খবরে আমরাঃ কুলে বেয়াইনি নিয়োগ নিয়ে যখন ধুন্ধুমার চলছে হাইকোর্টের বিভিন্ন এজলাসে, তখন প্রাথমিকে পাঁচজনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিল বিচারপতি অমৃতা সিনহার আদালত। আগামী ছ’ সপ্তাহের মধ্যে এদের নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ নয় সালের টেট উত্তীর্ণ এই পাঁচজনের চাকরি বিভিন্ন কারণে আটকে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। হাইকোর্টের নির্দেশ, প্রয়োজনে আগের নিয়োগ তালিকা সংশোধন করে, নতুন করে পদ সৃষ্টি করে এদের নিয়োগ করতে হবে।
২০০৯ এর প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটিলতা চলছিল। কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে প্রায় এক দশক পরে গত বছর সেই জটিলতা কাটে। তারপরে বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ হয়। কিন্তু মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার শামীমা খাতুন সহ মোট পাঁচজনের তাতেও কপাল ফেরেনি। এদের সকলেরই জমি হারা হিসেবে শংসাপত্র রয়েছে। এরা সকলেই উত্তর 24 পরগনা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। নিয়োগ পরীক্ষাতেও এরা যত নাম্বার পেয়েছেন, তার থেকে কম নম্বরে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হয়েছে। ফলে তার থেকে বেশি নম্বর পেয়ে তবুও নিয়োগ তালিকা নাম ছিল না। ফলে এদের হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন আইনজীবী অরিন্দম দাস। এরা চাকরি পাওয়ার অধিকারী প্রমাণ করতে যাবতীয় নথি তিনি পেশ করেন। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, এরা যে এক্সামটেড ক্যাটাগরি বা জমি হারা হিসেবে বিশেষ শ্রেণী ভুক্ত, তার কোন প্রমাণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেখাতে পারেননি। ফলে নিয়োগ তালিকায় নাম রাখা যায়নি। তাতে মামলাকারীদের আইনজীবী অরিন্দম দাস নথি দিয়ে দেখান, বিশেষ শ্রেণীভূক্ত হওয়াতেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাধারণ শ্রেণীর তুলনায় কম নম্বর পাওয়ার পরেও এই চাকরির পরীক্ষায় বোর্ড তাদের বসতে দিয়েছিল। যদি সেই শংসাপত্র বোর্ড না দেখে থাকতো সে ক্ষেত্রে তারা পরীক্ষাতেই বসতে পারতেন না।
আদালত এই যুক্তি মেনে নিয়ে এদের চাকরি দেওয়ার দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তখন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে দাবি করা হয়, ৩৭০ টি পদের একটিও এখন আর ফাঁকা নেই। সব পদ পূরণ হয়ে গিয়েছে। আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে দেয়। আদালতের পাল্টা যুক্তি, যোগ্য হিসেবেই নির্দিষ্ট শ্রেণীর ভুক্ত হওয়ায় এবং সর্বনিম্ন যত নম্বর পাওয়া প্রার্থীকে নিয়োগ করা হয়েছে– এদের প্রত্যেকেরই প্রাপ্ত নম্বর তার থেকে বেশি হওয়ায়, এদের ওই নির্দিষ্ট শ্রেণীভূক্ত হিসেবেই নিয়োগ করার দায় বোর্ডের। প্রয়োজনে তালিকা আবার সংশোধন করে, এদের জন্য পদ তৈরি করে, সেখানে নিয়োগ করতে হবে।