অবাক হবেন না! এটাই সত্য। সেখানে শুধু হিরে আর হিরে। হিরে তো পৃথিবীতেও আছে। কিন্তু ব্যতিক্রম হচ্ছে ওই গ্রহের উপরের পুরো স্তর তৈরি হিরে দিয়ে। তাহলে আগে বিষয়টা পরিষ্কার করি।
আমরা জানি হিরে প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়। যখন কার্বনকে প্রবল তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয়,তখন সেই কার্বন হিরেতে পরিণত হয়। তাই আমরা বলি হিরের জন্ম কয়লার মধ্যে।
এবার সেই গ্রহের কথা। যে গ্রহের কথা বলা হচ্ছে, তার অফিসিয়াল নাম হল 55 Cancri E। এটি ২০০৪ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছিলেন। এরপর থেকে বিশ্বের সব মহাকাশ সংস্থার নজর রয়েছে এই গ্রহের দিকে। বিজ্ঞানীরা রেডিয়াল বেগের মাধ্যমে এই গ্রহটি আবিষ্কার করেছেন। এটি ঠিক গ্রহ নয়,একটা নক্ষত্র বলা যায়। সে এমন কয়েকটি নক্ষত্রকে দ্রুত গতিতে প্রদক্ষিণ করছে যে নক্ষত্রের চারপাশে প্রচুর কার্বন। যার কারণে কেউ কেউ এই গ্রহটিকে এক্সো-গ্রহও বলে।
মহাকাশ গবেষকেরা বলছেন, এই গ্রহে কার্বনের অনুপাতও বেশি এবং এটি যে নক্ষত্রগুলি ঘোরে সেখানেও কার্বনের অনুপাত বেশি। এমন পরিস্থিতিতে, যখন এই গ্রহগুলি কার্বন নক্ষত্রের চারপাশে ঘোরে, কখনও কখনও তাদের তাপমাত্রা এত বেশি হয়ে যায় যে তাদের উপর উপস্থিত গ্রাফাইট হীরেতে পরিণত হয়। আর সেই হিরের ছটা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। পরিহাস করে মহাকাশ গবেষকেরা বলেন,
যদি ভবিষ্যতে এখানে একটি মহাকাশযান পাঠাতে সফল হন, তাহলে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের হাতে একটি করে হীরে থাকবে বলেই অনুমান।
এই দ্রুতগতি সম্পন্ন নাক্ষত্রটি মাত্র ১৮ ঘন্টায় একবার প্রদক্ষিণ করে আসতে পারে। তাই বলা হয়,ওখানে বছর মাত্র ১৮ ঘন্টায়। এমন নক্ষত্রের অবস্থান যে পৃথিবী থেকে কত দূরে তা কল্পনা করাও মুশকিল। গাণিতিক হিসাবে ওই নক্ষেরটি পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই গ্রহের তাপমাত্রা ২ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। তৎসত্ত্বেও মানুষ তার উপর নজর রেখে চলেছে প্রতি মুহূর্তে। নাসা ও ইসরো তাদের হাই পাওয়ার টেলিস্কোপ দিয়ে প্রতি নিয়ত ওই হিরের গ্রহের গতিবিধির উপর লক্ষ রেখেছে।