www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 26, 2024 2:04 am
god sun

সকালে ব্রহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে সূর্য প্রার্থনা মন্ত্র এবং সূর্য গায়ত্রী মন্ত্র জপ করতে হবে। এই মন্ত্রের পাশাপাশি সূর্য গায়ত্রী মন্ত্রের জ্ঞান থাকাও খুব উপকারী। এর ফলে সূর্য দেবতা শীঘ্রই প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের আশীর্বাদ করেন।

হিন্দুধর্মের বিভিন্ন দেবদেবীর মধ্যে প্রধান হলেন সৌর দেবতা (Surya Deb)। তিনি কশ্যপ ও অদিতির পুত্র। আবার কোনো কোনো পুরাণ মতে তিনি ইন্দ্রের পুত্র। কোন দেবতাকে খালি চোখে সামনা সামনি দেখা না গেলেও কিন্তু সূর্যদেবকে আমরা আকাশের দিকে তাকালেই দেখাতে পাই। সপ্তাহের সাতদিনের মধ্যে রবিবারটা রাখা থাকে সূর্য দেবতার জন্য।
পুরাণ মতে শোনা যায়, শনিদেবের (Saturn) পিতা হলেন এই সূর্যদেব (Surya) । এবং এর সাথে তিনি যোমরাজ এবং যমুনা দেবীর পিতাও। সূর্যলোকে অবস্থানরত এই সূর্যদেবকেও কিন্তু একবার শনিদেব তাঁর বক্রদৃষ্টি দিয়েছিলেন। তবে হিন্দু মতে সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির দেবতা হিসাবে সূর্যদেবকে মান্য করা হয়। আবার সমস্ত শক্তির উৎস বলেও মনে করা হয় সূর্যদেবকে। (Spiritual)

সূর্যদেবের ধ্যান মন্ত্র হল- ”ওঁ রক্তাম্বুজাসনমশেষগুণৈসিন্ধুং, ভানুং সমস্তজগতামধিপং ভজামি।
পদ্মদ্বয়াভয়বরান্ দধতং করাব্জৈ- র্মাণিক্যমৌলিমরুণাঙ্গরুচিং ত্রিনেত্রম্।।”

শুক্ল পক্ষের রবিবারে (Sunday) সূর্যদেবের মন্ত্র জপ শুরু করতে হয়। মন্ত্র জপ করার সময় লাল আসনে বসা উচিত। পূজোর সময় ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালাতে হয়। তবে প্রথমে গুরু, গণেশ, বিষ্ণু, শিবের উপাসনা করার পরেই শুরু করুন সূর্য মন্ত্র জপ করতে হয়। এই ভাবে সূর্দেবের উপাসনা করলে দেবতা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন। স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্রে সূর্যদেবের আরাধনা করা হয়। এক মনে নিষ্ঠা ভরে সূর্যদেবকে ডাকলে, দেবতা তাঁর ভক্তের ডাক শোনেন। এবং শারীরিক ও মানসিক কষ্ট থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

তবে এই সূর্য পূজার ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে। যেমন-

কখনই স্নান না সেরে সূর্য পূজা করা উচিত নয়। সর্বদা তামার পাত্রেই সূর্য পূজা করা উচিত। পূজার অর্ঘ্যদানের জলে কোনরূপ চিনি বা মিষ্টি জাতীয় জিনিস দেওয়া যাবে না। এর পাশাপাশি এই পবিত্র জল যাতে এক ফোঁটাও পায়ে না পড়ে, সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্ঘ্যদানের সময় সূর্যদেব মেঘের আড়ালে চলে গেলেও, অর্ঘ্যদানে বিরত হওয়া যাবে না।

সূর্ষ প্রণাম মন্ত্র

ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম 
ধান্তারীং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্


সূর্য বৈদিক মন্ত্র

ওং আকর্ষেণ রজসা বর্তমানো
নিবেশায়নামর্তন মার্তণ্ড
হিরণ্যায়েন সবিতা রথে
দেব যাত্রী ভুবানানি পশ্যন

