আক্ষরিক অর্থে হয়তো সোনার মাটি নয়, কিন্তু এই মাটির প্রচুর গুনের জন্য একে সোনার মাটি বলেই ডাকা হচ্ছে। লক্ষাধিক টাকার বিশেষ মাটির খোঁজ মিলতেই জলপাইগুড়ির গবেষণাগারে তা প্রস্তুতির উদ্যোগ গবেষকদের। কী এই মাটি জানেন? কেনই বা এত দাম? কারণ এখানেই তৈরি হচ্ছে এমন এক বিশেষ মাটি, যার কেজি প্রতি দাম লক্ষাধিক টাকা! আর সেই মাটি শুধু দামেই নয়, চাষবাসে কার্যকারিতার দিক থেকেও রীতিমত বিস্ময়কর। এই মাটি তৈরি হচ্ছে আখের ছিবড়া ফেলার পরে জমে থাকা মাটি থেকে। রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা ফাইটোকেমিক্যাল কমপ্লেক্সে চলছে এই গবেষণা। গবেষকরা জানাচ্ছেন, আখের রস বের করে নেওয়ার পর যে খোসা পড়ে, সেই খোসা যেখানে মাটির সঙ্গে মিশে থাকে, ঠিক সেই মাটির স্তরই অসাধারণ গুণসম্পন্ন।
গবেষণাগারে নানা ধাপ পেরিয়ে সেই মাটি থেকেই তৈরি হচ্ছে ‘ট্রাইকন্ট্রোনাল’ নামের এক জৈব বৃদ্ধিকারক উপাদান। চা , ধান, সবজি এমনকি ফলের গাছেও এই মাটি মিশ্রিত জল স্প্রে করলে ফল মিলছে চোখে পড়ার মতো। গাছের বৃদ্ধি যেমন দ্রুত হচ্ছে, তেমনি ফলনও বাড়ছে কয়েক গুণ। এই মাটির গুণাগুণ শুধু স্থানীয় পর্যায়েই নয়, ইতিমধ্যেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরেও সাড়া ফেলেছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে এই প্রোটিন-মাটি তৈরি করে তা বাজারজাত করছে রাজ্য সরকারের গবেষণা কেন্দ্র। উত্তরবঙ্গের কৃষির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করতে চলেছে এই ‘জাদুমাটি’। চাষিরা বলছেন—”এ তো সোনার চেয়েও দামী!” এখন দেখার, ভবিষ্যতে এই মাটির কল্যাণে জলপাইগুড়ি চা থেকে সবজি উৎপাদনে কতদূর এগিয়ে যায়!