হিন্দু ধর্মে, যে কোনও পূর্ণিমাই অত্যন্ত শুভ। বহু উল্লেখযোগ্য পূর্ণিমায় সারাদিন ধরে উপবাস পালন করেন অনেকে, সন্ধ্য়ের সময় পুজো করে তারপর উপোস ভঙ্গ করেন। এমন ধর্মপ্রাণা হিন্দু ঘরে ঘরে রয়েছে। সাধারণত পুরনো দিনের মানুষজন পূর্ণিমার গুরুত্ব পঞ্জিকা দেখে পালন করে থাকে। তবে আসন্ন বছরের পৌষ মাসের (Pous ) পূর্ণিমা (Purnima) আরও বিশেষ হয়ে পড়েছে বেশ কিছপু কারণে। এদিনেই ৪টি বিরল যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৬ জানুয়ারিতে পড়েছে নতুন বছরের প্রথম পূর্ণিমা। ২০২৩ সালের প্রথম পূর্ণিমার গুরুত্ব যেমন রয়েছে, তেমনি জ্যোতিষশাস্ত্রে এদিনটিকে অত্যন্ত শুভ বলেও মনে করা হয়। পৌষ পূর্ণিমার শুভ সময়, শুভ যোগ ও পূজা পদ্ধতিগুলি জেনে নিন…
হিন্দু ধর্মে পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পূর্ণিমা তিথি শুক্লপক্ষের শেষ দিন এবং শুক্লপক্ষকে শাস্ত্রে দেবতাদের সময় বলে মনে করা হয়। পূর্ণিমার দিনে চাঁদের সঙ্গে লক্ষ্মী-নারায়ণের পুজো করা হয়। এদিনে উপবাস করে এবং বাড়িতে সত্যনারায়ণের গল্প পাঠ করলে একজন ব্যক্তি জীবন ধন্য হয়ে যায়। মৃত্যুর পরও পরের জীবনে সম্পদ, শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ করেন। প্রথম পূর্ণিমাকে খুব বিশেষ বলে মনে করা হয়।
শুভ যোগ
নতুন বছরে পৌষ পূর্ণিমায় যদি উপবাস রাখতে চান, তাহলে ৬ জানুয়ারি,শুক্রবার পালন করতে পারেন। বিশেষ বিষয় হল পূর্ণিমার দিন এবং শুক্রবার উভয় দিনেই লক্ষ্মীকে উৎসর্গ করা হয়। ফলে এদিন নিয়ম মেনে চললে পৌষ পূর্ণিমায় লক্ষ্মীর (Maa Laxmi) আশীর্বাদ পাওয়ার বিশেষ সুযোগ রয়েছে। নিষ্ঠাভরে এদিন পুজোপাঠ করলে ও প্রতিকার জীবনে সুখ এনে দিতে পারে। পৌষ পূর্ণিমায় ব্রহ্মা, ইন্দ্র ও সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ গঠিত হচ্ছে তা এদিনের গুরুত্বকে দ্বিগুণ করে তুলেছে।
ইন্দ্র যোগ – ৬ জানুয়ারি, ২০২৩, সকাল ৮টা ১১ মিনিট থেকে শুরু হবে। শেষ হবে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে।
ব্রহ্ম যোগ – ৫ জানুয়ারি, ২০২৩, সকাল ৭টা ৩৪ মিনিট থেকে শুরু হবে। সমাপ্তি ঘটবে ৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা ১১ মিনিট।
সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ – ৭ জানুয়ারি, ২০২৩, রাত ১২টা ১৪ মিনিট থেকে শুরু হবে, সমাপ্ত হবে ৬টা ৩৮ মিনিটে।
শুভ তারিখ
পৌষ পূর্ণিমার তারিখ শুরু হবে – ৬ জানুয়ারি, ২০২৩, রাত ২টো ৩৪মিনিট
পৌষ পূর্ণিমার তারিখ শেষ হবে – ৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ভোর ৪টে ৩৭ মিনিটে।2
পুজো বিধি
পৌষ মাসের পূর্ণিমা হিন্দু শাস্ত্রে শাকম্ভরী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। এই দিনে ব্রহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে জলে কিছু গঙ্গাজল যোগ করে স্নান করতে হবে। উপবাসের ব্রত নিয়ে লক্ষ্মী-নারায়ণকে হলুদ, ফুল, ফল, মিষ্টি, পঞ্চামৃত, নৈবেদ্য দিয়ে পূজা করুন। ভগবান সত্যনারায়ণের ব্রতপাঠ পড়ুন। শ্রী হরির ভজন-কীর্তন করুন। সন্ধ্যায় দুধে চিনি ও চাল মিশিয়ে চাঁদকে অর্ঘ্য নিবেদন করুন। সম্ভব হলে মাঝরাতে লক্ষ্মীর পুজো করলে জীবনে সাফল্য আসবে তেড়ে তেড়ে। বিশ্বাস করা হয় যে পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করলে দেবী লক্ষ্মী ঘরে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। (Spiritual)