খবরে আমরাঃ একটা আপেল। সেটাই এখন রাজ্য পুলিশের বড় হাতিয়ার। বিজেপির মুখপাত্রের সৃষ্ট হিংসা ঠেকাতে আপেলেই আস্থা রাখলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য।
সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা সংবাদমাধ্যম। দিনভর খবরের ঘনঘটা। দেশ-বিদেশের কোন প্রান্তে কী ঘটে চলেছে, তা প্রতিনিয়ত জনসমক্ষে তুলে ধরার মতো দায়িত্ববান কাজ করে থাকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। কিন্তু তারই ফাঁকে মাঝেমধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। কীভাবে জানবেন কোনটা ভুয়ো আর কোনটা সত্যি? জনসাধারণের কাছে এই ফারাক তুলে ধরতে আপেলের মতো ফল বেছে নিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ! শুনে অবাক হচ্ছেন? কিন্তু এটাই সত্যি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। টুইটটি করেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য।
শনিবার রাজ্য পুলিশের তরফে একটি টুইট করেন ডিজি। সেখানে দুটি আপেলের উল্লেখ করেন। একটি শুকনো আর পচে যাওয়া আপেল। আরেকটি তাজা আপেল। তবে পুলিশের মতে এখানে ফলটি প্রতীক। তাজা আপেলকে তিনি ‘বাস্তব’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। আর শুকনো আপেলটি ‘গুজব’। বোঝাতে চেয়েছেন, পচা আপেলের সঙ্গে কখনও টাটকা আপেল রাখতে নেই। তাহলে তা ঝুড়ির বাকি আপেলগুলিকেও নষ্ট করে দেবে। অর্থাৎ একটি গুজব থেকে জন্ম নেবে হাজার হাজার গুজব, যা শেষমেশ শান্তি নষ্ট করে, অশান্তিতে ইন্ধন জোগায়। ডিজি মালব্য লিখেছেন, ‘‘শান্তি নষ্ট হতে দেবেন না। গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন। মিথ্যা খবর সম্পর্কে নিকটবর্তী থানায় জানান।’’
সম্প্রতি হজরত মহম্মদকে নিয়ে দিল্লির বিজেপি নেত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গোটা দেশেই অশান্তির আগুন জ্বলছে। বাংলাও ব্যতিক্রম নয়। এখানের একাধিক জায়গায় ছোটখাটো অশান্তি, পথ অবরোধের মত জনজীবনের সমস্যা তৈরির মতো ঘটনা ঘটছে। অশান্তি রুখতে বার্তা দিচ্ছেন প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী নিজে একাধিকবার অবরোধ প্রত্যাহার করে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। তাতেও অবশ্য বিশেষ কাজ হয়নি। শনিবারও হাওড়ার একাধিক জায়গা থেকে সংঘর্ষের খবর মিলেছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের টুইটটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। যেখানে বার্তা দেওয়া হয়েছে, আসল খবর এবং গুজবের তফাৎ বুঝুন। গুজবে কান দিয়ে, উত্তেজিত হয়ে কোনওভাবেই অশান্তি ডেকে আনবেন না। শান্তি বজায় রাখুন। প্রতীকী আপেলের মাধ্যমে গুজব এবং বাস্তবের তফাৎ বোঝাতে রাজ্য পুলিশের ডিজি নিজে টুইটটি করেছেন। এতেই স্পষ্ট, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশ মহলের যেমন চিন্তা রয়েছে, তেমনই জনসচেতনতা নিয়েও উদ্যোগী পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা।