www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 27, 2024 1:31 pm

কথিত আছে, আমলা কোনও সাধারণ ফল নয়, ভগবান ব্রহ্মার অশ্রু থেকে সৃষ্টি হয়েছিল এই আশ্চর্য ফল। শাস্ত্র অনুসারে তো বটেই, আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও রয়েছে আমলা বা আমলকীর গুরুত্ব। আমলকী একাদশী উপলক্ষে বেশ কিছু প্রতিকার মেনে চললে সন্তানের সুখ, সন্তানের মঙ্গলকামনা, বিবাহের সমস্যা ও বৈবাহিক জীবনে সুখের বন্যা বইতে পারে। ফাল্গুন মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথি আমলকী একাদশী বা রঙ্গভরী একাদশী নামে পরিচিত। ২০ মার্চ অর্থাৎ আজ আমলকী বা রঙ্গভরী একাদশী পালিত হবে। হিন্দু ধর্মে সমস্ত একাদশীকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হলেও, আমলকী একাদশীকে সর্বোচ্চ স্থান প্রদান করা হয়েছে। এই একাদশীতে বিষ্ণু ও আমলকী গাছের পুজো করা হয়।

হিন্দু ক্যালেন্ডারে প্রতি মাসে কৃষ্ণ পক্ষ ও শুক্ল পক্ষে দুটি একাদশী ব্রত পালিত হয়। ফাল্গুন মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথি আমলকী একাদশী বা রঙ্গভরী একাদশী নামে পরিচিত। ২০ মার্চ অর্থাৎ আজ আমলকী বা রঙ্গভরী একাদশী পালিত হবে। হিন্দু ধর্মে সমস্ত একাদশীকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হলেও, আমলকী একাদশীকে সর্বোচ্চ স্থান প্রদান করা হয়েছে। এই একাদশীতে বিষ্ণু ও আমলকী গাছের পুজো করা হয়। আমলকী গাছ বিষ্ণুর অত্যন্ত প্রিয়। আমলকী একাদশীর দিন ব্রত ও উপবাস রেখে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করুন। ভোগ হিসেবে ওইদিন আমলা নিবেদন করুন। ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় বিবাহের যোগ দ্রুত ঘটতে পারে, তেমনি পছন্দের জীবনসঙ্গী পাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হতে পারে।

হিন্দু ধর্মে তিথি মেনে একাদশী ও পূর্ণিমা-অমাবস্যা মেনে চলার রীতি রয়েছে। ক্যালেন্ডার অনুসারে, আগামী ২০ মার্চ পালিত হবে আমলকী একাদশীর উপবাস ও ব্রত। আমলকী একাদশীর দিন উপবাস পালন করার পাশাপাশি আমলা গাছ ও বিষ্ণুর পুজো করা উচিত। এছাড়া এদিন উপবাস রাখলেও আমলা খাওয়ারও প্রথা রয়েছে। কথিত আছে, আমলা কোনও সাধারণ ফল নয়,  ভগবান ব্রহ্মার অশ্রু থেকে সৃষ্টি হয়েছিল এই আশ্চর্য ফল। শাস্ত্র অনুসারে তো বটেই, আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও রয়েছে আমলা বা আমলকীর গুরুত্ব। এদিন সন্তানের । আমলকী একাদশী উপলক্ষে  বেশ কিছু প্রতিকার মেনে চললে সন্তানের সুখ, সন্তানের মঙ্গলকামনা, বিবাহের সমস্যা ও বৈবাহিক জীবনে সুখের বন্যা বইতে পারে। 

