বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে বহু ঐতিহাসিক জায়গা। যেখানে বহু প্রাচীন ইতিহাস লুকিয়ে আছে। উত্তর ২৪ পরগনার তেমনই এক ঐতিহাসিক জায়গা হলো ‘চন্দ্রকেতু গড়’। প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহাসিক স্থল বা প্রাচীন ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখার যাদের ইচ্ছা রয়েছে, তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চন্দ্রকেতুগড়। মাটির নিচ থেকে খনন কার্যের মাধ্যমে উঠে এসেছিল নানা প্রাচীন মূর্তি থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক নিদর্শন। বর্তমানে অনেকেই এটিকে ‘খনা মিহিরের ঢিপি’ বলেও চেনেন। ভারতীয় ইতিহাস সম্বন্ধে যাদের আগ্রহ রয়েছে, মূলত তারাই এখানে ছুটে আসেন। মূলত ইতিহাস প্রেমীরাই এখানে ইতিহাসের সন্ধানে আসেন।
অদিতে এখানে এক বড়ো ঢিপি ছিল। সেই ঢিপি খনন করতেই বেরিয়ে আসে একটা আস্ত ইতিহাস। প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের মধ্যে হারানো সভ্যতার ইতিহাসকে জানতে চাইলে আসতেই পারেন খনা মিহিরে ঢিপিতে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদর শহর বারাসত থেকে প্রথমে দেগঙ্গা, এরপরই আসে বেড়াচাঁপা মোড়৷ সেই মোড় থেকে ডান দিকে হাঁড়োয়া রোড ধরে কিছুটা গেলেই চন্দ্রকেতুগড়৷ তবে এই নামটি ঠিক কোথা থেকে এল তা সঠিক কারোরই জানা নেই৷ ইতিহাসবিধদের অনুমাণ, মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পরে ছোট-ছোট কিছু নগরের উত্থান হয়, চন্দ্রকেতুগড় হয়ত তারই একটি৷ ইতিহাসের পাতায় তাই খুব বেশি চর্চা নেই চন্দ্রকেতুগড়ের। শোনা যায়, প্রাচীনকালে এইস্থানে চন্দ্রকেতু নামক কোন রাজা ছিলেন যিনি এই গড় নির্মিত করেছিলেন, এবং এটি তখন রূপ পায় একটি বন্দরনগরী হিসাবে। ইতিহাসবিদদের মতে, চন্দ্রকেতুগড় বাংলার হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো হওয়ার সম্ভাবনা রাখে৷ জানা যায়, কলকাতা আশুতোষ মিউজিয়ামের উদ্যোগে ১৯৫৬ সাল থেকে দশ বছর খনন প্রক্রিয়া চালায় এই স্থানে, এবং চন্দ্রকেতুগড়ের মাটির তলা থেকে প্রাক-মৌর্য থেকে পালি সাম্রাজ্য পর্যন্ত বহু নিদর্শন মেলে। অনুমান, এখনও এই জায়গার মাটির তলায় লুকিয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস।