www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 27, 2024 5:15 pm
sri krishna

ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, শ্রী হরি বিষ্ণুর পূর্ণ অবতার, ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী হিসেবে পালন করা হয়। এই বছর, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মবার্ষিকী ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩। কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর দিন মানুষ পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে উপবাস ও পুজো করে। জ্যোতিষশাস্ত্রে লাড্ডু গোপালের আশীর্বাদে সুন্দর ও গুণী সন্তান লাভের জন্য কিছু উপায়ের কথা বলা হয়েছে। প্রত্যেক মা’ই সুন্দর ও গুণী সন্তানের কামনা থাকে।

হিন্দু ক্যালেন্ডার (Hindu Calender) অনুযায়ী,  প্রতি বছর ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পালিত হয় জন্মাষ্টমী উৎসব (Janmashtami Festival)। হিন্দুধর্মে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর গুরুত্ব অপরিসীম। এ দিনেই শ্রীকৃষ্ণের (Lord Krishna) জন্ম হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরাণ মতে, কৃষ্ণকে বিষ্ণুর অষ্টম অবতার বলেই মনে করা হয়। জন্মাষ্টমীর দিন বিভিন্ন মন্দির ও ঘরে ঘরে কৃষ্ণ জন্মতিথি ও পুজোর বিশেষ আয়োজন করা হয়। সাধারণত বৈষ্ণবদের কাছে এই উত্‍সবের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দু মতে, রাত ১২টা নাগাদ বিধি-আচার মেনে কৃষ্ণের পুজোর আয়োজন করা হয়। তবে মথুরা-বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর দিন বিশেষ জাঁকজমক করে পালন করা হয়।

কবে পালিত হবে জন্মাষ্টমী?

প্রতি বছরের মতো এবারও শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর (Janmastami) তারিখ নিয়ে ভক্তদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর উৎসব দুই দিন ধরে পালিত হয়। একদিন গৃহস্থরা জন্মাষ্টমী উদযাপন করেন ও দ্বিতীয় দিন বৈষ্ণব সম্প্রদায়েের মধ্যে এই উত্‍সব পালন করে থাকেন। শ্রীকৃষ্ণ (Sri Krishna) জন্মোৎসব ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর উভয় দিনেই পালন করা হয়ে থাকে। যারা ঘরে পুজো করার কথা ভাবছেন, তাঁরা ৬ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমী পালন করতে পারেন। অন্যদিকে, যাঁরা বৈষ্ণব ধর্মে বিশ্বাসী, তাঁরা ৭ সেপ্টেম্বর পুজো-আচার করতে পারেন।  ধর্মীয় (Hindu Mythology) বিশ্বাস অনুসারে, শ্রী কৃষ্ণ রোহিণী নক্ষত্রে মধ্যরাত ১২টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই এই সময়েই পুজো করা প্রচলন রয়েছে।

শুভ সময়

ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি শুরু হয় : ৬ সেপ্টেম্বর, দুপুর ৩টে ২৭ মিনিট থেকে কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি শেষ হয় :  ৭ সেপ্টেম্বর, বিকাল  ৪টে ৪৪ মিনিটে রোহিণী নক্ষত্র : ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা ২০ মিনিট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত

পুরাণ (Spiritual) অনুসারে, রাত্রি বারোটায় রোহিণী নক্ষত্রে শ্রীকৃষ্ণের (Krishna) জন্ম হয়েছিল। এই বিশ্বাস অনুসারে, ৬ সেপ্টেম্বর গৃহস্থরা জন্মাষ্টমী ব্রত পালন করতে পারেন।   বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুসারে তাঁরা শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালন করছে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ।  

যেহেতু জন্মাষ্টমীর পুজো রাতে হয়, তাই  ৬ সেপ্টেম্বর তারিখটিই অনেকে বেছে নিচ্ছেন কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালনের জন্য। জন্মাষ্টমী পুজোর শুভ ক্ষণের কথা যদি বলেন, তবে তা মাঝরাত ১২টা ২ মিনিটে শুরু হবে। চলবে ১২টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত।

  • রোহিণী নক্ষত্রের সূচনা- ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৯:২০ am
  • রোহিণী নক্ষত্র শেষ হয় – ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , সকাল  ১০.২৫ মিনিট
  •  

জন্মাষ্টমীর শুভ মুহূর্ত : 

  • শ্রী কৃষ্ণ পূজার সময় – মধ্যরাত ১২.০২ – মধ্যরাত  ১২.৪৮ (৭ সেপ্টেম্বর 2022)
  • পূজার সময়কাল – ৪৬ মিনিট
  • উপবাসের সময় – ৭ সেপ্টেম্বর ৬.০৯ পর্যন্ত

জন্মাষ্টমীর গুরুত্ব

শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর দিন উপবাস করলে সকল মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এ দিনে নিয়ম মেনে যশোদা নন্দনের পুজো করলে সুখ ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ পাওয়া যায়। অন্যদিকে, যে দম্পতিরা সন্তান নিতে চান বা সন্তান সুখ থেকে বঞ্চিত, তাঁরাও জন্মাষ্টমীর দিন গোপালের পুজো করতে পারেন। এছাড়া মাখন, দই, দুধ, ক্ষীর, চিনি, দধি, মিষ্টি নিবেদন করতে পারেন। এই ভোগ গোপাল ঠাকুরের খুব প্রিয়।

পৃথিবীতে কংসের ক্রমবর্ধমান অত্যাচারের অবসান এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য  ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। এইদিনটিই জন্মাষ্টমী হিসেবে পালিত। কৃষ্ণকে শ্রী হরি বিষ্ণুর সবচেয়ে অপরূপ অবতার বলে মনে করা হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে , জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণের পুজো করলে অকাল মৃত্যুর ভয় থাকে না এবং পরকালে স্বর্গে স্থান হয়। শ্রীকৃষ্ণের আরাধনায় জগতের সকল সুখ লাভ হয়। সন্তানের মঙ্গলের  জন্য এই দিনে কৃষ্ণ পুজো করেন অনেকে।  বিশ্বাস করা হয়, যাঁরা জন্মাষ্টমীতে বালগোপালকে মাখন, মিছরি, নিবেদন করতে পারেন।   

পুজোর নিয়ম

জন্মাষ্টমী ব্রত পালনের জন্য উপকরণ হিসেবে ফুল, আতপ চাল, ফলের নৈবেদ্য, ফুল, তুলসীপাতা, দূর্বা, ধূপ, দীপ, পঞ্চগব্য, পঞ্চগুড়ি, পাট, বালি, পঞ্চবর্ণের গুড়ো, মধু পর্কের বাটি, আসন-অঙ্গুরী সংগ্রহ করতে হয়। এইদিনে উপবাসে থেকে উপকরণগুলি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে হয়। একটি শান্ত ও কোলাহল মুক্ত স্থান প্রয়োজন। স্থানটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখতে হবে এবং পুজোর জন্য স্নান সেরে রাখুন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি ছবি অথবা মূর্তির সঙ্গে গণেশ মূর্তিও স্থাপন করা হয়ে থাকে। পাশে রাখতে হবে প্রদীপ ৷ মিষ্টি, ফল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী থালায় সাজিয়ে রাখতে হবে।


মাথায় রাখবেন গোপালের প্রিয় খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে মাখন মিছরি, ননী,নাড়ু, তালের বড়া,ক্ষীর, রাবরি, মালাই , মালপোয়া ইত্যাদি, যা সাজিয়ে গোপালের সামনে ভোগ হিসেবে নিবেদন করতে পারেন৷ প্রথমে শ্রী গণেশের প্রার্থনা(ওম শ্রী গণেশায় নমহা) করতে হবে ৷ এরপর কিছুক্ষণ ধ্যান করতে হবে মন যাতে শান্ত থাকে। প্রদীপ জ্বালাতে হবে। শ্রীকৃষ্ণের প্রার্থনা (‘ওম নমঃ ভাগবতে বাসুদেবায়’)করতে হবে। এরপর ফুল অর্পন করতে হবে। তুলসি পাতা থাকলে ভাল হয়। তাছাড়া ধূপ জ্বালাতে হবে।

ফুল অর্পন করার সময় ঘন্টা বাজানোর রেওয়াজ আছে। ‘ওম নমঃ ভাগবতে বাসুদেবায়’ উচ্চারন করে যেতে হবে। এরপর ফল, মিষ্টি এবং অন্যান্য খাদ্য অর্পন করতে হবে। প্রার্থনা শেষে কিছুটা জল ছিটিয়ে দিতে হবে। কৃষ্ণ ভগবানের এই মন্ত্র বেশ কয়েকবার মনে মনে উচ্চারন করা যেতে পারে। এরপর ফল,মিষ্টি ও অন্যান্য খাদ্য প্রসাদ হিসাবে সবাইকে বিতরণ করতে হবে। পুজো শেষে ভগবত গীতা পাঠ করা হয়ে থাকে।

শ্রীকৃষ্ণের পূজার্চ্চনা পদ্ধতি:
(মন্ত্রপাঠ সহ পূজা)
হাতের তালুতে দু-এক ফোঁটা জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে পান করবেন। মোট তিন বার এইভাবে জল পান করতে হবে। তারপর করজোড়ে বলবেন—
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্।
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা।
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।
জল শুদ্ধি:
ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি। নর্মদে সিন্ধু-কাবেরি জলেঽস্মিন সন্নিধিং কুরু ।।
পুষ্প শুদ্ধি:
পুষ্পে পুষ্পে মহা পুষ্পে সুপুষ্পে পুস্পসম্ভবে
পুষ্পোহী চায়াব কীর্ণে চ হুং ফট স্বাহা।।
আসন শুদ্ধি:
যে আসনে বসিয়া পূজা করিবে, তাহার নিম্নে ত্রিকোণ মণ্ডল লিখিয়া আসনের উপর একটি পুষ্প দিয়া পাঠ করিবে, এতে গন্ধপুষ্পে ওঁহ্রীঁ আধার শক্তি-কমলাসনায় নমঃ।
তৎপরে আসন ধরিয়া পাঠ করিবে, – আসনমন্ত্রস্য মেরুপৃষ্ঠঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কুর্ম্মো দেবতা আসনোপবেশনে বিনিয়োগঃ।

(collected)

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *