www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 29, 2024 4:03 am
bhai phota

কার্তিকের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে ভাইফোঁটা পালিত হয়. তবে ২০২৩ ভাইফোঁটা ১৪, নাকি ১৫ নভেম্বর, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা। ভাই ও বোনের মধ্যে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়িয়ে নিতে এই বিশেষ আয়োজন পালিত হয়। ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে জমের দুয়ারে কাঁটা ফেলার এই প্রথা শতাব্দী প্রাচীন।

কার্তিকের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে ভাইফোঁটা পালিত হয়. তবে ২০২৩ ভাইফোঁটা ১৪, নাকি ১৫ নভেম্বর, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা। ভাই ও বোনের মধ্যে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়িয়ে নিতে এই বিশেষ আয়োজন পালিত হয়। ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে জমের দুয়ারে কাঁটা ফেলার এই প্রথা শতাব্দী প্রাচীন। দেখে নেওয়া যাক, ভাইফোঁটার সময়কাল কতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে।

ভাইফোঁটা কবে- ১৪ ও ১৫ নভেম্বর দুই দিনই ভাইফোঁটা পালন করা যাবে। পঞ্জিকা অনুযায়ী কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হচ্ছে ভাইফোঁটার তিথি। এই তিথি কখন পড়ছে, ও কখন পর্যন্ত থাকছে দেখা যাক। 

দ্বিতীয়া কখন থেকে- কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি পড়ছে ১৪ নভেম্বর দুপুর ২ টো ৩৬ মিনিটে। শেষ হবে ১৫ নভেম্বর ১ টা ৪৭ মিনিটে। এরই মাঝে রয়েছে ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার শুভ মুহূর্ত। দেখে নেওয়া যাক, সেই শুভ মুহূর্ত। 

২০২৩ সালে, ভাইফোঁটা উৎসব ১৪ এবং ১৫ নভেম্বর অর্থাৎ মঙ্গলবার এবং বুধবার ধরে পালিত হবে। ২০২৩ সালে, ভাইফোঁটা অর্থাৎ দ্বিতীয়া তিথি ১৪ নভেম্বর দুপুর ২টা বেজে ৩৬ মিনিট থেকে শুরু হবে এবং ১৫ নভেম্বর দুপুর ১টা বেজে ৪৭ মিনিট পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ ২ দিন ধরে ভাইফোঁটা উৎসব পালনের তিথি রয়েছে।

অর্থাৎ এই বছরের ১৪ ও ১৫ নভেম্বর ২ দিনই ভাইফোঁটা দেওয়া যাবে। যদি ১৪ নভেম্বর ফোঁটা দিতে না পারেন, তাহলে পরেরদিন অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর দুপুর ১টা বেজে ৪৭ মিনিট পর্যন্ত ফোঁটা দেওয়া যাবে। অথবা ১৫ নভেম্বর সময় না থাকলে আগেরদিন ফোঁটা দিয়ে দেওয়া যায়। 

পশ্চিমবঙ্গের (west Bengal) বাইরে এটি ভাই দুজ বা ভাই বীজ নামে পরিচিত। নামে পার্থক্য থাকলেও উদ্দেশ্য একটিই, ভাইয়ে দীর্ঘায়ু ও উন্নতি কামনা করা। তবে কবে, কী ভাবে প্রথম ভাই ফোঁটার (Bhai Phota) রীতি প্রচলিত হল, সে বিষয়ে একাধিক পৌরাণিক উপাখ্যান (Spiritual) রয়েছে।

