সাধক বামাখ্যাপার সান্নিধ্যে দুই মহাপুরুষ
ইতিহাস বলে, সাধম বামাখ্যাপা ছিলেন সাধুসন্তদের চার রূপের সমন্বয়ে গড়া। পুরানমতে সাধুসন্তদের চারটি রূপ। বালকবৎ, জড়বৎ,উন্মাদবৎ ও পিশাচবৎ। সাধক বামা খ্যাপার মধ্যে এই চারটে রূপই বর্তমান ছিল। কিন্তু সাধক রামকৃষ্ণের মধ্যে পিশাচবৎ রূপটি ছিল না। সে যাইহোক, বাংলার দুইজন মহাপুরুষ সাধক বামাখ্যাপার সাথে দেখা করেছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম স্বামী বিবেকানন্দ।
স্বামী বিবেকানন্দের তখন মাত্র ১৯ বছর বয়স। সে বিভ্রান্ত হয়ে আদর্শ গুরুর সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওই সময় হঠাৎ একদিন বামাক্ষ্যাপাকে (Bamakhypa) দেখার জন্য নরেন্দ্রনাথ (Swami bibekananada) আকুল হয়ে ওঠেন। শরৎচন্দ্রকে (Sarat Chandra Chattopadhyay)নিয়ে নরেন্দ্রনাথ চলে এলেন তারাপীঠে। দেখা হল দু’জনের। সে এক মহাসন্ধিক্ষণ। বামাক্ষ্যাপা ও নরেন্দ্রনাথ দু’জনেই দু’জনের দিকে দীর্ঘক্ষণ অপলক তাকিয়ে। আনন্দে আপ্লুত। দুজনের চোখেই জল। এক অপার আনন্দ নিয়ে ফিরলেন নরেন্দ্রনাথ। আর তাঁর সম্পর্কে বামাক্ষ্যাপা তাঁর বন্ধু শরৎচন্দ্রকে বললেন, ‘এই যুবক একদিন ধর্মের মুখ উজ্জ্বল করবে’। ইতিহাস সাক্ষী যে স্বামীজি আমেরিকা ধর্ম মহাসভায় গিয়ে সত্যি ধর্মের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন (Spiritual)।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ – রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ (Debenedranath Thakur)ও কেশবচন্দ্র সেনের উদ্যোগেই ব্রাহ্ম ধর্মের ব্যাপক প্রচার হয়। ব্রাহ্ম হওয়া সত্ত্বের দেবেন্দ্রনাথ একদিন যান তারাপীঠ (Tarapith)। দেখা করেন, বামা খ্যাপার সাথে। তাঁদের দুজনের মধ্যে অনেক কথা হয়। শোনা যায় যখন দেবেন্দ্রনাথ ফিরে আসছেন, তখন বামা খ্যাপা তাঁকে বলেন, “ফেরার পথে ট্রেন থেকেই দেখতে পাবে একটা বিশাল মাঠ। সেই মাঠের মাঝখানে আছে একটা ছাতিম গাছ আছে। তার নীচে বসে ধ্যান করবে। দেখবে মনের ভিতরে আনন্দের জ্যোতি জ্বলে উঠছে। ওখানে একটা আশ্রম বানাও দেখি। আহা, শান্তি শান্তি! ”ফেরার পথে সেই মাঠ এবং ছাতিম গাছ দেখে তিনি চমৎকৃৎ হলেন। সেখানে বসে ধ্যানে মগ্নও হলেন তিনি।পরবর্তী কালে সেটাই হলো অধুনা শান্তিনিকেতন