সূর্য প্রার্থনা মন্ত্রের উপকারিতা সূর্য প্রার্থনা মন্ত্র মানসিক শান্তির জন্য খুবই উপকারী। এই মন্ত্রের ক্রমাগত ব্যবহারে, মানবদেহে ইতিবাচক শক্তি সঞ্চারিত হয়। সূর্য প্রার্থনা মন্ত্র দ্বারা যেকোনো কাজে আসা বাধা দূর হয়। এই মন্ত্র জপ ও পূজা করার সময়ও গায়ত্রী মন্ত্র ব্যবহার করা হয়। মানব জীবনে সম্মান ও খ্যাতি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন সূর্যদেব। সূর্য প্রার্থনা মন্ত্র সম্মান এবং খ্যাতি নিয়ে আসে। কোনো ব্যক্তির জন্মকুণ্ডলীতে সূর্য দুর্বল অবস্থায় থাকলে এই মন্ত্রটি উচ্চারণ করলে সূর্য শুভ ও শক্তিশালী হয়। যার কারণে সূর্যের কৃপা তাড়াতাড়ি হয়। সূর্য দেবতার আশীর্বাদে একটি সুস্থ জীবন অর্জিত হয়। ভগবান সূর্যদেবের কৃপায় মানুষ বড় বড় রোগ থেকে মুক্ত হয়। শারীরিক কষ্ট থেকে মুক্তি পেয়ে শান্তিতে জীবনযাপন করেন।

কীভাবে সূর্য প্রার্থনা মন্ত্র জপ করবেন?

এই প্রার্থনা মন্ত্রটি সাত হাজার বার জপ করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। শুক্লপক্ষে আগামী রবিবার এটি জপ করলে সাধারণ দিনের তুলনায় বহুগুণ বেশি ফল পাওয়া যায়। সূর্য গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করার আগেও এই মন্ত্রটি জপ করা সর্বোত্তম বলে মনে করা হয়। সকালে ব্রহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে সূর্য প্রার্থনা মন্ত্র এবং সূর্য গায়ত্রী মন্ত্র জপ করতে হবে। এই মন্ত্রের পাশাপাশি সূর্য গায়ত্রী মন্ত্রের জ্ঞান থাকাও খুব উপকারী। এর ফলে সূর্য দেবতা শীঘ্রই প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের আশীর্বাদ করেন।

সূর্যের জন্য তান্ত্রিক মন্ত্র

ওং ঘৃণিঃ সূর্যাদিত্তম
ওং ঘৃণিঃ সূর্য আদিত্য শ্রী
ওং হ্রাং হ্রীং হ্রৌং সঃ সূর্যাং নমঃ
ওং হ্রীং হ্রীং সূর্যায় নমঃ

সূর্য নাম মন্ত্র

ওং ঘৃণি সূর্যায় নমঃ

সূর্য গায়ত্রী মন্ত্র

ওং আদিত্য ভিদ্মহে সহস্র কিরণায়
ধিমাহি তন্নো সূর্য প্রচোদয়াৎ

জীবনের সাফল্য মন্ত্র

ওং নমো শ্রী সূর্যায়া সহস্র কিরণায়
সিদ্ধি সিদ্ধি কারায়া মন বঞ্চিত পুরায়া
কষ্টম চুরায়াম ওং হ্রীং সূর্যায়া নমো নমাহা

সূর্য অর্ঘ্য মন্ত্র

“ওম অহি সূর্য সাহা শ্রানশান তেজোরশে জগ তপ্তে, অনুকাম্পায়মা ভক্ত্য, গৃহার্ঘ্যম নমো স্তুতে।”

সূর্য অর্ঘ্যের উপকারিতা ও নিয়ম

সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করলে শক্তি বৃদ্ধি পায়। এর পাশাপাশি, দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে সূর্যকে জল অর্পণ করা খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস অনুসারে, সকালে সূর্য স্নিগ্ধ অবস্থায় থাকে এবং জল নিবেদনের সময় জলের মাঝখানে সূর্যের দিকে তাকালে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

সূর্যকে জল দেওয়ার জন্য একটি তামার পাত্র ব্যবহার করা উচিত। সেই সঙ্গে তামার এই পাত্রটিকে মস্তিষ্কের উপরে রেখে অর্ঘ্য নিবেদন করতে হবে। এই জলেতে একটু চিনি বা মিছরি মেশাতে হবে। এর সঙ্গে মঙ্গলের প্রতিকারও হয় একই সঙ্গে। জলের মধ্যে কুমকুম ও হলুদ মিশিয়ে খাওয়াও ভালো বলে মনে করা হয়। ধীরে ধীরে জল ঢেলে একটি পাতলা স্রোত তৈরি করা হয়। সূর্য দেবতার কাছে লাল ফুল খুবই প্রিয়। তাই পূজার সময় অঘ্যায়ের সাথে সাথে ব্যবহার করা উচিত।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *