খবরে আমরাঃ দেউচা-পাঁচামীর জন্য জমি অদিগ্রহণে এক নীতি আর রাজ্যের অন্য এলাকার অধিগ্রহণে অন্য নীতি কেন? এবার জমি অধিগ্রহণে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে রাজ্যের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের জমির মালিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, দেউচা-পাচামি এলাকার জমিদাতার যদি বাড়তি ক্ষতিপূরণ ও সুবিধা পায়, তবে বাকিদের বঞ্চনা কেন?
ভারত – বাংলাদেশ সীমান্তের ওই এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ার জন্য প্রায় পাঁচ বছর আগে থেকে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু তাঁদের জন্য যে দাম ও ক্ষতিপূরণের শর্ত দেওয়া হয়েছে, তাতে আপত্তি থাকায় তাদের অনেকেই এখনও জমি দেননি। যদিও ওই এলাকায় কিছু জমি অধিগ্রহণ হয়েছে।
অন্যদিকে, এখই সময়ে কয়লা খনির জন্য জমি গ্রহণে রাজ্য দেউচা-পাচামিতে জমি অধিগ্রহণের জন্য একেবারে নতুন নীতি নিয়েছে বলে অভিযোগ। সেখানে দাম ও ক্ষতিপূরনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ পৃথক ব্যবস্থা। এখানে জমি দিলে মিলবে চাকরিও। মামলাকারিদের প্রশ্ন, একই সরকার সরকারি কাজে জমি অধিগ্রহণের জন্য একই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কি করে পৃথক পৃথক নীতি নিতে পারে? আগামী ১২ এপ্রিল বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এজলাসে আবেদনটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষ্ণগঞ্জে কাঁটাতারের বেড়ার জন্য প্রতি শতক ৫৬ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করে রাজ্য। একইসঙ্গে দামের ৫০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ বা সলেশিয়াম দেওয়ার মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণগঞ্জ থানার বিজয়পুর এলাকার শশধর বিশ্বাস সহ তিনজন জমির মালিক রাজ্যের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মামলা করেন। মামলাকারিদের আইনজীবী অরিন্দম দাসের যুক্তি, জমি অধিগ্রহণে ২০১৩ সালের কেন্দ্রের নতুন আইন এসেছে। পরের জানুয়ারি থেকে সেই আইন কার্যকর হয়েছে। যদিও তার কতটা এই রাজ্য কার্যকর করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ২০১৬ সালে রাজ্য নিজে জমি অধিগ্রহণে পৃথক নীতি ঘোষণা করে। কিন্তু সেখানেও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এখন জমি দিলে দেউচায় যদি সরকার চাকরি দেয়, অন্য সুযোগ সুবিধা বেশি দেয়, তাহলে রাজ্যের অন্য এলাকায় দ্বিচারিতা কেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে মামলায়।
মামলার মূল দাবি, ২০১৩ সালের কেন্দ্রের নতুন অধিগ্রহণ আইন পুরোপুরি কার্যকর করা হোক। একইসঙ্গে রাজ্যের ২০১৬ সালের জমি অধিগ্রহণ নীতি বাতিল করার নির্দেশ দিক আদালত।