www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 19, 2024 9:17 pm
akshay tritiya

এই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। পৌরাণিক কাহিনি ও পুরাণ-শাস্ত্র অনুযায়ী, এই দিনই বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম ধরাধামে আবির্ভূত হয়েছিলেন। পাশাপাশি এই দিন মহাভারত রচনার কাজ শুরু করেছিলেন গণেশ ও বেদব‍্যাস। এই দিনেই গঙ্গাদেবীকে মর্তে নিয়ে আসেন মর্ত্যের রাজা ভগীরথ। এই শুভ দিনে মহাদেবের কৃপায় কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল। বিশেষ দিনেই সত‍্য যুগের শেষ হয়ে শুরু হয় ত্রেতা যুগের। দুধ, চাল ও ছোলার ডাল দিয়ে অক্ষয় তৃতীয়ার বিশেষ পদ তৈরি করুন। এই পদ দিয়ে পুজোয় ভোগ নিবেদন করুন। * পুজোর শেষে আরতি করুন এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রসাদ নিবেদন করুন। অক্ষয় তৃতীয়ায় বাড়িতে পুজো করলে দীর্ঘ জীবন, সুস্বাস্থ্য, সম্পদ ও সমৃদ্ধি লাভ করা যায়।

প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে পালিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া। হিন্দুধর্মে অক্ষয় তৃতীয়া একটি পূণ্যতিথি হিসেবে পালন করা হয়। এদিন কোনও শুভ কাজ করলে তার অক্ষয় ফল লাভ করা যায় বলে প্রচলিত বিশ্বাস। এদিন বিয়ে, উপনয়ন, অন্নপ্রাশন, গৃহপ্রবেশ করা অত্যন্ত শুভ। কেনাকাটা করার জন্যও অক্ষয় তৃতীয়া দিনটি বিশেষ ভাবে শুভ। এদিন কিছু কেনাকাটা করলে মা লক্ষ্মীর (Maa Laxmi) আশীর্বাদ পাওয়া যায় বলে প্রচলিত বিশ্বাস। সেই হিসেবে অক্ষয় তৃতীয়া ধনতেরস ও দীপাবলির মতোই একটি শুভ দিন বলে মনে করা হয়।

পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়ায় অনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। জেনে নিন অক্ষয় তৃতীয়া পালন করার পাঁচটি প্রধান কারণ (Spirituality) ।

অক্ষয় তৃতীয়ার তারিখ ও পুজোর সময়সূচী :

তারিখ : ২৩ এপ্রিল, ২০২৩

কোন দিন : রবিবার।

তৃতীয়া তিথি শুরু হবে : ২২ এপ্রিল,

সময় : সকাল ৭টা ৪৯ মিনিট

তৃতীয়া তিথি শেষ কবে হবে : ২৩ এপ্রিল,

সময় : সকাল ৭টা ৪৭ মিনিট

অক্ষয় তৃতীয়ার পুজোর মুহূর্ত :

২৩ এপ্রিল , রবিবার সকাল ৫টা ১০ মিনিট থেকে সকাল ৭টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত।

সময়কাল – মাত্র ২ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট


নতুন যুগের শুরু

অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya) থেকে নতুন যুগের শুরু করা হয়। ভবিষ্যপুরাণ অনুসারে সত্য, ত্রেতা ও কলিযুগের সূচনা হয়। দ্বাপর যুগের অবসান ঘটে অক্ষয় তৃতীয়াতেই। সত্যযুগে নারায়ণ মত্‍স্য, কূর্ম, বরাহ ও নরসিংহ অবতার রূপে ধরাধামে আসেন। ত্রেতাযুগে তিনি বামন অবতার, পরশুরাম অবতার ও রাম অবতার রূপে জন্ম নেন। অধর্মের বিনাশ করে ধর্মের প্রতিষ্ঠা করতে বারবার অবতার-রূপে পৃথিবীতে এসেছেন বিষ্ণু।


গঙ্গার মর্ত্যে আগমন

পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়াতেই স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসেন দেবী গঙ্গা (Maa Ganga)। এদিন থেকে মর্ত্যে প্রবাহিত হতে শুরু করে এই পূণ্যসলিলা নদী। রাজা ভগীরথ তপস্যায় খুশি হয়ে মহাদেবের বরে অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে মর্ত্যে নেমে আসেন গঙ্গা। গঙ্গার জলে স্নান করলে গত সাত জন্মের পাপ ধুয়ে যায় বলে মনে করা হয়।

