বেসরকারি আধুনিক হাসপাতালগুলির (Private Hospital) ধাঁচে এবার দেশের সবকটি মেডিক্যাল কলেজকে (Medical college) সাজাতে উদ্যোগী হল কেন্দ্র। সবকটি মেডিক্যাল কলেজ মুড়ে ফেলা হচ্ছে সিসিটিভির (CCTV) ঘেরাটোপে। এতে যেমন সেখানে চলা চিকিৎসার উপর নজর রাখা সম্ভব হবে তেমনি আটোসাঁটো নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা সম্ভব হবে। নানান সময়ে দেশের মিডিক্যাল কলেজগুলিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের গাফিলতি, চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগ কাচটিয়ে নজরদারি বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকেই। এতে উপকৃত হবেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রাই।
সুষ্ঠু প্রশাসন ও রোগীস্বার্থকে সামনে রেখে মেডিক্যাল কলেজগুলির দৈনন্দিন কাজে সরাসরি নজরদারি চালাতে উদ্যোগী ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। আর এই জন্য দেশের সব মেডিক্যাল কলেজের মূল প্রবেশদ্বার-সহ ২৫টি স্থানে সিসিটিভি বসানোর ফরমান জারি করল কমিশন। কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে বেনজির বলেই মনে করে শিক্ষক-চিকিৎসকদের বড় অংশ। দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সিসিটিভি (CCTV) বসানোর নির্দেশ জারি করা হল। আর এই নির্দেশকে ঘিরে চিকিৎসকদের মধ্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (The National Medical Commission) তরফে একটি অ্যাডভাইজারি করে দেশের সব রাজ্য সরকারকে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মূল প্রবেশদ্বার-সহ রোগীর নাম নথিভুক্ত করার কাউন্টার, আউটডোর এমনকী প্রতিটি ফ্যাকাল্টির শিক্ষক, চিকিৎসকগণ যে জায়গায় দৈনিক উপস্থিতি স্বাক্ষর করেন সেই জায়গাতেও সিসিটিভি বসাতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের আদেশনামায় একটি মেডিক্যাল কলেজের অন্তত ২৫টি স্থানকে নির্ধারিত করা হয়েছে যেখানে সিসিটিভি বসাতে হবে।
যেসব স্থানকে সিসিটিভি বসানোর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল : মেডিসিন, শল্য চিকিৎসা, স্ত্রী ও শিশুরোগ এবং অস্থিরোগের আউটডোর। ২) রোগীর অ্যানাস্থেশিয়া ও জ্ঞান ফিরিয়ে আনার এলাকা। ৩) প্রতিটি বিভাগের ফ্যাকাল্টি লাউঞ্জ এবং উপস্থিতি এলাকা। ৫) লেকচার থিয়েটার। ৬) মেডিক্যাল পড়ুয়াদের অ্যানাটমি ডিসেকশন হল। ৭) ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরি। ৮) প্যাথলজি ও মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরি। ৯) ফার্মাকোলজি ল্যাবরেটরি। ১০) রোগীর অপেক্ষার স্থান। ১১) জরুরি ও ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ড।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের চেয়ারম্যান ডা, সুরেশচন্দ্র শর্মা তাঁর প্রস্তাবে নির্দিষ্ট করে জানিয়েছেন, সিসিটিভিগুলি যেন ডিভিআর ও উচ্চক্ষমতার নেটওয়ার্ক যুক্ত হয়। সাংসদ তথা চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ’র তরফে শান্তনু সেন বলেন, ‘‘কিছু অসাধু রয়েছেন। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে কমিশনের এই পদক্ষেপ।’’ জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের এই প্রস্তাবে চিকিৎসক-অধ্যাপকদের একাংশ যেমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তেমনই আরেকাংশ বলছে, এই নিয়ম আগেই ছিল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রঘুনাথ মিশ্র বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, কলেজ বা হাসপাতালের কোনও জায়গা সিসিটিভিতে দেখতে না পেলে মাঝে মধ্যে ফোন করে।