কলকাতা: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত পুতিনের দেশ। রোজ ধ্বংস, মৃত্যু, অশ্রুপাত। গোটা বিশ্ব ধিক্কার জানাচ্ছে মস্কোকে। বিভিন্ন দেশ থেকে উঠছে নিন্দার ঝড়। সল্টলেক করুণাময়ী সেন্ট্রাল পার্কের বুকে যে ‘অস্থায়ী রাশিয়া’, সেও কার্যত কোণঠাসা। বইমেলার মাঠে বেশ ফাঁকা রাশিয়ার স্টল। তা হলে কি প্রতিবাদে অনেকে এই স্টল এড়িয়ে যাচ্ছেন? উঠছে প্রশ্ন। যদিও এমনটা মানতে রাজি নন গোর্কি সদনের অনুষ্ঠান আধিকারিক এবং রাশিয়া বিশেষজ্ঞ গৌতম ঘোষ।
গৌতম ঘোষের কথায়, “যে রকম অন্যান্য স্টলেও লোক যাচ্ছে, রাশিয়ার স্টলেও তেমন লোক আসছে। একই লোক তো বিভিন্ন স্টলে ঢুকছে। এখানে তেমন কোনও প্রতিবাদী মানুষকে আমি দেখছি না, যে মনে করছে রাশিয়ার স্টলে সে ঢুকবে না, যুদ্ধ চলছে বলে। কেউই চায় না পৃথিবীর কোনও সমস্যা যুদ্ধের মাধ্যমে সমাধান হোক। রাশিয়ার যারা এখানে উপস্থিত রয়েছেন তাঁরাও সেটা চান না।”
বইমেলায় রাশিয়ার স্টল পরিচালনায় রয়েছেন রাশিয়ানরাই। তাঁদের দেশের সেরা বইয়ের সম্ভার দিয়ে সাজিয়েছেন নিজেদের বিপণীকে। টলস্টয়, দস্তয়েভস্কি কয়েকদিনের জন্য কলকাতার অতিথি। গৌতম ঘোষের কথায়, “এখানে রাশিয়ানরা তাঁদের দেশের সেরা সাহিত্যিকদের সম্ভার যতটা পেরেছেন নিয়ে এসেছেন। অনেক বই এনেছেন। জায়গা অনেকটাই কম, তাই অনেক বই সাজিয়ে রাখতে পারেননি। গতবারের তুলনায় এবার জায়গাটা কমেছে। গতবার তো রাশিয়াই ছিল থিম প্যাভেলিয়ন।”
যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থাকবেই। বই তার অন্যতম হাতিয়ার। রুশ সাহিত্যের সঙ্গে বাঙালির কিসের আড়ি? মস্কোকে পুতিনের নামে কে চেনে, কলকাতা চেনে পুশকিন-গোর্কির নামে। আর সাহিত্য নিয়ে যুদ্ধ হয় না, সাহিত্যই তো যে কোনও অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর হাতিয়ার। তাই কলকাতা বইমেলায় রাশিয়ার স্টলে ভিড় থাকুক বা না থাকুক, ভ্লাদিমির নবকভ বা আলেকজান্ডার পুশকিনের সঙ্গে বইপ্রেমীদের বিরোধ থাকতেই পারে না!