খবরে আমরাঃ নিজেদের ঘর ছেড়ে হোটেল যেতে নারাজ বউবাজারের বাসিন্দারা। তারা মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত ব্যবস্থার অপেক্ষায়। যদিও বউবাজারে নতুন করে ফাটল আতঙ্ক। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলাকালীন দুর্গাপিতুরি লেনের পরপর প্রায় ১০-১২টি বাড়িতে ফাটল। বুধবার রাতের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ছড়াল আতঙ্ক। ফিরে এল তিন বছর আগের স্মৃতি। জরুরি জিনিসপত্র ব্যাগে ভরে তড়িঘড়ি বাড়ি ছাড়লেন অনেকেই। সারারাত কেউ বসে রইলেন ফুটপাতে। ঘরের জিনিস ঘরে রেখেই প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি খালি করে খোলা আকাশের নিচে যেতে বাধ্য হলেন।
ঠিক যেমন ছেড়েছিলেন ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট। বউবাজার এলাকায় টানেল বোরিং মেশিনের কাজ চলার সময় হঠাৎই মাটি বসে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল একের পর এক বাড়ি। ঘরছাড়া হয়েছিলেন বহু বাসিন্দা। তারপর অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে বউবাজারে সুড়ঙ্গ খননের কাজ চলেছে। এবং সেই কাজ প্রায় শেষের দিকে। ঠিক সেই সময়ই নতুন করে বউবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনে একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিল এদিন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রায় ১০টি বাড়িতে কোথাও ছাদে, আবার কোথাও মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন মেট্রো রেলের কর্তারাও। রাতেই প্রকল্প নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএলের (KMRCL) প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে যান। যান ইঞ্জিনিয়াররাও। কী কারণে এই ফাটল, খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। যদিও আগেই সুড়ঙ্গ খননকারী দুই টিবিএম ঊর্বি এবং চণ্ডী দুটোই খণ্ড খণ্ড করে কেটে তোলা হয়েছে। এখন মেট্রো টানেলজুড়ে কংক্রিটের কাজ চলছে। তবে কী কারণে ওই মাটির উপর চাপ পড়ল তা দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে অভিযোগ করেন, রাস্তাতেও ফাটল দেখা দিয়েছে। কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই মেট্রো রেল কাজ করছে, তার ফলেই এদিন ফাটল। মেট্রোর এই কাজ নিয়ে আগেও একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল, সেগুলি নতুন করে গড়ে দিচ্ছে মেট্রো। সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি। রাতে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন স্থানীয় বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরাই উদ্যোগ নিয়ে মহিলাদের হোটেলে পাঠাচ্ছি। মেট্রো কর্তৃপক্ষ কিছুই করছে না।’’ অন্তত ২৮টি পরিবার ঘরছাড়া বলে দাবি।