www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

May 7, 2024 7:42 pm

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে চন্ডীমঙ্গলের কাহিনীতে দুর্গা অর্থাৎ অরণ্যানী চন্ডীর মাহাত্ম্য গীত হয়েছে। এখানে তিনি অভয়া মঙ্গলচন্ডী নামে বর্ণিত। তাঁর বাহন গোধা বা গো-সাপ। বাংলার বিশেষত পশ্চিম বাংলার নারীসমাজে মঙ্গলচন্ডী গৃহকল্যাণের প্রধান দেবতা হিসেবে পূজিত হন। সধবা নারী জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রতি মঙ্গলবারে ফলাহার করেন এবং দেবীর ব্রতকথা শ্রবণ করেন। এ ধারা বহু প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। ওই  সমাজে প্রত্যেক নববধূর একটি করে মঙ্গলচন্ডীর ‘ঝাঁপি’ থাকে। এটি দেবীর প্রতীক।

চন্ডী  হিন্দু দেবতা। তিনি দেবী দুর্গার রূপভেদ এবং ‘শক্তি’ নামে পরিচিত। মার্কন্ডেয়পুরাণ অনুসারে দেবী চন্ডী শুম্ভ, নিশুম্ভ নামে দু দানব এবং চন্ড ও মুন্ডসহ আরও অনেককে বধ করেন। চন্ডরূপ ধারণ করে দেবশত্রুদের বধ করেন বলে তাঁর নাম হয় চন্ডী। চন্ডীই যখন ভক্তের দুর্গতি বিনাশ করেন তখন তাঁকে বলা হয় দুর্গা। দুর্গারূপে তিনি মহিষাসুরকে বধ করেন।

বহু নামে ও রূপে চন্ডী পূজিত হন, যেমন: দেবীচন্ডী, মঙ্গলচন্ডী, জয়চন্ডী, ওলাইচন্ডী, কুলুইচন্ডী, চেলাইচন্ডী প্রভৃতি। জয়চন্ডীরূপে তিনি দ্বিভুজা, ত্রিনয়না, গৌরবর্ণা, বরাভয়হস্তা এবং পদ্মোপরি দন্ডায়মানা। মার্কন্ডেয়পুরাণে চন্ডী নামে একটি অধ্যায় আছে যার শ্লোকসংখ্যা সাতশ। এখানে দেবীচন্ডীর বিচিত্র রূপ ও মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। দেবীপূজা, বিশেষত  দুর্গাপূজা উপলক্ষে কিংবা গৃহস্থের কল্যাণ কামনায় এক বা একাধিকবার চন্ডীপাঠের নিয়ম আছে।

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে চন্ডীমঙ্গলের কাহিনীতে দুর্গা অর্থাৎ অরণ্যানী চন্ডীর মাহাত্ম্য গীত হয়েছে। এখানে তিনি অভয়া মঙ্গলচন্ডী নামে বর্ণিত। তাঁর বাহন গোধা বা গো-সাপ। বাংলার বিশেষত পশ্চিম বাংলার নারীসমাজে মঙ্গলচন্ডী গৃহকল্যাণের প্রধান দেবতা হিসেবে পূজিত হন। সধবা নারী জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রতি মঙ্গলবারে ফলাহার করেন এবং দেবীর ব্রতকথা শ্রবণ করেন। এ ধারা বহু প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। ওই  সমাজে প্রত্যেক নববধূর একটি করে মঙ্গলচন্ডীর ‘ঝাঁপি’ থাকে। এটি দেবীর প্রতীক।

বাংলাদেশের লোকসমাজে চন্ডীকে বিভিন্ন রূপে কল্পনা ও বিশ্বাস করা হয়, যেমন: শেওড়া গাছে অধিষ্ঠিত দেবীকে বলা হয় বনদুর্গা, পাকুড় গাছে অধিষ্ঠিত দেবী ষষ্ঠী, বসন্তরোগের উপশমকারিণী দেবী বসন্তচন্ডী বা বসন চন্ডী ইত্যাদি। কোনো কোনো গ্রামের নামের সঙ্গেও চন্ডীদেবীর সম্পর্ক রয়েছে, যেমন: বোয়াঁই চন্ডী, সগড়াই চন্ডী ইত্যাদি। কোথাও বিশেষ কোনো বৃক্ষে কল্পিত চন্ডীর কাছে মানতের লক্ষ্যে একখন্ড বস্ত্র বেঁধে দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। এখানে দেবী নেকড়াই চন্ডী নামে পরিচিত। আবার কোনো কোনো অঞ্চলে চন্ডী-অধিষ্ঠিত বৃক্ষের তলায় ঢিল বা ইটের টুকরা দিলেই তা পূজার সমতুল্য বলে গণ্য হয়। এখানে দেবী ইটাল চন্ডী বা হেঁটাল চন্ডী নামে পরিচিত। 

