লন্ডভন্ড সন্দেশখালি। কয়েক সেকেন্ডের টর্নেডোর হানায় ভেঙে পড় সন্দেশখালি। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরেই এই দুর্যোগ। সামাল দিতে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ও স্থানীয় প্রশান। কেউ বলছেন ২০ সেকেন্ড, কারও মতে, প্রায় এক মিনিট। সময়ের হিসেবে যতই গরমিল থাকুক, টর্নেডোর (Tornado) ভয়াবহ দাপট কিন্তু টের পেয়েছেন সকলে। শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির (Sandeshkhali) সরবেড়িয়া আগারাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা তছনছ করে দিল দাপুটে টর্নেডো। ঝড়ের জেরে ভাঙল অন্তত ৫০০ ঘরবাড়ি, গাছপালা। সামান্য ছাদটুকু হারিয়ে সহায়সম্বলহীন বহু মানুষ। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে রাস্তাঘাট বন্ধ।
শুক্রবার বিকেল ৩ টে নাগাদ সন্দেশখালি সরবেড়িয়া আগারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আছড়ে পড়ে প্রবল ঝড়। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ঝড়েই সব লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। প্রাণহানি না হলেও ঝড়ের কেন্দ্রস্থলে এক কিলোমিটারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে গাছপালা ভেঙে-উপড়ে পড়েছে। ভেঙেছে অন্তত ২৫০ কাঁচা বাড়ি। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন গোটা ব্লক। আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। সেই বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা।
“হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ছিল বৃষ্টি হবে দু’দিন। কমলা সতর্কতাও ছিল। কিন্তু দুম করে এমন ঝড় চলে আসবে, কে জানে !” – এমনটাই বক্তব্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের। এমনিই নদীমাতৃক এলাকা, তার উপর প্রতি বছরই ভাঙে। তাই রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
গ্রাম লন্ডভন্ড হওয়ার খবর পেয়েই বৃষ্টি মাথায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সন্দেশখালি-১ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। ঝড় থামতেই রাস্তার উপরে ভেঙে পড়া গাছগুলোকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে হাড়োয়া থানার পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্যোগে। যে সমস্ত বাড়ি একেবারেই ভেঙে পড়েছে সেই বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুপ্রতিম আচার্য। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। তিনি জানান, “কম বেশি প্রায় আড়াইশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপদ জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় বড়ো গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসেবনিকেশ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের কাছে এই তথ্য পাঠানো হবে।”
শুধু সন্দেশখালিতেই নয়, খারাপ আবহাওয়া কলকাতাতেও। যার জেরে ৫ টি বিমান নামতে পারেনি কলকাতা বিমানবন্দরে। তিনটি বিমান গুয়াহাটি ও ২টি ভুবনেশ্বরে অবতরণ করে বলে সূত্রের খবর। এদিকে, আগামী ২ দিন দক্ষিণবঙ্গের ৪ জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। শনিবার পর্যন্ত সমুদ্রে যাওয়া নিষেধ মৎস্যজীবীদের।