খবরে আমরাঃ কয়েক যুগ ধরে চলে আসা বঞ্চনার শিকার রাজ্যের সংস্কৃত টোলগুলি। এবার সেই অন্যায়ের অবশানের ঈঙ্গিত দিল রাজ্য বিধানসভা। লুপ্তপ্রায় সংস্কৃত ভাষা আর সেই ভাষার উপর নির্ভর করে যাঁরা এখনও টোলে পড়াশোনা চালিয়ে যান, তাদের জন্য অন্তত সুখবর বলাই যায়। সেই টোল আজ কোথাও গোডাউন, কোথাও জরাজীর্ণ ভেঙে পড়া নিদর্শন হয়ে রয়েছে।
আদি ভাষা সংস্কৃতকে গুরুত্ব দিয়ে টোলগুলিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনতে চায় রাজ্য সরকার। বিধানসভায় এমনই জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, “আমরা সংস্কৃত ভাষার প্রসারে মান্যতা দিয়ে টোলগুলিকে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনার পরিকল্পনা করেছি।”
কোচবিহার মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ সংস্কৃত মহাবিদ্যালয় বাম আমলে বন্ধ হয়ে যায়। এই কলেজটি এখন গোডাউন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস এখন সমাজবিরোধীদের আখড়া হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বাম আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলেজটি ফের চালুর আবেদন জানান কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে।
বিধানসভায় ব্রাত্যবাবু জানান, প্রাচীন সংস্কৃত প্রতিষ্ঠানগুলি টোল নামে পরিচিত। নবদ্বীপে সংস্কৃত কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ে উঠছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোচবিহার–সহ রাজ্যের অন্য টোলগুলিকেও আনার পরিকল্পনা আছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। অন্য প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বেসরকারি স্কুলগুলি নিয়ে একটি কমিশন গড়ারও পরিকল্পনা চলছে। সেই কমিশনের শীর্ষে থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। এই বিষয়ে বিধানসভায় বিল আনা হবে বলেও তিনি জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বেসরকারি স্কুল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও উদ্বিগ্ন। তবে সরকার নীতিগত ভাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর হস্তক্ষেপ করতে চায় না। কিন্তু মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে চেয়ারম্যান করে কমিশন তৈরির ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।”
বাঘমুন্ডিতে সাঁওতালি স্কুল গড়ার আবেদন আসে ব্রাত্যবাবুর কাছে। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ভাষার অস্মিতার জন্য আমাদের সরকার খুব সংবেদনশীল। সাঁওতালি ভাষাভাষীদের এলাকায় অনেক স্কুল খোলা হচ্ছে। পুরুলিয়ায় খুব শীঘ্রই সাঁওতালি স্কুল খোলা হবে।”