খবরে আমরাঃ প্রেম একবার এসেছিল নীরবে, আমারই দুযার প্রান্তে….সে তো হায়, মৃদু বায়…পারিনি তো তা জানতে……
বলুন তো বয়স কি কখনও প্রেমে বাধা হতে পারে। যদি জীবন সায়ান্নে পরিবার-আত্মীয় স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন দুই প্রবীণ এক হতে চান, তবে বাধা কোথায়. সেই বাধা অবশ্য মানেনি নদিয়ার সুব্রত সেনগুপ্ত ও অপর্ণা চক্রবর্তী। শুধু প্রেমই নয়, বৃদ্ধাশ্রমে থেকেই সাত পাকে বাঁধা পড়লেন তাঁরা। ৭০ বছর বয়সে আইন মেনে রেজিস্ট্রি বিয়ের পর স্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন বৃদ্ধ সুব্রত সেনগুপ্ত। স্বামীর হাত ধরে আনন্দে আপ্লুত ৬৫ বছরের অপর্ণা চক্রবর্তী। এ যেন ‘বেলাশেষ’ শুরু হল এক নতুন অধ্যায়!
নদিয়ার চাকদহের লালপুরের বাসিন্দা সুব্রত সেনগুপ্ত। তিনি রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তাঁর পরিবারে মা, দুই ভাই ও তাঁদের স্ত্রী-সন্তানরা আছে। তিনি এতদিন অবিবাহিত ছিলেন। পারিবারিক সমস্যার কারণে ২০১৯ সালের শুরুতে রানাঘাটের পূর্ণনগর জগদীশ মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমের শেষ জীবন কাটাতে বাড়ি ছেড়েছেন সুব্রতবাবু। বৃদ্ধাশ্রমের প্রায় পাঁচ বছরের বাসিন্দা ৬৫ বছরের অপর্ণা চক্রবর্তী। তাঁর বাড়ি রাণাঘাটের আইসতলায়। তিনিও অবিবাহিতা ছিলেন। প্রায় ৩০ বছর কলকাতা বেলেঘাটায় একজন অধ্যাপকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেছেন তিনি। শেষ জীবনে বাপের বাড়ির দরজা তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
বৃদ্ধাশ্রমেই দু’জনের প্রথম দেখা। উভয় উভয়ের সহমর্মী হতে হতেই প্রেমের সম্পর্কে বাঁধা পড়তে থাকেন। শেষমেশ অপর্ণাদেবীকে প্রেম নিবেদন করেন সুব্রতবাবু। প্রথমে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বৃদ্ধা। এরপর ২০২০ সালের মার্চ মাসে বৃদ্ধাশ্রম ছেড়ে ওই এলাকাতেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন সুব্রতবাবু। কিন্তু দিন ১০-১২ আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দেখভালের জন্য এগিয়ে আসেন বৃদ্ধা। আর এবারই তাঁকে প্রেমের জালে ধরা দিতে হয়। তাঁরা নতুন করে পথচলার সিদ্ধান্ত নেন। অভিভাবক হিসেবে তাঁরা বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণধার গৌরহরি সরকারকে বিষয়টি জানান। তারপরই চার হাত এক হয়।