কাঠবিড়ালির পিঠের তিনটে দাগের কথা। এর নেপথ্যেও রয়েছেন স্বয়ং শ্রীরাম। রামায়ণ অনুযায়ী, সমুদ্রের উপর সেতুবন্ধনের সময় হাজার হাজার বানর শ্রীরামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিল। মূল কাজ বলতে ভারী পাথর বয়ে সমুদ্রে ফেলা। তা বানরের দলের কাছে সেই কাজ করা মোটেও কঠিন ছিল না। কিন্তু হঠাৎ একটি কাঠবিড়ালি এসে হাজির হয় সমুদ্রতীরে। সেও নাকি সেতু বন্ধনে সাহায্য করবে। কিন্তু আকারে বহরে সে এতটাই ছোট, যে সবথেকে ক্ষুদ্রতম পাথরে টুকরো তুলতেও ব্যর্থ হয় ওই কাঠবিড়ালি। বানরের দল রীতিমতো হাসাহাসি শুরু করে তাকে দেখে। তবু সে রামের সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর। তাই অদ্ভুত এক ফন্দি বের করে ওই কাঠবিড়ালি।
প্রথমে নিজেই সমুদ্রের জলে গিয়ে ভালো করে গা ভেজায়। তারপর ভেজা গায়ে বালির উপর এসে শুয়ে পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই তার গায়ে বেশ কিছুটা বালি লেগে যায়, সেই অবস্থাতেই সে আবার ছোটে সমুদ্রের দিকে। আবার স্নান করে। গায়ের সব বালি সমুদ্রে ঝরে পরে। তারপর আবার ওই একইভাবে বালির উপর লুটিয়ে পড়ে সে। এভাবেই বেশ কিছুক্ষণ সমুদ্রে বালি ফেলার কাজ করতে থাকে সে। হয়তো পরিমাণে একেবারেই যৎসামান্য, তবু তার মনে হয়েছিল শ্রী রামের জন্য এতটুকু সে করবেই। দূর থেকে কাঠবিড়ালির এই কাণ্ডকারখানা দেখছিলেন শ্রীরাম। তিনি ছুটে এসে কাঠবিড়ালিকে কোলে তুলে নেন। সে কেন এমনটা করেছে তা সহজেই বুঝতে পারেন রাম। তারপর বানরের দলকে একজায়গায় জড়ো হতে বলেন। সবার সামনে কাঠবিড়ালির পরিশ্রমের কথা বলেন তিনি। আকারে এত ছোট হয়েও সে যেভাবে রামের জন্য সাহায্য করেছে, তা প্রমাণ করে দিয়েছিল তার রামভক্তির কথা। তাতেই আপ্লুত হয়ে কাঠবিড়ালির পিঠে হাত বুলিয়ে দেন শ্রী রাম। সেই থেকেই তার পিঠে তিনটি দাগ হয়ে যায়।
