২০০ বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার মুড়ি মেলা। জানা যায়, দ্বারকেশ্বর নদীর জল ছিটিয়ে মুড়ি খাওয়ার এই রীতি ২০০ বছরের প্রাচীন। এবছরও দ্বারকেশ্বরের পাড়ে বসে মুড়িতে মাতলেন সকলে। কেউ মুড়ি মাখার জন্য গামছা, চাদর পাতেন। কেউ আবার থলে থেকে বের করেন তেল, চানাচুর, ধনেপাতা, শশা, লঙ্কা, টমেটো। দ্বারকেশ্বরের চরে বালিতে গর্ত করে জল সংগ্রহ করে তা ছিটিয়ে রসিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মুড়ি খান সকলে। এ এক ঐতিহাসিক ঐতিহ্য।
এ বছরও অন্তত এক লক্ষ মানুষ এই মুড়ি মেলায় যুক্ত হয়েছিলেন। কিংবদন্তি আছে, কেঞ্জাকুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদের পাড়েই রয়েছে সঞ্জীবনী মাতার আশ্রম। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে হরিনাম সংকীর্তন শুরু হয় এখানে। শেষ হয় মাঘের ৪ তারিখ। আগে দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ সংকীর্তন শুনতে হাজির হতেন আশ্রমে। কথিত আছে, সে সময় কেঞ্জাকুড়া ছিল ঘন বনজঙ্গলে ঢাকা। হরিনাম শুনে সন্ধ্যা গড়িয়ে যেত। তারপর জঙ্গল পার করার কেউ সাহস দেখাতেন না। পরের দিন সকালে সঙ্গে আনা শুকনো মুড়ি দ্বারকেশ্বরের জলে ভিজিয়ে তা খেয়ে বাড়িতে ফিরতেন তাঁরা। মেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়ের কথায়,সেই সময় আগত কয়েকজন রুগ্ন মানুষ এই দ্বারকেশ্বর নদের চরে মুড়ি মেলায় মুড়ি খেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই থেকেই চলেছে এই মুড়ি মেলা।