জোম্যাটোর ডেলিভারি বয় সৈকত সরদার। লড়াই চলছে ২০১৬ সাল থেকে। যে বাইক ছিল সবচেয়ে প্রিয়, তাকে বিদায় জানাতে হয়েছে অকালে। জিঞ্জিরা বাজারে বাড়ির কাছেই দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। দু’চোখে থাকা স্বপ্ন সেদিন মিশে গিয়েছিল ধুলোয়। কিন্তু ওই যে এ লড়াই লড়তে হবে, লড়াই জিততেও হবে। হ্যাঁ, লড়াইয়ের আগুন বুকে ছিল, তাই কামব্যাক করেন কয়েক বছরের মধ্যে। রাতে রাস্তায় গাড়ি বলতে শুধুই বড় বড় ট্রাক। ঠান্ডা হাওয়ায় পাতারা খেলে বেড়াচ্ছে রাস্তার এদিক ওদিক। লাইট পোস্টের আলো টিমটিম করে জ্বলছে। জাতীয় সড়কের ধারে শপিং মলগুলোর শাটার বন্ধ হয়েছে। চায়ের দোকানও গ্লাস ধুয়ে বন্ধ করার পথে। ফাঁকা রাস্তায় জোম্যাটো লেখা কিছু একটা জ্বল জ্বল করছে। ডেলিভারি বয়, বিস্ময় নিয়ে এগিয়ে যেতেই দেখা গেল হ্যাঁ! ডেলিভারি বয় কিন্তু বাইক বা সাইকেলে নয়। তিনি বসে আছেন হুইল চেয়ারে। গপ্প জমতেই বেরিয়ে এল এক লড়াইয়ের কাহিনি। অবাক হয়ে যেতে হয় সেই কাহিনী শুনে।
হুইল চেয়ার বাইক এখন সঙ্গী সৈকতের। পড়াশোনার পাঠ চুকে গিয়েছিল দুর্ঘটনার সঙ্গেই। কিন্তু হার মানেনি। সকালে করেন ভয়েসওভারের কাজ। বিকেলে জোম্যাটোয়। হুইলচেয়ার ছুটিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন খাবার। দায়িত্বে অনড় সৈকত খুব বেশি সময় তাই গপ্প এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। ছোট্ট করে জানালেন, সকলে এই কাজে তাঁকে বিরাট প্রশংসা করেন। অনেকে অনুপ্রেরণাও পান। ফলে সেসবই তাঁকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। এগিয়ে যেতে যেতেই আরেকটু গপ্প হল। জানালেন শিরদাঁড়া ভেঙে গিয়েছিল অ্যাক্সিডেন্টে। দাঁড়ানোর অবস্থা ছিল না কোনওভাবেই। কিন্তু জেদ ছিল মনে। প্রথমে ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজে পড়তেন। ছেড়ে দেন মাঝে। তারপর শুভাকাঙ্ক্ষী জন্য ফের পড়াশোনা শুরু করেন। কিন্তু বইয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা বোধহয় ১৬ সাল পর্যন্তই ছিল। তার পরে লড়াই আর লড়াই।