বৈচিত্রে ভরা এই পৃথিবী। আর সবচেয়ে বৈচিত্র মানুষের মন। সেই বৈচিত্রের কথাই জানান দিলো জয়পুরের ৩০ বছরের যুবতী পূজা সিং। ছোট বেলা থেকেই একাধিক স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য ঝগর-ঝাটি দেখে পূজা ঠিক করে নিয়েছিল সে বিয়ে করবে না। স্বাধীনভাবে একাই বাঁচবেন। (Marraige)
কিন্তু মেয়ের বিয়ে নিয়ে তো মায়ের একরাশ চিন্তা। মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না কেন, এই প্রশ্নে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অবশেষে সকলের মুখ বন্ধ করতে অভিনব উপায় বের করে ফেললেন তিরিশ বছরের ওই যুবতী। বিয়ে করে ফেললেন গ্রামের মন্দিরে অধিষ্ঠিত বিষ্ণুদেবকে। জয়পুরের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
পূজা উষ্মা প্রকাশ করে বলে,ছোট বেলা থেকেই দেখে এসেছি কারণে অকারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকে। (Family Disturbence) এমনকি এর পরিণামে বিবাহ বিচ্ছেদও হয়। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে মেয়েরা।তাই তার এই সিদ্ধান্ত। (Harrasement)
মনোবিদের (Physciatrist) বলেন,সম্ভবত নিজের পরিবারের মধ্যে শিশুকাল থেকেই ওই ঝগড়া-ঝাটি পূজা দেখে এসেছে। তাতে তার মনের গভীরে ‘বিবাহ’ নিয়ে এই বিতৃষ্ণা জন্মেছে। কিন্তু আমাদের সমাজ! তিরিশ বছরের মহিলা অবিবাহিত কেন, সেই নিয়ে পরিচিত মহলে ফিসফাস লেগেই থাকে। মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন পূজার মাও। মেয়ের জন্য ভাল সম্বন্ধ দেখে বিয়ের ব্যবস্থা করেন তিনি। কিন্তু নিজের জেদে অনড় পূজা। সম্বন্ধ ফিরিয়ে দেন তিনি। বাবা-মাকে জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এখান থেকেই সঙ্কট তৈরি হয় পরিবারে।বিশেষকরে পূজার বাবা যায় রেগে।
বাবাকে শান্ত করার জন্য শেষমেশ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন পূজা। পাত্রও বেছে নিলেন নিজেই। গ্রামের মন্দিরে অধিষ্ঠিত বিষ্ণুদেবকেই নিজের স্বামীর আসনে বসালেন পূজা। ৮ ডিসেম্বর ধুমধাম করে বিয়ে হল তাঁর। কিন্তু দেবতাকে বিয়ে কেন? উত্তরে পূজা জানালেন, “দেবতার সঙ্গে তুলসী গাছের বিয়ের ঘটনা তো হামেশাই দেখা যায়। তাহলে মানুষের সঙ্গে দেবতার বিয়ে হবে না কেন? আমি পণ্ডিতজিকেও, জিজ্ঞাসা করেছ। তিনিও বলেছেন এই বিয়ে হতেই পারে।” এর পরে শুরু হয় নতুন গুঞ্জন।কেউ বলে,এই বিবাহ রীতিবিরুদ্ধ, কেউবা বলেন, এটা বিষ্ণুদেবকে অমর্যাদা করা।
পূজার বাবা বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে মেয়ের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। (Lord Vishnu) তবে মেয়ের অভিনব বিয়ের সাক্ষী থেকেছেন পূজার মা। বিয়ের পর অবশ্য নিজের বাড়িতেই থাকেন পূজা। প্রতিদিন সকালে উঠে পতিদেবের আরাধনা করেন। বিকেলবেলা মন্দিরে গিয়ে বিষ্ণুদেবের দর্শন করে আসেন। বিবাহিত জীবন নিয়ে পূজার মত, “অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করেছেন। তবে আমার এই কাজে সমর্থনও জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন ভালো মানুষ।”
আপাতত ‘বিবাহ’ শান্তিতেই মিটেছে।