কালী মন্দির ও কালীপুজো নিয়ে বাংলাদেশে আছে অজস্র মিথ – যা শুনলে চমকে যেতে হয়। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে জব চার্ণক যখন কলকাতায় তার জাহাজ নোঙড় করেন, তখন কলকাতা ছিল গভীর জঙ্গলে ঢাকা। গঙ্গার পূর্বদিকে ছিল কিছু কৃষক ও জেলেদের বাস। আর ওই জঙ্গলেই গোপনে থাকতো ডাকাতের দল। এই সব নিয়েই গড়ে উঠেছে কলকাতার প্রাচীন ইতিহাস। গঙ্গার পূর্ব দিকে বর্তমান বড়োবাজার পোস্তা অঞ্চলে কমবেশি ৫০০ বছরের সাক্ষী বহন করছে একটি কালী মন্দির – যার নাম ‘পুঁটে কালী।’ কথিত আছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে হুগলীর বাসিন্দা কালী ভক্ত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আকবরের আমলে এই গোল পাতার মন্দিরেই সাধনায় বসতেন ভক্ত মানিক।
এই মন্দিরে অধিষ্ঠাত্রী দেবি কালীর (Maa Kali) নাম হঠাৎ করে ‘পুঁটে কালী’ (pute Kali) কেন হলো, তা নিয়ে ভক্তদের মধ্যে নানা প্রশ্ন। তবে একাধিক গবেষণামূলক বই থেকে জানা যায় দুটি তথ্য। প্রথম, এই মন্দিরের দেবি প্রতিমা খুবই ক্ষুদ্র, তাই তাকে ‘পুঁটে কালী’ বলে ডাকা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় একটি মত আছে, যা বেশ রোমাঞ্চকর। কিংবদন্তি হলো – মানিকচন্দ্রের বংশধর খেলারাম একদিন এই মন্দিরে হোম করছিলেন। সেই সময় গঙ্গার (River Ganges) খাল থেকে একটি পুঁটি মাছ হোমের আগুনে লাফিয়ে পড়ে। অর্ধদগ্ধ মাছটিকে (Ganga) খেলারাম জলে ভাসিয়ে দেন। এর পরই সেই মাছটি নাকি বেঁচে ওঠে! সেই থেকেই এই দেবীর নাম হয় ‘পুঁটি কালী’। পরে সেই ‘পুঁটি’ নামটিই লোকমুখে ‘পুঁটে’ হয়ে যায়। সে যাই হোক। মানুষের বিশ্বাস, (Spiritual) এই পুঁটে কালী খুবই জাগ্রত। কালীপুজোর দিন রাতে এখানে হাজার ভক্তের সমাগম ঘটেছিল।