দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে ৬০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হল। টাকার অভাবে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ্য ভাতা যেখানে বকেয়া, অনেক প্রকল্পে টাকা দিতে পারছেন না মমতা ব্যানার্জী, সেখানে ক্লাব গুলিকে কেন অনুদান সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এমন মামলা আগেও হয়েছে। তবে রায় রাজ্যের পক্ষেই গিয়েছে। এবার কী হয় সেটাই প্রশ্ন। অনুদান ঝুলে রইল আদালতের কক্ষে।
ঋণের বোঝায় জর্জরিত রাজ্য সরকার। কেন্দ্রও বকেয়া মেটাচ্ছে না বলে বারবারই অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তার উপর আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য ডিএ দিতে পারেনি সরকার। এমন পরিস্থিতিতে কেন পুজো কমিটিগুলিকে ৬০ হাজার টাকা করে দেওয়া কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)? রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এবার কলকাতা হাই কোর্টের দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।
জানা গিয়েছে, মামলা করেছে আইনজীবীদের একটি সংগঠন। বুধবার এই মর্মে করা জনস্বার্থ মামলাটি দায়েরের অনুমতিও দিয়েছেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি। দ্রুত শুনানির আরজিও করা হয়েছে উচ্চ আদালতের কাছে। শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা।
করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর পুজোয় (Durga Puja) ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছিল রাজ্য। এবার তা বেড়ে করা হয়েছে ৬০ হাজার। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পুজোর বৈঠক থেকে এই বড় ঘোষণাই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি একাধিক ক্ষেত্রে করছাড়ও দেওয়ার কথাও জানান তিনি। কিন্তু তার পর থেকেই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। ‘খয়রাতি’ করতে অর্থের অভাব হয় না সরকারের। এভাবেই তীব্র আক্রমণ করা হয়। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে ‘দিশাহীন’ বলে কটাক্ষ করেন বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। শুধু তাই নয়, এই অর্থ ক্লাবগুলিকে না দিলে রাজ্যে কী কী উন্নতি করা যেত, সেই হিসাবও তুলে ধরে বিজেপি।
প্রায় ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। অর্থাৎ হিসাব বলছে, এর জন্য রাজ্য সরকারের আনুমানিক খরচ ২৫৮ কোটি টাকা। কিন্তু যেখানে রকারি কর্মীদের প্রাপ্য মহার্ঘভাতা দিতে পারেনি সরকার, সেখানে কেন ক্লাবগুলির পিছনে এই বিপুল অর্থ খরচ করা হচ্ছে? এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতাতেই হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ আইনজীবী। এবার দেখার শুনানিতে এই মামলার রায় কোন দিকে গড়ায়।