ওঁ বন্ধুক-কুসুমাভাসাং পঞ্চমুণ্ডাধিবাসিনীম্
স্ফুরচ্চন্দ্রকলা-রত্ন-মুকুটাং মুণ্ডমালিনীম্ ।
ত্রিনেত্রাং রক্তবসনাং পীনােন্নতঘটস্তনীং
পুস্তকঞ্চাক্ষমালাঞ্চ বরঞ্চাভয়কং ক্ৰমাৎ ৷
দধতীং সংস্মরেন্নিত্যমুত্তরাম্নায়মানিতাম্ ।।

যিনি বন্ধুকপুষ্পবর্ণা ও শিববাপরি সংস্থিতা, উদীয়মান চন্দ্রকলা যাঁহার মুকুটরত্নরূপে বিরাজিত, যিনি নর-মুণ্ড-মালা-শােভিতা ও উন্নত-ঘটবৎ- স্তনযুগলসংযুক্তা, যিনি ত্রিনয়না ও রক্তবসনা, যিনি চারিহস্তে যথাক্রমে পুস্তক ও রুদ্রাক্ষমালা এবং বরমুদ্রা ও অভয়মুদ্রা ধারণ করেন সেই আগমশাস্ত্র প্রতিপাদ্যা মহাদেবীকে নিত্য উত্তমরূপে ধ্যান করিবে।

কালীং রত্ন-নিবদ্ধ-নূপুর-লসৎ-পাদাম্ বুজামিষ্টদাং
কাঞ্চী রত্নদুকূল হারললিতাং নীলাং ত্রিনেত্রোজ্জ্বলাম্
শূলাদ্যস্ত্রসহস্ৰমণ্ডিত ভুজামুক্ত পীনস্তনীং
আবদ্ধামৃতরশ্মিরত্নমুকুটাং বন্দে মহেশপ্রিয়াম্ ৷৷

যাঁহার পাদপদ্মযুগল রত্নখচিত-নূপুর-শােভিত, যিনি মনােভীষ্টদায়িনী, যিনি মেখলা, রত্নময় বস্ত্র ও মণিহার পরিহিতা,যিনি নীলবর্ণা, ত্রিনয়নােজ্জ্বলা, সহস্রভুজে শূলাদি অস্ত্রধারিণী ও উর্ধ্বমুখ স্তনযুগলশােভিতা, এবং যিনি অমৃতবর্ষিণী রশ্মিযুক্তা রত্নখচিত মুকুটধারিণী, সেই শিবপ্রিয়া কালীকে বন্দনা করি ।

যা চণ্ডী মধুকৈটভাদিদৈত্যদলনী যা মাহিষোন্মূলিনী
যা ধূম্রেক্ষণচণ্ডমুণ্ডমথনী যা রক্তবীজাশনী।
শক্তিঃ শুম্ভনিশুম্ভদৈত্যদলনী যা সিদ্ধিদাত্রী পরা
সা দেবী নবকোটীমূর্তিসহিতা মাং পাতু বিশ্বেশ্বরী ।।

যে চণ্ডিকা মধুকৈটভাদি-দৈত্যনাশিনী,যিনি
মহিষাসুরমর্দিনী,যিনি ধূম্রলােচন-চণ্ডমুণ্ডাসুর- সংহারিণী, যিনি রক্তবীজ-ভক্ষয়িত্রী, যে মহাশক্তি শুম্ভনিশুম্ভাসুর- বিনাশিনী ও শ্রেষ্ঠা সিদ্ধিদাত্রী এবং নবকোটী-সহচরী-পরিবৃতা, সেই জগদীশ্বরী দেবী আমাকে পালন করুন ।

মধ্যে সুধাবধিমণিমণ্ডপ-রত্ন-বেদী-
সিংহাসনােপরিগতাং পরিপীতবর্ণাম্ ।
পীতাম্ বরাং কনকভূষণমাল্যশােভাং
দেবীং ভজামি ধৃতমুদগরবৈরিজিহ্বম্ ।।

সুধাসমুদ্রের মধ্যে মণিমণ্ডপস্থ রত্নবেদীস্থিত সিংহাসনে সমাসীনা,উত্তমপীতবর্ণা, পীতবস্ত্রপরিহিতা, স্বর্ণালঙ্কার ও মাল্য-শােভিতা এবং হস্তে মুদগর ও শত্রুজিহ্বাধারিণী দেবীর ধ্যান করি ।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *