প্রথমে তর্কাতর্কি, পরে হাতাহাতি! এমনকি ভুয়ো ভোটার পর্যন্ত ধরা পড়ল চিকিৎসকদের নির্বাচনে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে এই ছবি কার্যত নজিরবিহীন। চিকিৎসকদের মধ্যে বচসার যে ছবি চোখে পড়েছে, তা হার মানাবে পুরভোটকেও। মূলত নির্মল মাজি গোষ্ঠী ও তার বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যেই সমস্যা। আর তার জেরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশ আসে সামাল দিতে। তবে চিকিৎসকদের নির্বাচন ঘিরে এমন পরিস্থিতি দেখে অবাক পুলিশও। ধুন্ধুমার পরিস্থিতির জেরে বন্ধ করে দিতে হয় লেনিন সরণি।
শাসক দল সমর্থিত দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই সমস্যা বলে জানা গিয়েছে। এমনকি শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেন ভোট দিতে এসে প্রকাশ্যে নির্মল মাজির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন বলেও জানা গিয়েছে।
শনিবার সকালে ভোট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চিকিৎসকদের সেই নির্বাচনে কখনও উঠল বহিরাগতদের উপস্থিতির অভিযোগ, কখনও এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ, কখনও ভুয়ো ভোটারও ধরা পড়ল। অভিযোগ, আইএমএ-র পরিচয় পত্র নিয়ে মেডিক্যাল পড়ুয়া ভোট দিতে গিয়েছিল। এক পক্ষের দাবি, চিকিৎসক হলে তবেই আইএমএ-র সদস্য হওয়া যায়, অথচ এ দিন দেখা গিয়েছে, অনেক পড়ুয়াই ভোট দিতে এসেছিল। জাল আই কার্ড ধরিয়ে পড়ুয়াদের আনা হয়েছে বলে অভিযোগ।
বেলা বাড়তেই দু পক্ষের হাতাহাতির জেরে চড় পর্যন্ত মারার ঘটনা ঘটে। প্রশান্ত ভট্টাচার্য, অনির্বাণ দলুইয়ের শিবির ঘনিষ্ঠ পার্থপ্রতিম মণ্ডলকে গিয়ে চড় মারেন নির্মল মাজি ঘনিষ্ঠ অলকানন্দা সরকার। অলকানন্দা সরকার, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন। ক্যামেরার সামনে চড় মারার কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। তবে, নির্মল মাজি দাবি করেন, তিনি চড় মারতে দেখেননি কখনও। তাঁর দাবি, যাঁকে চড় মারা হয়েছে তিনি বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেছেন এক মহিলাকে। সেই মহিলাই এ দিন চড় মেরেছে।
চিকিৎসক তথা শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেন আগেই দাবি করেন, যারা হেরে যাবে তারাই ভয় পাচ্ছে। নাম না করে তিনি কটাক্ষ করেন নির্মল মাজিকে। পরে শান্তনু সেন দাবি করেন, মোটর পার্টসের একজন দোকানদারকে ভোটার সাজিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। চিকিৎসক নির্বাচনে এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, পরিস্থিতির জন্যই একজন অবজারভার পাঠাতে হয়েছিল, কিন্তু, তাঁকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।