিচালনা মানে আনারুলই শেষ কথা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেই আনারুলই এবার পুলিশের জালে।
গ্রেফতারির আগে কী বক্তব্য ছিল আনারুলের
গুলিতে নিহত উপপ্রধান ভাদু শেখের ‘লবি’র লোক হিসাবেই আনারুল শেখের পরিচিতি। যেদিন ভাদু শেখ খুনের অভিযোগ ওঠে, সেদিনই রাতে বগটুইয়ে একাধিক বাড়িতে বোমাবাজি, আগুন লাগানোরও অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, আনারুল সবটাই জানতেন। তারপরও কোনও পদক্ষেপ করেননি। এমনকী পুলিশকে সক্রিয় হতে দেননি বলে অভিযোগ। যদিও আনারুলের বক্তব্য ছিল, “আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ উঠেছে। আমাদের উপপ্রধান মারা গিয়েছেন খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে যাই। সেখান থেকেই শান্তির বার্তা দিয়েছিলাম। যাঁরা ভাদু শেখকে মেরেছে তাঁরাই আগুন লাগিয়ে আমার নামটা জুড়ে বদনামের চেষ্টা করছে।”