কলকাতা: নিঃসন্দেহে বেনজির উদ্যোগ। মূল ধারার রাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে সর্বভারতীয় স্তরে সম্ভবত এই প্রথম। তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি এবং সমকামী মানুষদের নিয়ে পৃথক গণ শাখা সংগঠন গড়ে তোলার প্রস্তাব পাশ করল কলকাতা সিপিআইএম। সিপিআইএম কলকাতা জেলার ২৫তম সম্মেলনে পাশ হল এই প্রস্তাব। এলজিবিটি কমিউনিটি সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন এসএফআই থেকে সিপিআইএমের সঙ্গে যুক্ত হওয়া অপ্রতিম রায়। প্রস্তাব উত্থাপন করেন কনীনিকা ঘোষ বসু। মূল ধারার রাজনৈতিক দল হিসেবে দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রস্তাব পাশ এই প্রথম। যা নতুন পথের সন্ধান দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
হাওড়ার বাসিন্দা অপ্রতিম রায় আলিপুর ক্যাম্পাসে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সিপিআইএমের সঙ্গে যুক্ত হন। অন্যদিকে ২০১৩ সালে জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি বা জেএনইউয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে গৌরব ঘোষকে প্রার্থী করেছিল সিপিআইএম। পরে গৌরব জানিয়েছিলেন, তিনি সমকামী। পরবর্তীতে ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সম্মেলনেও তৃতীয় লিঙ্গ, সমকামী, রূপান্তরকামী, উভকামী— প্রশ্নে প্রান্তিক মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ মৌলিক অধিকারের বিষয়ে পৃথক বাজেটের দাবি নিয়ে প্রস্তাব পাশ হয়েছিল। কিন্তু সিপিআইএমের মঞ্চে এই প্রথমবার এমন উদ্যোগ বলেই মত রাজনীতির কারবারীদের।
সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির ২৫তম সম্মেলন শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। এই সম্মেলনে এলজিবিটি সংক্রান্ত প্রস্তাব তোলা হয়। এ বিষয়ে সম্মেলনে আলোচনা করেন এলজিবি কমিউনিটিরই অপ্রতিম রায়। সম্মেলনে প্রস্তাবও পাশ হয়। অর্থাৎ তৃতীয় লিঙ্গ, সমকামী, রূপান্তরকামী, উভকামীদের জন্য শাখা সংগঠনের প্রস্তাব পাশ করল সিপিএম। ভারতবর্ষের ইতিহাসে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। পুরুষ কিংবা মহিলা হলে তাঁর ‘আইডেনটিটি’ নিয়ে সমাজ কোনও প্রশ্ন তোলে না। কিন্তু যে জন থাকে মাঝখানে, তাকে নিয়ে সমাজের অনেক ট্যাবু। সিপিএম কর্মীদের দাবি, তাঁদের দল এই ট্যাবু ভাঙার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই লড়ছে। এই প্রস্তাব পাশ তারই প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করছে অনেকে।