বিয়ের বহু বছর পরেও যদি সন্তান সুখ না পেয়ে থাকেন, তাহলে আমলকী একাদশীর দিন ব্রত ও উপবাস রাখা জরুরি। এদিন বিষ্ণুদেব ও দেবী লক্ষ্মীর পুজো করে মিষ্টি আমলা নিবেদন করুন। এরপর ৫ বা ১১টি শিশুকে আমলার মুরোব্বা বা আমলা দিয়ে তৈরি মিষ্টি খাবার প্রসাদ হিসেবে বিলি করতে পারে। শ্রী হরির কৃপায় সন্তানের সুখ পেতে পারেন আপনি। যদি জীবনের একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যান, তাহলে সেই আচার অনুসারে, আমলকী একাদশীর উপবাস পালন করা উচিত। বিষ্ণুপুজোর পর আমলা গাছে জল দিতে পারেন। নারায়ণের আশীর্বাদ সর্বদা বজায় থাকবে ও সাফল্যের সঙ্গে কাজ সম্পন্ন হবে। 

আমলকীর মাহাত্ম্য

পৌরাণিক ধারণা অনুযায়ী বিষ্ণুর মাধ্যমেই আমলকী গাছের উৎপত্তি। এই গাছের একটি অংশে দেবতার বাস। আমলকী একাদশীর দিনে আমলকী গাছের তলায় বসে বিষ্ণুর পুজো করলে নারায়ণ অত্যন্ত প্রসন্ন হন। মনে করা হয় আমলকী গাছের তলায় বসে নারায়ণের আরাধনা করলে হাজার গোরু দানের সমান পুণ্য অর্জন করা যায়।

আমলকী একাদশী ব্রতর মাহাত্ম্য

এই একাদশী তিথিতে আমলকীর উবটন লাগানো উচিত এবং আমলকীর জলে স্নান করা উচিত। এ ছাড়াও এই তিথিতে আমলকী দান ও খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আমলকী একাদশী ব্রতকথা

পৌরাণিক কালে বৈদিশ নামক এক নগর ছিল। সেই নগরে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্রের বাস ছিল। সেখানে বসবাসকারী প্রত্যেকে বিষ্ণু ভক্ত ছিলেন। সেই নগরের রাজা ছিলেন চৈতরথ। তিনি বিদ্বান ও ধার্মিত ছিলেন। তাঁর নগরে কোনও ব্যক্তি দরিদ্র ছিল না। বৈদিশে বসবাসকারী প্রত্যেকে একাদশী ব্রত পালন করত। একদা ফাল্গুন মাসের আমলকী একাদশীতে প্রত্যেকে উপবাস করেন এবং মন্দিরে গিয়ে পুজো ও রাত্রি জাগরণ করেন। তখনই রাতেবেলা সেখানে এক ঘোর পাপী শিকারী আসে। ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত ছিল সেই শিকারী। তাই মন্দিরের এক কোণায় বসে সে জাগরণ দেখতে থাকে এবং বিষ্ণু ও আমলকী একাদশীর মাহাত্ম্য শোনে। এ ভাবে পুরো রাত কেটে যায়। নগরবাসীর সঙ্গে সেই শিকারীও জেগে রাত কাটায়। সকালে প্রত্যেকে নজের বাড়ি চলে যান। শিকারী বাড়ি গিয়ে খাবার খায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তাঁর মৃত্যু হয়।

তবে আমলকী একাদশীর ব্রতকথা শ্রবণ ও রাত্রি জাগরণের পুণ্য প্রভাবে রাজা বিদূরথের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করে। তার নাম হয় বসুরথ। বড় হয়ে সে নগরের রাজা হয়। একদা শিকারে বের হন বসুরথ। কিন্তু পথ হারিয়ে ফেলেন। রাস্তা হারিয়ে ফেলায় একটি গাছের তলায় ঘুমিয়ে পড়েন বসুরথ। কিছুক্ষণ পর সেখানে ম্লেচ্ছ এসে পড়ে এবং রাজাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে। তাঁদের মতে, এই রাজার কারণেই তাঁদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাই তাঁর হত্যা করা উচিত। তার পর ম্লেচ্ছরা ঘুমন্ত রাজার ওপর অস্ত্র নিক্ষেপ করতে শুরু করে। কিন্তু সেই অস্ত্র রাজার গায়ে ফুল হয়ে পড়ে।

