খবরে আমরাঃ সিবিআই-ইডিকতে থোরাই ডর। লক ডাউন এর সময়ে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল বন্ধ। দোকান পাঠ, ছোট বড় কল কারখানার লোহার গেট ছিল বন্ধ। দুবছর কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর ধীরে ধীরে সব্বাই আবার নিজেদের পুরানো কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ঘরের বাইরে এল। আসানসোল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি আবার সচল হলো। পশ্চিম বর্ধমান এর জেলা শহর আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, পান্ডবেশ্বর, সালানপুর, কুলটি বরাকর সহ ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বেশ কিছু এলাকার মানুষ লেগে পড়ল তাদের পুরনো পেশা কয়লা পাচার করার কাছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মাটি খুড়লেই কয়লার মত দামী কালো হীর চুরির কাহিনীর আবার শুরু।
কিছু দিন আগেও পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরের কালীপাথর ও বৃন্দাবনি থেকে বরাকর নদী নৌকায় করে ঝাড়খণ্ডে কয়লা পাচার হত বলে অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। তবে আপাতত, সিবিআই, সিআইডি-র তৎপরতায় সেই জলপথে পাচারের চিত্র দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। যদিও, বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, সালানপুর থানার অন্তর্গত আছড়া, ডাবর-সহ কিছু এলাকায় অবৈধ খাদান থেকে ফের শুরু হয়েছে কয়লা ‘পাচার’। মূলত সড়ক পথেই তা পৌঁছে যাচ্ছে ঝাড়খণ্ডের মিহিজামে। অভিযোগ মানেনি পুলিশ।
অনায়াসে পাওয়া যায়,,,,
এই সব অঞ্চলের ১৬ থেকে ৬০, বয়স যাই হোক, বেকারদের কিসের চিন্তা? এলাকার বাসিন্দাদের ঘুরে দাঁড়ানোর একটাই পথ, হল কযলা চুরি। শয়ে শয়ে মানুষ কয়লা পাচার চক্রের সাথে যুক্ত হয়। দিন রাত এক করে ছোট বড় দলে ভাগ হয়ে কয়লা পাচার শিল্পের সাথে যোগ দিয়ে প্রচুর টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্নে মশগুল তারা।
ঝাড়খণ্ড থেকে বরাকর সেতুর ওপর দিয়ে অবাধে চোরাই কয়লা পাচার ছবি অনায়াসে চোখে পড়ে। দুই দিকে পাহারা দেওয়ার জন্য শিফ্ট অনুযায়ী পাহারা যতোই থাকুক কয়লা বোঝাই করা চোরদের থোরাই কেয়ার? চোরাই কয়লার জন্য পুরাতন সাইকেল দরকার। শহরের আম নাগরিকদের কাছে সাইকেল এখন আর নেই। চোরের দলের সাইকেল চাই। বেশি দাম দিয়ে সাইকেল কিনে কয়লা বোঝাই করে চলছে অবাধে। চোরাই কয়লা কাটার যন্ত্রপাতি, ঝুড়ি, দরি, বড় বস্তার মজুতদার
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের বেপথে রোজগার করার জন্য এক শ্রেণীর ফাইনান্সাররা মোটা টাকার সুদ খাটিয়ে ব্যবসার কাজে লিপ্ত।
সাইকেল বোঝাই করে চোরাই কয়লা ঠেলে একজন কয়লা পাচারকারির 500/600 টাকা রোজগার। মজুত করার পর ট্রাকে করে 30থেকে 50 টন চোরাই কয়লা চলে যায় দেশ বিদেশের বিভিন্ন শহরে,,,,
তা হলে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় পুলিশি নজরদারির কী পরিস্থিতি? বিজেপি, সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, রূপনারায়ণপুরে পুলিশের অস্থায়ী পিকেট রয়েছে। কিন্তু কয়লার ‘অবৈধ’ কারবারিরা সে পথ না মাড়িয়ে কুসুমকানালি গ্রাম এবং বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা হিন্দুস্তান কেবল্সের রাস্তা ধরে ঝাড়খণ্ডে ঢুকে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কয়লার চোরা কারবারে যুক্ত এক জনের দাবি, ‘‘সব ‘সেটিং’ রয়েছে। নির্দিষ্ট দর, নির্দিষ্ট জায়গায় দেওয়া হয়। ফলে, ধরা পড়ার কোনও ভয় নেই।’’ ওই আরোহীদের একাংশ জানান, তাঁরা কয়লা কাটেন না। তার জন্য নির্দিষ্ট শ্রমিক রয়েছে। খাদান থেকে এই পরিবহণকারীরা ২৫-৩০ কেজির এক ঝুড়ি প্রায় ১১০-১২০ টাকায় কেনেন। তা বস্তাবন্দি করে, অথবা মোটরবাইকে লোহার খাঁচায় করে মিহিজামে পৌঁছে দেওয়া হয় কয়লা। সেখানে কুইন্টাল প্রতি দর মেলে ৩৪০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিশনারেটের কর্তারা উদাহরণ হিসেবে, গত ২০ ডিসেম্বর কালীপাথরে, ২২ ডিসেম্বর বৃন্দাবনি এলাকায় অভিযান করার কথা জানান। কিন্তু সেখানে কয়লা বাজেয়াপ্ত না হওয়া ও কেউ ধরা না পড়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা। সালানপুর এরিয়ার সিআইএসঅফ-এর মোহনপুর ক্যাম্প ইনচার্জ বরুণ ত্যাগীও বলেন, ‘‘অবৈধ কয়লা ক্ষেত্রে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি যৌথ অভিযান চালিয়ে আছড়া থেকে ১০ টন ও ডাবর থেকে ১২ টন কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলা পুলিশের এক কর্তা।