হিন্দুদের আদি দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর। অথচ ভারতে একমাত্র পুস্কর ছাড়া আর কোথাও ব্রহ্মাকে পুজো করা হয় না। এই নিয়ে আছে ভারতীয় পুরানে বেশ কিংবদন্তি। একটি অন্যতম কিংবদন্তি হলো –
এক সময় ব্রহ্মা দেখেন দানবেরা তার সন্তানদের হত্যা করছে এবং মানুষদের হয়রানি করছে। তিনি তৎক্ষণাৎ তাঁর অস্ত্র – পদ্মফুল দিয়ে অসুরকে বধ করলেন। এই কাজ করতে গিয়ে তাঁর পদ্মের তিনটি পাপড়ি ছিঁড়ে তিনটি স্থানে মাটিতে পড়ে তিনটি হ্রদ তৈরি হয়। পুষ্কর হ্রদ বা জ্যেষ্ঠ পুষ্কর (সর্বশ্রেষ্ঠ বা প্রথম পুষ্কর), মধ্য পুষ্কর (মধ্য পুষ্কর) হ্রদ এবং কনিষ্ট পুষ্কর (সর্বনিম্ন বা কনিষ্ঠ পুষ্কর) হ্রদ। আদি পিতা ব্রহ্মা তখন মূল পুষ্কর হ্রদে একটি যজ্ঞ (অগ্নি-বলি) করার সিদ্ধান্ত নেন । যজ্ঞ করার সময়, তার স্ত্রী সাবিত্রী (বা কিছু সংস্করণে সরস্বতী) যজ্ঞের অপরিহার্য অংশ সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হতে পারেননি। কারণ তিনি তার সহচর দেবী লক্ষ্মী, পার্বতী এবং ইন্দ্রানীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন । তাই ব্রহ্মা তখন গায়েত্রীকে বিয়ে করেন। গায়ত্রী তার পাশে বসে যজ্ঞ সম্পন্ন করেন।
এরপরে যখন সাবিত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেন তখন তিনি দেখতে পান গায়ত্রী ব্রহ্মার পাশে বসে আছেন যা ছিল তার সঠিক জায়গা। উত্তেজিত হয়ে, তিনি ব্রহ্মাকে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে কেউ কখনো তাঁর উপাসনা করবেন না। কিন্তু তারপরে সে অভিশাপের কিছুটা কমিয়ে দিয়ে বলেন, একমাত্র পুষ্করেই তাঁর পুজো হবে। অন্য কোনো জায়গায় হবে না। কিংবদন্তি অনুযায়ী তারপর থেকে শুধু পুস্করেই আদি পিতা ব্রহ্মার পুজো হয়, অন্য কোনো জায়গায় হয় না।