খবরে আমরাঃ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে ফের নয়া মোড়। আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে শনিবার একাদশ-দ্বাদশের গ্রুপ সি নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্তে জামিন অযোগ্য ধারা জুড়ে নয়া এফআইআর দায়ের করল সিবিআই। নতুন করে এফআইআর দায়েরের ঘটনায় এসএসসি-র নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ক্রমান্বয়ে আরও চাপ বাড়াচ্ছে তা স্পষ্ট।
এদিনের এফআইআরে নাম রয়েছে এসএসসি-র তৎকালীন উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সমরজিৎ আচার্য, সৌমিত্র সরকার ও অশোক সাহার নাম। পাঁচজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০(বি), ৪১৭, ৪৬৫ এবং ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, জামিন অযোগ্য ৪৬৮ নম্বর ধারাতেও মামলা দায়ের করেছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। উল্লেখ্য, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমোদনেই গ্রুপ সি নিয়োগে যে ওই কমিটি তৈরি হয়েছিল, তা এদিনের এফআইআরে (FIR) উল্লেখ করেছে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর, আগেই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সম্পত্তির হিসাব জমা দিয়েছেন এসএসসি ও শিক্ষাদপ্তরের পাঁচ আধিকারিক। এবার উপদেষ্টা কমিটির পাঁচ সদস্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির যাবতীয় তথ্যও খতিয়ে দেখতে শুরু করলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জানা গিয়েছে, এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা-সহ পাঁচ সদস্যের যাবতীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও আয়কর সংক্রান্ত নথিও জমা দিতে বলেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা-সহ পাঁচ সদস্যের নামে বেনামে শেষ পাঁচ বছরে কোথায় কত সম্পত্তি রয়েছে, সেই সংক্রান্ত সমস্ত নথিও তাঁদের কাছে চাওয়া হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
মেয়েকে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে জোড়া এফআইআর দায়ের হয়েছে। এদিন তৃতীয় বার ফের ৪ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে পরেশকে। সূত্রে জানা গিয়েছে, সঙ্গে করে আনা বেশ কিছু নথি সিবিআইয়ের কাছে জমা দেন পরেশ। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)—এর মেধাতালিকায় কত নম্বরে নাম ছিল তাঁর মেয়ে অঙ্কিতার? অঙ্কিতা কবে স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন? মেয়ের চাকরি পাওয়া ও কাজে যোগদানের মাঝের সময়টায় পরেশবাবু কার কার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন? অঙ্কিতার বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল? জানতে চাওয়া হয়, তৃণমূলে যোগদানের সময় কাদের সঙ্গে, কী কী বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। তখন মেয়ের চাকরির বিষয়টি যোগদানের শর্ত হিসাবে ছিল কি না? মোবাইল ফোনের কললিস্ট সামনে রেখে গতকাল পরেশকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। নিজাম প্যালেসের ১৬ তলায় পরেশকে জেরার পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিওগ্রাফিও করা হয়। সূত্রের খবর, শিক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীমন্ত্রীকে ফের হাজিরার নোটিস দেওয়া হচ্ছে।