কিছুক্ষণ পর সমস্ত ম্লেচ্ছ মৃত্যু হয়। রাজার ঘুম ভাঙলে তিনি এই দৃশ্য দেখেন ও সব বুঝতে পারেন। তাঁর মনে হয় যে এঁরা তাঁর হত্যা করার জন্য এসেছিল কিন্তু কেউ তাঁর প্রাণরক্ষা করেন। জঙ্গলে এমন কে আছে, যে তাঁর প্রাণরক্ষা করেছে! তখনই আকাশবাণী হয় যে, বিষ্ণু তার প্রাণ রক্ষা করেছে। গতজন্মে আমলকী একাদশীর ব্রত শোনার প্রভাবে শত্রু দ্বারা ঘিরে থাকা সত্ত্বেও সে জীবিত থাকে। তার পর রাজা নিজের নগরে ফিরে এসে সুখ-শান্তিতে রাজত্ব এবং ধর্মীয় কাজ করতে থাকেন।

ব্রহ্মাণ্ড পুরাণে মান্ধাতা-বশিষ্ঠ সংবাদে ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষীয়া একাদশী মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। ফাল্গুন মাসে চন্দ্র পাক্ষিকের একাদশী (এগারোতম দিন), শুক্লপক্ষ বা চন্দ্র চক্রের মোম পর্যায়কে বলা হয় আমলকী একাদশী।

এই একাদশী ব্রতের নামকরণ করা হয়েছে আমলা, ভারতীয় আমলার ঔষধি গুণের জন্য পরিচিত। এটি বহু শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আদর্শভাবে, একাদশী ব্রত দশমী তিথির সন্ধ্যা থেকে দ্বাদশী তিথির সকাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। তবে আমলকি একাদশীর ব্রতের নিয়ম অপরিকল্পিত উপবাস আপনার স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ব্রত পালন করার আগে আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা মূল্যায়ন করুন। এছাড়াও, যদি আপনি চিকিত্সার অধীনে থাকেন বা ওষুধের অধীনে থাকেন তবে স্বাস্থ্য জটিলতা এড়াতে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। যাইহোক, আপনি যদি চিকিৎসাগতভাবে সুস্থ হন তবে আপনি ব্রত রাখতে পারেন।

– একাদশী তিথিতে তাড়াতাড়ি উঠুন (আদর্শভাবে ব্রহ্ম মুহুর্তের সময় – সূর্যোদয়ের প্রায় দুই ঘন্টা আগে)। – সকালে উঠেই স্নান করুন এবং পরিষ্কার কাপড় পরিধান করুন। – ধ্যানের পরে সংকল্পের জন্য প্রস্তুত হন (আপনার চিন্তাভাবনাগুলিকে ঐশ্বরিকতার সাথে সারিবদ্ধ করুন। এছাড়াও, একটি অঙ্গীকার নিন যে আপনি আন্তরিকভাবে ব্রত পালন করবেন)। – যতক্ষণ আপনি উপবাস পালন করবেন ততক্ষণ ব্রহ্মচর্য বজায় রাখুন। – পেঁয়াজ, রসুন, মাংস, চাল, গম, মসুর ডাল এবং ডাল খাবেন না এদিন। – অ্যালকোহল এবং তামাক এড়িয়ে চলুন। – ফল, দুধ, সাবুদানা খিচড়ি, পুরি বা পরোঠা ইত্যাদি খেতে পারেন। আপনার হজম প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায় এবং একই সময়ে, শরীর প্রতিদিন তার প্রাপ্তি পায় তা নিশ্চিত করার জন্য আপনার ব্রতের রেসিপি বেছে নিন। – অভাবীদের খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিস দান করুন। – সারাদিন ‘ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায়’ মন্ত্র জপ করুন। – একাদশী তিথিতে পূজা করার পর বিষ্ণু সহস্রনাম, ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা স্তোত্র এবং আমলকী একাদশী ব্রতকথা পড়ুন।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *