খবরে আমরা– ঝাড়খন্ড রাজ্যের অন্তর্গত পূর্ব সিংভূম জেলার একটি অন্যতম শহর ঘাটশিলা। প্রকৃতি অকৃপণ হাতে ঘাটশিলাকে সাজিয়েছে হাজার হাজার বছর আগে। এমন অনুপম আরণ্যক প্রকৃতির হাতছানি এড়িয়ে যেতে পারেন নি কবি মনের কথাশিল্পী বিভূতিভূষণ। এড়িয়ে যেতে পারে না আপামর প্রকৃতি প্রেমী বাঙালিও।
অজস্র ছোট ছোট সবুজ পাহাড়ে ঘেরা প্রকৃতির কোল দিয়েই ছুটে গেছে ক্ষীণকায় সুবর্ণরেখা নদী। অদূরেই রেল লাইন,আর এই রেল লাইন ও সুবর্ণরেখার মাঝে মসৃণ রাজপথ। এই রাজপথে আছে সুদূরের আকর্ষণ। সুবর্ণরেখার ঘাটে হাজার বছর ধরে অজস্র শিলাখন্ড ছড়িয়ে থাকার কারণেই জায়গার নাম ‘ঘাটশিলা’। এই সুবর্ণ রেখায় পাওয়া যায় সোনা। কোনো কোনো গ্রামের মানুষ এখন সকাল সন্ধ্যা বালি থেকে সোনা খুঁজে নেয়।
মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল এই ঘাটশিলা। কোলকাতা থেকে মাত্র ২১৫ কিমি পথ যেকোনো ট্রেনে সাড়ে তিন ঘন্টায় পৌঁছানো যায় বিভূতিভূষণের ঘাটশিলায়। সুবর্ণরেখাকে কেন্দ্র করেই এই শহরের বিস্তার।
এখানে দেখতে পাবেন বিভূতিভূষণের বসতবাড়ি ‘গৌরিকুঞ্জ’। অদূরেই পঞ্চ পাণ্ডব শিলা। কিংবদন্তী অনুযায়ী পঞ্চপান্ডব বানপ্রস্থে যাবার আগে এখানে বিশ্রাম করেছিলেন। একটু গেলেই রাতমোহনা টিলা থেকে অপুর্ব সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। কিছুটা দূরে আদিবাসীদের দেবী রনদিনীর মন্দির অবশ্যই দর্শনীয় স্থান। সামনেই দহীজোড়ায় স্থাপিত হয়েছে রামকৃষ বিবেকানন্দ মঠ। মাত্র ২ কিমি দূরে ফুলদুংরি টিলা নাকি ব্যর্থ প্রেমিক প্রেমিকাদের মনস্কামনা পূর্ণ করে। আর কিছুটা এগিয়ে ৯ কিমি দূরে বুরুডি ড্যাম অবশ্যই দেখবেন। দু’তিন দিনের জন্য অপূর্ব এই বেড়ানোর জায়গা।
যাওয়ার পথ – হাওড়া স্টেশন থেকে বহু ট্রেন ঘাটশিলা যায়। যেমন ‘ইস্পাত এক্সপ্রেস’, ‘তিলক এক্সপ্রেস’, ‘আমেদাবাদ এক্সপ্রেস’, ‘হাতিয়া এক্সপ্রেস’। এ ছাড়াও খড়গপুর থেকে লোকাল ট্রেনেও ঘাটশিলা যাওয়া যায়।
থাকার জায়গা – স্টেশনেই বাইরে বাঁপাশে পাবেন হোটেল ঘাটশিলা (832303 — STD Cod -06585), এর পর একে একে মারোয়ারী ধর্মশালা. স্নেহলতা হোটেল(9434014122), হোটেল মারদিয়ান (9835302262),
ফুলদুংরীর পথে পাবেন সানন্দা লজ (9263486613)।
এইসবগুলো হোটেল ও লজের ভাড়া নন AC কমবেশি ৭০০- ১০০০ টাকার মধ্যে। আর AC ১০০০ – ১২০০ এর মধ্যে। তবে একটু বিলাসবহুলভাবে যারা থাকতে চান তাদের জন্য নদীর তীরেই আছে ঘাটশিলা হলিডে রিসর্ট (8404895081)
এছাড়াও আপনি পাবেন অনেক হলিডে হোম।
দু’তিন দিনের ছুটি পেলেই ঘুরে আসুন ঘাটশিলা।