খবরে আমরাঃ মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানায় এক বন্দির উপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। লক আপে লালগোলা থানায় পুলিশি নির্যাতনের পরেও চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা অবিলম্বে মুর্শিদাবাদ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বি.এম.ও.এইচকে মহম্মদ আজাদ আলি নামে ওই বন্দির শারিরীক পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। মুর্শিদিবাদের এনডিপিএস আদালতের বিচারককে ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে হাইকোর্টকে আবগত করতে হবে।
লালগোলায় একটি ইটভাটার মালিক ওই বন্দির দাবি, লালবাগ আদালত থেকে গত ১১ এপ্রিল একটি পারিবারিক মামলার সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পথে লালগোলা থানার পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়। ওই দিন গভীর রাতে পুলিশ ১৮০০ গ্রাম হেরোইন পাচারের অভিযোগ তুলে এফআইআর করে। ওই রাতেই থানার লক আপে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশের লাঠির উপুর্যপরি আঘাতে তাঁর থাই ও হাঁটুতে চরম আঘাত লাগে। সেই নির্যাতন চলে সারা রাত। এমনকী, নিজের প্রসাবও খেতে বাধ্য করা হয় লক আপে। বর্তমানে তিনি লালগোলা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছেন।
মামলাকারীর আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, ইটভাটা চালানোর জন্য লালগোলা থানার পুলিশ মাসিক হপ্তার দাবি করে। সেই টাকা না দেওয়ায় এর আগে দুবার মাদক পাচারকারী হিসাবে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু দুবারই মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান। ফের পরে আবার একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়। এবারও প্রমাণের অভাবে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক আগাম জামীন মঞ্জুর করেছিলেন। সেই মামলাও না টেকায় লালগোলা থানার পুলিশ নতুন করে এই অভিযোগ এনে নির্যাতন চালিয়েছে।
বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আঘাত থাকলে তার কথা নিষ্চই মেডিক্যাল রিপোর্টে থাকত। তা কিন্তু নেই। আইনজীবী জানান, গ্রেফতারের পরের দিনই কিন্তু মুর্শিদাবাদের এনডিপিএস আদালত তার নির্দেশে, জেল হেফাজতের কথা উল্লেখ করলেও নির্দেশ দিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো বন্দিকে সব রকমের চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে পুলিশকে। এক্ষেত্রে তা দেওয়া হয়নি। এরপরই বিচাপতি বিএমও এইচের মেডিক্যাল পরীক্ষার পাশাপাশি এনডিপিএস আদালতের বিচারকের রিপোর্ট তলব করেছেন। ফের ১২ মে শুনানি হবে।