বদ্রীনারায়ণ ও বাঁকে বিহারীর দর্শন

এদিন থেকেই খুলে যায় চারধামের অন্যতম বদ্রীনাথ মন্দিরের (Badrinarayan Mandir) দরজা। তার সঙ্গে এদিনই মথুরায় বাঁকে বিহারীর দর্শন পাওয়া যায়। সারা বছর পোশাকের আড়ালে ঢাকা থাকেন বাঁকে বিহারী। তাঁর চরণ দর্শন করতে পারলে মৃত্যুর পর স্বর্গে স্থান হয় বলে প্রচলিত বিশ্বাস।



অক্ষয় পাত্র লাভ

পুরাণ মতে দেবী অন্নপূর্ণার (Maa Annapurna) কাছেই এই পৃথিবীর সমস্ত খাদ্য রয়েছে। এদিন খাদ্য দান করলে কোনও খাবারের অভাব হয় না বলে প্রচলিত বিশ্বাস। পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়ায় অক্ষয় পাত্র লাভ করেছিলেন যুধিষ্ঠির। এই কারণে অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই ক্ষেতে বীজ রোপণ করা শুরু করেন কৃষকরা।

মহাভারত রচনার শুরু

মহাভারতকে (Mahavarat) বলা হয় পঞ্চম বেদ। অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই মহর্ষি বেদব্যাস মহাভারত রচনা শুরু করেন। মহাভারতের মধ্যেই রয়েছে শ্রীমদ ভগবত্‍ গীতা। বলা হয়ে থাকে, গীতার অষ্টদশ অধ্যায় যিনি পাঠ করেন, তাঁকে কোনও দুঃখ কষ্ট স্পর্শ করতে পারে না।

পরশুরামের জন্ম

অক্ষয় তৃতীয়াতেই জন্ম হয় বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের (Parasuram)। এদিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পুজো পাঠ করলে তাঁদের আশীর্বাদ লাভ করা যায়।

অক্ষয় তৃতীয়ার পুজোবিধি

অক্ষয় তৃতীয়ায় সব প্রথা মেনে পুজো অর্চনা করলে জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে বলে মনে করা হয়। সেই কারণে অক্ষয় তৃতীয়ায় লক্ষ্মী ও গণেশের আরাধনা করা হয়। জেনে নিন এই করোনা আবহে কী ভাবে ঘরেই অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো করবেন।

* এদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠুন। সম্ভব হলে এদিন নদীতে স্নান করুন। যাঁরা গঙ্গায় স্নান করতে পারবেন, তাঁদের জন্য সবচেয়ে ভালো। নদীতে স্নান করা সম্ভব না হলে ঘরে ভোরবেলা স্নান সেরে নিন।

* স্নান সেরে পুজোর আয়োজন শুরু করুন। লক্ষ্মী ও গণেশের ছবি বা মূর্তি স্থাপন করুন। অনেকে এদিন লক্ষ্মী ও নারায়ণের পুজোও করে থাকেন।

* মূর্তির কপালের চন্দন বাটার তিলক পরিয়ে দিন। এরপর গণেশ, শ্রীবিষ্ণু ও মহালক্ষ্মীর নামে মন্ত্রোচ্চারণ করুন।

* দুধ, চাল ও ছোলার ডাল দিয়ে অক্ষয় তৃতীয়ার বিশেষ পদ তৈরি করুন। এই পদ দিয়ে পুজোয় ভোগ নিবেদন করুন।

* পুজোর শেষে আরতি করুন এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রসাদ নিবেদন করুন।

অক্ষয় তৃতীয়ায় পুজো করার উপকারিতা

অক্ষয় তৃতীয়ায় বাড়িতে পুজো করলে দীর্ঘ জীবন, সুস্বাস্থ্য, সম্পদ ও সমৃদ্ধি লাভ করা যায়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে মনে করা হয় যে বাড়িতে অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো করা হয়, সেই বাড়িতে কখনও আর্থিক সংকট আসে না। ব্যবসার উন্নতির জন্যও অক্ষয় তৃতীয়ায় পুজো করা খুবই ভালো।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *