www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 18, 2024 4:50 pm

অভিশপ্ত ২১ জুলাই। বাম আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেদিন সংগ্রেসককর্মীদের রাস্তায় ফেলে গুলি করে হত্যা করে জ্যোতি বসু-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। আর সেই বামেদের হারিয়ে ক্ষমতায় এসে ২০১১ সাল থেকে এই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছে সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস।

অভিশপ্ত ২১ জুলাই। বাম আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেদিন কংগ্রেসকর্মীদের রাস্তায় ফেলে গুলি করে হত্যা করে জ্যোতি বসু-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। আর সেই বামেদের হারিয়ে ক্ষমতায় এসে ২০১১ সাল থেকে এই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছে সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। করোনার প্রকোপে দু বছর ভার্চুয়াল সভা করে দল। এবার কলকাতার শহীদ মঞ্চে ফের সভা হচ্ছে। এই মঞ্চ থেকেই দলকে আগামীদিনরে পথ দেখান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাণ পুরুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই পুলিশের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন রাজ্য যুব কংগ্রেস নেত্রী। যুব কংগ্রেসের ডাকে মহাকরণ ঘেরাও কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সেখানে গুলি চালানোর ঘটনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। বিরোধী দল কংগ্রেস সিপিআইএমের বিরুদ্ধে নির্বাচনে রিগিংয়ের অভিযোগ তুলেছিল। স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবিতে কংগ্রেস ভোটারদের সচিত্র পরিচয় পত্রের দাবিতে মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন যুব কংগ্রেস। সেখানেই পুলিশের গুলিতে ১৩ জন কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল।

২১ জুলাই কী ঘটেছিল?
সাল ১৯৯৩। তখনও তৃণমূলের জন্ম হয়নি। তখন পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেসের ‘আগুনে নেত্রী’ তথা সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে জ্যোতি বসুর সরকার। এ সময় সিপিএমের বিরুদ্ধে ছাপ্পা-রিগিং-এর অভিযোগ নিয়মিত শোনা যায় বিরোধিদের মুখে। এমন আবহেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দাবিতে ২১ জুলাই মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে এই কর্মসূচি দিন ঠিক হয়ে ছিল ১৪ জুলাই। কিন্তু সে বছর ওই সময় প্রাক্তন রাজ্যপাল নুরুল হাসানের প্রয়াণের জন্য কর্মসূচি পিছিয়ে ২১ জুলাই করা হয়। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতার ডাকে মহাকরণ অভিযানের জন্য কলকাতার রাজপথে নামেন কয়েক হাজার যুবকংগ্রেসকর্মী। রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক সচিবালয়ে এই অভিযান রুখতে তৎপর হয় পুলিশ। বিভিন্ন ক্রসিং-এ গড়া হয় ব্যারিকেড। এরপরই হঠাৎ চলতে থাকে গুলি। সেই গুলিতে নিহত হন ১৩ জন যুবকংগ্রেস কর্মী। এই ‘শহিদ’রা হলেন- বন্দনা দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল, কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ রায়, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী, শ্রীকান্ত শর্মা, দিলীপ দাস, রঞ্জিত দাস, প্রদীপ দাস, মহম্মদ খালেক, ইনু। এই ১৩ যুবকংগ্রেসকর্মীর মৃত্যুতে রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। কার নির্দেশে গুলি চালাল পুলিশ, এই প্রশ্নের আজও মীমাংসা হয়নি। উল্লেখ্য, সেসময় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে পরবর্তীকালে এ ঘটনায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ক্নিনচিট দেয় সিবিআই।

১৯৯৩ সালের এই ঘটনার পর থেকেই প্রতিবছর এই দিনটিকে ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালন করে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। পরবর্তীকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল তৈরি করেন এবং ২১ জুলাইকে ‘শহিদ দিবসে’র মর্যাদা দেওয়া হয়। আজও এই দিনে পৃথকভাবে সমাবেশ করে কংগ্রে। কিন্তু, তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে এ রাজ্যে প্রশ্নাতীতভাবে বৃহত্তর শক্তি হয়ে ওঠায় তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’ই যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

‘শহিদ তর্পণ’ করা হলেও বিগত কয়েক বছর ধরে, বিশেষত রাজ্যে পালাবদলের পর ২১ জুলাই তৃণমূলের কাছে এক প্রকার ক্ষমতা প্রদর্শণের মঞ্চ হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় আগামী পঞ্চায়েত ও কয়েকদিন পরেই লোকসভা নির্বাচনে জিতে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখাই এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। একুশের মঞ্চ থেকে সাধারণত দলকে আগামী দিনের পথ দেখান মমতা।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *