হাওড়ার বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, ওই খুনের ঘটনায় নতুন করে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া সহ সব দায়িত্ব সিবিআইর। নতুন করে তদন্তর পর বিচার প্রক্রিয়া চলছে সিবিআই বিশেষ সিবিআই আদালতে। এই ঘটনায় সিআইডি প্রথমে তদন্ত করে। বিচার প্রক্রিয়া চলে হাওড়া জেলা আদালতে। কিন্তু প্রমানের অভাবে পাঁচ অভিযুক্তকেই বেকসুরে খালাস করেছিল জেলা আদালত। নিম্ন আদালতের বিচারকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় পরিবার।
তাঁদের প্রথম থেকেই দাবি, এই খুনে জড়িত রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়। কিন্তু তাকেই অভিযুক্ত করা হয়নি। তাই তারা সিবিআই তদন্ত দাবি করেছিল।
২০১১ সালের ৬ মে গুলি করে খুন করা হয় তপন দত্তকে। এই ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতা কর্মী-সহ ১৩ জনের নাম জড়ায়। এই মামলা নিম্ন আদালত, কলকাতা হাই কোর্ট এমনকি, সুপ্রিম কোর্টেও উঠেছে। কিন্তু এখনও সুবিচার পাননি নিহত তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। এক দশক অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এই ঘটনায় অভিযুক্তরা শাস্তি পায়নি।
রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে সিআইডি তদন্তভার গ্রহণ করেছিল। সিআইডি তদন্তের পর জানায়, জলাজমি ভরাটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন বলেই তপনবাবুকে খুন হতে হয়েছে। ২০১১ সালের ৩০ অগস্ট সিআইডি মামলার চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে হাওড়ার একাধিক তৃণমূল নেতার নাম ছিল।
২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিআইডি আদালতে আরেকটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে। সেখানে কোনও কারণ না দেখিয়ে ন’জনের নাম বাদ দেওয়া হয় চার্জশিট থেকে। যাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন হাওড়া তৃণমূল নেতা
২০১৪-র ডিসেম্বরে তথ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়ে যান চার্জশিটে নাম থাকা বাকি পাঁচ অভিযুক্ত। কিন্তু ২০১৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয়। হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে শীর্ষ আদালত হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখে এবং হাই কোর্টকে দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়।
পরিবেশকর্মী তপন খুনের মামলায় চার্জশিট নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত। তপনবাবুর স্ত্রী প্রতিমা দত্তের দাবি, এই খুনের ঘটনায় হাওড়ার তৃণমূল নেতা (তথা রাজ্যের মন্ত্রী) অরূপ রায়, কল্যাণ বসু, ষষ্ঠী গায়েন-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা ও বিধায়ক জড়িত রয়েছেন। প্রথম চার্জশিটে অরূপের নাম ছিল বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের রায় ঘোষণার পরে প্রতিমা বলেন, ‘‘আশা করছি, এ বার ন্যায়বিচার হবে। অপরাধীরা শাস্তি পাবে।’’