একটি প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, সূর্য (Sun) ও সংজ্ঞার সন্তান যম ও যমী বা যমুনা। যমুনা (Jamuna) নিজের ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন, তার পর থেকে এই উৎসব পালিত হতে শুরু করে। কথিত আছে, যমুনা নিজের ভাই যমকে একাধিক বার নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে ধর্মরাজ (Dharmaraj) যম নিজের বোনের আমন্ত্রণ রক্ষার্থে যেতে পারতেন না। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে বাড়ির দ্বারে নিজের ভাই যমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান যমী। প্রসন্নতা ও স্নেহের সঙ্গে সেই তিথিতে নিজের ভাইকে ফোঁটা দেন ও ভোজন করান যমুনা। এর পর যম যমীকে বর চাইতে বলেন। তখন, যমী ভাইয়ের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা নেন যে, প্রতি বছর তিনি কার্তিক শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়ায় যমীর বাড়িতে ভোজন গ্রহণ করতে আসবেন। পাশাপাশি এ-ও বর চান যে, এই তিথিতে যে বোন নিজের ভাইকে ফোঁটা দিয়ে ভোজন করাবে, তাঁর কখনও যমের ভয় থাকবে না। তার পর থেকেই ভাই ফোঁটার রীতি পালিত হয়ে আসছে। 

আবার যমুনার জলে স্নান করলে নরক যাতনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলেও, মত প্রচলিত আছে। এমনও বর চেয়েছিলেন যমুনা। যম বোনের এই ইচ্ছাও পুরো করেন। কিন্তু পাশাপাশি সতর্ক করেন, যে ভাই নিজের বোনের তিরস্কার করবে ও অপমানিত করবে, তাঁকে যমপাশে বেঁধে যমপুরী নিয়ে যাবেন তিনি। তা সত্ত্বেও, ভাই যদি যমুনার জলে স্নান করে সূর্যকে অর্ঘ্য দেন, তা হলে স্বর্গলোকে তাঁর স্থান সুনিশ্চিত হবে। এদিন ভাই-বোনের যমুনায় স্নান করা শুভ মনে করা হয়। মৎস্য পুরাণ অনুযায়ী, মৃত্যুর দেবতা যমকে সন্তুষ্ট করার জন্য ভাতৃদ্বিতীয়ার দিনে ষোড়শোপচার বিধিতে পুজো করা উচিত।

আবার অন্য এক প্রচলিত পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নরকাসুর দৈত্য বধের পর কৃষ্ণ (Sri Krishna) গৃহে ফিরলে, বোন সুভদ্রা প্রদীপ জ্বেলে, ফুল, ফল, মিষ্টি দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এর পর কৃষ্ণের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন সুভদ্রা। পাশাপাশি কৃষ্ণের আরও সহস্র বছর বেঁচে থাকার কামনা করেন। মনে করা হয়, তখন থেকেই ভাই ফোঁটার সূচনা।

শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়াতে (Bhatri Dwitiya) ভাইকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানায় বোন। নকশিকাঁথার কাজ করা সূতির আসনে ভাইকে বসিয়ে শুরু হয় ফোঁটা দেওযার অনুষ্ঠান। কাঁসা বা পিতলের থালায় ধান-দূর্বা, ঘরে আমপাতায় পারা কাজল, চন্দন সাজিয়ে রাখা হয় ভাইয়ের সামনে। সঙ্গে থাকে ঘিয়ের প্রদীপ ও শঙ্খ। আর মুখ মিষ্টি করানোর জন্য থাকে ভাইয়ের পছন্দের সমস্ত মিষ্টিও। এর পর বোনেরা বাঁ হাতের কড়ে আঙুলে কাজল নিয়ে এঁকে দেয় ভাইয়ের ভ্রু-যুগল। এর পর ভাইয়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা দেওয়ার সময় ছড়া কাটে বোনেরা—

‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যম দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।’

চন্দনের ফোঁটা দেওয়ার পর শঙ্খ ধ্বনির মাঝে ধান-দূর্বা দিয়ে ভাইকে আশীর্বাদ করে বোন। তার পর মিষ্টিমুখ করার পালা। এ ভাবেই বাংলার ঘরে ঘরে পালিত হয়ে আসছে ভাই-বোনের অটুট বন্ধনের উৎসব ভাই ফোঁটা। 

collected

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *