www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 20, 2024 11:07 am
tara

আগামী ১৮ মে (বাংলায় ৩ জ্যৈষ্ঠ), বৃহস্পতিবার, এবারের ফলহারিণী কালী পুজোর দিন পড়েছে। ১৮ মে, রা ৯/১৩/৩৬ মিনিট থেকে ১৯ মে, রা ৮/৪৩/২৩ মিনিট পর্যন্ত থাকবে অমাবস্যা তিথি।

জৈষ্ঠ্য মাসের অমাবস্যা তিথিতে হয় ফলহারিণী কালী পুজো। হিন্দুশাস্ত্রমতে বলা হয়ে থাকে, মোক্ষফল প্রাপ্তির জন্য এই অমাবস্যার বিশেষ মাহাত্ম্য আছে৷ যিনি আমাদের সমস্ত খারাপ কর্মফল হরণ করেন এবং মুক্তি দান করেন তিনিই ফলহারিণী কালী। আমাদের সমস্ত বিপদ, দৈন্য, ব্যাধি এবং সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করে তিনি ঐশ্বর্য্য, আরোগ্য, বল, পুষ্টি, ও গৌরব প্রদান করেন।

বলা হয় তবে জীবকে যা তিনি দেন তা তাদের কর্মফল অনুসারেই দেন। বিশ্বাস, ফলহারিণী কালীপুজো করলে পূজারীর ও ভক্তের কর্ম ও অর্থভাগ্যে উন্নতি ঘটে। সাংসারিক নানান বাধা দূর হয়ে, জীবনে সুখশান্তি লাভ হয়। অনেকেই এ দিন মনস্কামনা পূর্ণ করতে মা কালীকে ফল নিবেদন করেন।

বলা হয়, মানত করা এই ফল ইচ্ছে পূরণ না হওয়া পর্যন্ত খাওয়া নিষেধ। ইচ্ছে পূরণের পর সেই বিশেষ ফলটি গঙ্গায় ভাসিয়ে পুজোর উদযাপনও করার পরামর্শ দেন মুনিঋষিরা। জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে দেবী কালী (Maa Kali) পূজিতা হন ‘ফলহারিণী কালী’ (Falharini Amabasya 2023) নামে।

মা তারার (Maa Tara) বিশেষ রূপ ফলাহারিনী দেবী। বিশ্বাস করা হয়, এই তিথিতে দেবীর পুজো-আরাধনায় অশুভ কর্মফল নাশ হয় এবং শুভ ফল প্রাপ্ত হয়। বলা হয়, এ দিন শ্রীরামকৃষ্ণ শ্রীমা সারদাকে দশ মহাবিদ্যার অন্যতম দেবী ষোড়শী অর্থাৎ এই বিশেষ রূপে পুজো করেছিলেন (Spiritual)।

বাঙালি জীবনে ফলহারিণী কালী পুজোর তাৎপর্য লুকিয়ে রয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনে। রামকৃষ্ণ এই দিনেই স্ত্রী সারদা দেবীকে পুজো করেছিলেন জগৎ কল্যাণের জন্য। ১২৮০ বঙ্গাব্দে জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিনি দক্ষিণেশ্বরে (Dakshineswar) আদ্যাশক্তি (Adya Shakti) সগুণরূপের পুজো করেছিলেন।

তিনি ফলহারিণী কালী পুজোর দিন শ্রীমা সারদাকে ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন বলে আজও রামকৃষ্ণমঠ ও আশ্রমে এই পুজো ‘ষোড়শী’ পুজো নামে পরিচিত। শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর মোক্ষপ্রাপ্তির (Spirituality) জন্য এই নিয়মে পুজো করলেও এই দিনটিতে হিন্দু ধর্মাবলাম্বী মানুষ নানাবিধ ফল দিয়ে কালীর পুজো করে থাকেন।

জ্যৈষ্ঠমাসে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল ইত্যাদি নানারকম ফলের মরসুমি ফল পাওয়া যায়। সাধক তাঁর ইষ্টদেবীকে বিভিন্ন ফল দিয়ে প্রসাদ নিবেদন করে থাকেন। শাস্ত্রে বলা হয়, জীবনেয সর্বস্ব। অর্থাৎ একদিকে ফলহারিণী যা সাধকের কর্মফল হরণ করেন। অপর দিকে কর্মফল হরণ করে সাধককে তাঁর অভীষ্টফল, মোক্ষফল প্রদান করেন। মহামারী, অনাবৃষ্টি বা বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে মানুষ রক্ষাকালী পুজো করে।

কার্তিক মাসে দক্ষিণাকালীর পুজোয় সকলের সার্বিক কল্যাণ হয়। আর ফলহারিণী কালীপুজো করলে আমাদের প্রত্যেকের বিদ্যা, কর্ম ও অর্থভাগ্যের উন্নতি ঘটে। প্রেম-প্রণয়ে বাধা দূর হয়। দাম্পত্য সাংসারিক জীবনেও সুখশান্তি লাভ হয়।

ফলহারিণী কালীপুজো নিয়মবিধি পুজোবিধি: জ্যোতিষ মতে এই দিন মনস্কামনা পূরণের জন্য মা কালীর উদ্দেশে নিজের পছন্দের ফল রেখে মনস্কামনা জানাতে হয় এবং  সেই মনস্কামনা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সেই ফলটি অন্য কাউকে দান করতে নেই এবং নিজেকেও সেই ফল খেতে নেই। এক বছরের মধ্যে মনস্কামনা পূরণ হলে সেই ফল গঙ্গায় ভাসিয়ে পরের দিন থেকে তা খাওয়া যেতে পারে।

কী বলা হয়েছে: শব্দকল্পদ্রুমে বলা হয়েছে, জ্যৈষ্ঠ-পঞ্চদশ্যাং বহুফলাদ্যুপহারৈঃ পূজনীয়া’ – অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যায় সাধক নানাবিধ ফলের উপহার সহযোগে দেবীর পুজো করবেন। আবার অন্য একটি বিধান ক্রিয়াকাণ্ড বারিধিতে বলা হয়েছে, জ্যৈষ্ঠ্যে মাসি তথামায়াং সফলং কালিকার্চনম – অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যায় বিশেষভাবে নানাবিধ ফল দিয়ে কালিকাদেবীর পুজো করতে হয়।

এ-প্রসঙ্গে মায়াতন্ত্রের ১৭ পর্বে আরও বলা হচ্ছে, জ্যৈষ্ঠ মাসি অমায়াং বৈ মধ্যরাত্রে মহেশ্বরি। পূজয়েত কালিকাং দেবীং নানাদ্রব্যোপহারকৈঃ ’ অর্থাৎ, জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যা তিথির মহানিশায় সাধক নানা দ্রব্যের উপহার সহযোগে শ্রীশ্রীকালিকাদেবীর জ্যৈষ্ঠ করবেন। এখানে মহানিশা কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে কারণ, ফলহারিণী কালীপূজা গভীর রাত্রে করতে হয়।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *