রাজ্যে ইদানিং কালে যখনি কোনো আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সামনে এসেছে মক্ষীরানী। সারদা মামলায় দেবযানী কিংবা রসে ভ্যালি। মূল অভিযুক্তদের পেছনে থেকে কাজ করে গেছেন এই মক্ষীরানিরা।
যেমন অর্পিতা মুখার্জী। পার্থ চ্যাটার্জীর আড়ালে অভিযোগ নিয়োগ দুর্নীতির কলকাঠি নেড়ে গেছেন তিনি। তাঁর হাতেই থেকে গেছে অর্থের লেনদেনের তথ্য। ইডি তল্লাশিতে বিপুল অর্থের হদিস সেই তথ্য প্রমান করেছে। পার্থ মন্ত্রী হিসাবে কাজ করলেও তাঁর পিছনে থেকে দুর্নীতির মাথা থেকে পরিচালনা করেছেন এই অর্পিতা।
কে এই অর্পিতা ? এই মহিলার নাম সামনে এসে পড়ায় ফের শোরগোল পরে গেছে।
টলিউডের (Tollywood)সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, বাংলার পাশাপাশি তামিল ও ওড়িয়া সিনেমায় অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেছেন অর্পিতা। অবশ্য প্রসেনজিৎ বা জিৎ-স্বস্তিকার ছবিতে সহ-অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করে যতটা না পরিচিতি পেয়েছেন তিনি, তার চেয়ে এদিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নগদ টাকার পাহাড় উদ্ধার হওয়ায় তাঁকে চিনলেন আমজনতা। ইডি সূত্রে খবর, নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজোর সূত্র ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় অর্পিতার। এমনকী, এই পুজোর থিম সঙের অ্যালবামেও বিতর্কিত এই অভিনেত্রীর ছবি ছিল বলে দাবি ইডির। প্রাথমিক জেরার পর ইডির দাবি, নগদ ২০ কোটির পাশাপাশি কলকাতা এবং জেলায় অর্পিতার নামে অনেক সম্পত্তির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
২০১১ সালে ‘বিদেহীর খোঁজে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক একটি সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। সে বছরই অর্পিতার সঙ্গে পরিচয় হয় তৎকালীন শিল্পমন্ত্রীর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তারপর ধীরে ধীরে মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। ‘চিন্নামা লাভ’ অর্থাৎ ‘মাসির ভালবাসা’ নামে একটি তামিল সিনেমায় ২০১৭ সালে অভিনয় করেন অর্পিতা। পাশাপাশি বেশ কিছু ওড়িয়া ছবিতেও অভিনয় করেন।
তার আগে জিৎ-স্বস্তিকা অভিনীত ‘পার্টনার’ এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ‘মামা ভাগ্নে’ ছবিতেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছেন শিল্পমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এই অভিনেত্রী। টলিউডের আরেক পরিচিত ছবি ‘জোর যার মুল্লুক তার’ শীর্ষক ছবির পাশাপাশি বেশ কিছু পণ্যের মডেলিংয়েও দেখা গিয়েছে বর্তমানে বছর আঠাশ বয়সের এই বিতর্কিত অভিনেত্রীর ছবি।
টালিগঞ্জ (Tollyganj) করুণাময়ীর অভিজাত বহুতল আবাসন ডায়মন্ড আবাসনে মুখোমুখি দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে অর্পিতার। দিন কয়েক আগে হাই কোর্টের এক বিচারপতির মন্তব্যেও এই ফ্ল্যাটের কথা উঠে এসেছিল। এখন দেখার ইডির দাবি মেনে আগামী কয়েকদিনে কলকাতার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় অর্পিতার নামে যে সমস্ত সম্পত্তি রয়েছে সেখানে তল্লাশি শুরু হয় কি না?